এই যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক

নীল সমুদ্রের বুকে মাথা উঁচু করে আছে বেশ কিছু সবুজ দ্বীপ। প্লেনের জানালা দিয়ে শুধু আকাশ আর মেঘ দেখতে দেখতে যখন একঘেঁয়ে লাগছিলো, তখনই দৃষ্টিসীমা ফুঁড়ে হঠাৎ উদয় হলো সমুদ্রের বুকে ছোট ছোট সবুজাভ নীল কয়েকটা বিন্দু। বেশ লাগছিলো দেখতে। সমুদ্র প্রায় ছুঁয়েই ল্যান্ড করলো প্লেন। এয়ারপোর্টে নেমেই প্রথম চোখে পড়লো দুদিকে সবুজ পাহাড়। ছোট্ট একটা এয়ারপোর্ট। বের হয়েই গরমের প্রথম ধাক্কাটা টের পেলাম। গাঁ জ্বালা করা প্রচন্ড গরম। প্রত্যেকবার কেমন করে জানি গরমের দেশেই আসা হয় আমাদের। এবার এসেছি সেইন্ট থমাস… ইউ এস ভার্জিন আইল্যান্ডসের অন্যতম প্রবেশদ্বার। ক্যারিবীয়ান সাগরগামী ক্রুইজগুলোর অন্যতম গন্তব্য। ইনফ্যাক্ট ক্যারিবীয়ানের ব্যস্ততম ক্রুইজ পোর্ট। পুয়ের্টোরিকোর ঠিক পাশেই।

নিরক্ষীয় অঞ্চলের অপূর্ব সুন্দর সব দ্বীপগুলোর অন্যতম ভার্জিন আইল্যান্ডস। ভার্জিন আইল্যান্ডস কোন একক দ্বীপ না, গ্ৰুপ অব আইল্যান্ডস। ক্যারিবীয়ান সাগরের মধ্যবর্তী তিনটি প্রধান দ্বীপ ও ছোট ছোট আরো কিছু দ্বীপ নিয়ে ইউ এস ভার্জিন আইল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্রের দূর সমুদ্র মধ্যবর্তী শাসন অঞ্চল।

এই তিনটি দ্বীপেরই একটি হলো, সেইন্ট থমাস। বাকি দু’টি সেইন্ট জন ও সেইন্ট ক্রোয়িক্স। আমাদের বাৎসরিক অবকাশের জন্য এবার বেছে নিয়েছি এই ভার্জিন আইল্যান্ডস। এখানে আমাদের ইমিগ্রেশন হবেনা। টেকনিক্যালি আমেরিকার ভিতরেই আমরা আছি। তবে এখান থেকে ফেরত যাবার সময় ইমিগ্রেশন হবে। কারণ সেন্ট থমাস এর পোর্ট হলো ফ্রি পোর্ট। আশেপাশের ক্যারিবীয়ান দ্বীপগুলো থেকে সহজেই এখানে আসা যায়। যাই হোক, আমরা এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে শাটলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। আমীরার গাল এর মাঝেই লাল হয়ে গিয়েছে। হিট র‍্যাশ। বুঝলাম, মেয়েটা আগামী কয়টা দিন একটু কষ্ট পোহাবে। আমীরা হল আমার দেড় বছর বয়সী অসম্ভব রকমের চঞ্চল আর দুরন্ত কন্যা।

শাটল এলে কার রেন্টালে গিয়ে আমরা আমাদের গাড়ি বুঝে নিলাম। লাল রঙের ছোট্ট একটা সেডান। প্রত্যাশার চেয়ে বেশ ছোট গাড়িটা। তবু সাতপাঁচ ভেবে আপগ্রেড না করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখলাম আমরা। গাড়ি নিয়ে বের হয়ে রওনা হলাম আমাদের আগামী কয়েকদিনের নিবাসের উদ্দেশ্যে। আগে থেকেই জানতাম, এখানে গাড়ির ড্রাইভিং সিট বামদিকে হলেও ড্রাইভ করতে হয় রাস্তার বামদিক দিয়ে। সাধারণত যে কোন দেশে ড্রাইভিং সিট যে পাশে থাকে, ড্রাইভ করতে হয় রাস্তার অপর পাশ দিয়ে। যাই হোক, এটা নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলাম, পাভেলো পারবে কিনা। আল্লাহর রহমতে ও ভালোভাবেই উৎরে গেলো। নাহ, ড্রাইভার হিসেবে আমার জন খুব একটা মন্দ না। মোটামুটি পক্ক ও অভিজ্ঞ। কোথাও গেলে বেচারা সবসময় ড্রাইভ করে, আর আমাকে আশেপাশের সৌন্দর্য পুরোমাত্রায় উপভোগের সুযোগ করে দেয়। আমি আবার সিরিয়াস ড্রাইভার। ড্রাইভ করতে বসলে কিছুই দেখতে পারিনা। ডানে বামে ঘাড় ফিরাতেও কষ্ট হয়ে যায়।

ছোট্ট ডাউনটাউনের মাঝ দিয়ে মেরিনার পাশ ঘেঁষে চলে গেছে ওয়াটারপার্ক ফ্রি ওয়ে। যেদিকেই তাকাই চোখে পড়ছে ছোট বড়ো পাহাড়। দেখতে দেখতে হঠাৎ আমরাও পাহাড়ের উপর উঠতে শুরু করলাম। বুঝলাম এই পুরো দ্বীপটাই আসলে পাহাড়ি। এর সব স্থাপনাও পাহাড়ের কোলে কোলে। যেখানেই যাই না কেন, এক দুইটা পাহাড় ডিঙিয়েই যেতে হবে। তেমনি এক পাহাড়ের উপরই আমাদের রিসোর্ট। রিসোর্টে আমাদের ভিলাতে ঢোকার মুখেই একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ লালে লালে রক্তিম হয়ে চেয়ে আছে আমাদের দিকে, ছেয়ে আছে ফুলে ফুলে। অপূর্ব লাগছিলো দেখতে। এক ফ্লোর নিচে মেরিনা ভিউ ছোট্ট একটা স্যুট আমাদের। বেলকনি থেকে পাওয়া যাচ্ছে অপূর্ব মেরিনা ভিউ। রোদে গরমে এর মাঝেই অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই না খেয়েই শুয়ে পড়লাম। উঠতে উঠতে প্রায় বিকেল। এরপর ফ্রেশ হয়ে বের হলাম ডাউন টাউন ভ্রমণে। আজকের পরিকল্পনা হলো এখানকার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো দেখা। কয়েকশো বছর দীর্ঘ ডেনিশ ঔপনিবেশিক ইতিহাস রয়েছে এই দ্বীপের। ইউ এস ভার্জিন আইল্যান্ডসের দ্বীপগুলো ১৯১৭ সালে আমেরিকা ডেনমার্কের কাছ থেকে কিনে নেয়। এই বছর এই তিনটি দ্বীপের আমেরিকা অন্তর্ভুক্তির শত বছর পূর্তি হলো। পাহাড় থেকে নেমেই প্রথমে পেট পূজার ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়লো। স্থানীয় একটা চাইনিজ ক্যারিবিয়ান ফিউশন রেস্টুরেন্টে গেলাম। কোথাও গেলে হারাম হালালের চক্করে আমাদের খাওয়াটা কখনোই খুব বেশি উপভোগ্য হয়না। সবসময় ভেগান কিংবা সি ফুড নিতে হয়। সি ফুডই অর্ডার করলাম। খেয়ে বের হয়ে দেখি প্রায় অন্ধকার। তখন বাজে সাতটা। পরে চেক করে বুঝলাম, এখানে সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি হয়। অথচ আটলান্টায় তখন সূর্যাস্ত হয় রাত নয়টায়। এই ব্যাপারটা খেয়াল করিনি আগে। ধরেই নিয়েছিলাম লোকাল টাইম যেহেতু এক, সূর্যাস্তের সময়ও কাছাকাছিই হবে। আমাদের আর ইতিহাস খোঁজ করতে যাওয়া হলোনা সেদিন। মেয়ের খাবার দাবার সহ কিছু প্রয়োজনীয় শপিং সেরে নিলাম। রিসোর্টে ফিরে আসার পথে পাহাড়ের উপর একটা লুক আউট পয়েন্ট ড্রেকস সিটে গেলাম। ততক্ষণে গাঢ় অন্ধকার ওখানে। সূর্যাস্তের পর পাহাড়ে খুব তাড়াতাড়ি অন্ধকার নেমে আসে। ওখান থেকে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের আলোকিত রাতের রূপ দেখা যায় দূর থেকে। মনে হয় যেন, দূর পাহাড়ের বুকে ধিকি ধিকি জ্বলছে অসংখ্য প্রদীপ। সিম্পলি অসাধারণ!

ভার্জিন আইল্যান্ডসের এই দ্বীপগুলো আসলে না আমেরিকা, না ইউ কে। কিন্তু তাদের দ্বারা শাসিত। এগুলোকে ইন্সুলার এরিয়া বলে। এরকম আরো অনেক দ্বীপ বা দ্বীপপুঞ্জ আছে আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকায় যেগুলো ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইউকে সহ আরো অনেক দেশ দ্বারা দূর দূরান্ত থেকে শাসিত। মূলতঃ এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার তথা আধিপত্য ধরে রাখার জন্যই পশ্চিমা ক্ষমতাশালী দেশগুলো এই দ্বীপগুলোর শাসনের অধিকার ধরে রেখেছে। এই দ্বীপগুলোর অধিবাসীরা নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট পেলেও ভোটাধিকার পায়না। এদেরকে সিটিজেন না বলে ন্যাশনাল বলে। শর্তসাপেক্ষে এরাও পূর্ণ নাগরিকত্ব পেতে পারে। তবে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের মেইনল্যান্ডের অধিবাসী হতে হবে। মানে মাইগ্রেট করতে হবে। সত্যি বলতে কি ব্যাপারটা আমার নিজের কাছেও পরিস্কার না।

পরদিন সকাল ৭টায় ঘুম ভাঙলো আমার। অনেক স্নিগ্ধ একটা সকাল। সকালের মেরিনা ভিউ অনেক বেশি অপূর্ব, আরো অনেক রিফ্রেশিং। বেলকনির চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে অনেক আয়েশ করে সকালের কফি খেলাম। এরপর টুকটাক ব্রেকফাস্ট রেডি করলাম। কিচেন থাকার এই এক সুবিধা। বাইরের খাবার মুখে না রুচলে অন্তত কিছু একটা করে খাওয়া যায়। ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে বের হয়ে পড়লাম আগের দিনের অসম্পূর্ণ ঐতিহাসিক ভ্রমণ সম্পূর্ণ করতে। খুব বেশি চমকপ্রদ কোন স্থাপত্য নয়। তবে অনেক পুরোনো কিছু স্থাপনা। হয়তো ঐ যুগে এরকম সমুদ্র মধ্যবর্তী কোন দ্বীপে এই অনেক বেশি ছিল। তবে বেশি ভাগই পাহাড়ের উপর। একটা লাল দূর্গ আছে। আর ৯৯টা সিঁড়ি পার হয়ে একটা স্থাপনা আছে ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যাসল। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম, সেদিন বন্ধ ছিল ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যাসল। মিঃ ব্ল্যাকবিয়ার্ড ছিলেন একজন নামকরা স্প্যানিশ জলদস্যু। বিখ্যাত না কুখ্যাত সেটা বুঝতে পারলাম না। তিনি এটা তৈরী করেন নি। তার স্মরণে ডেনিশ উপনিবেশ যুগে নির্মিত হয় এটা। ডেনিশ উপনিবেশ পূর্ববর্তী যুগে এই দ্বীপগুলো ছিল স্প্যানিশ জলদস্যুদের রমরমা আখড়া। কল্পকাহিনীর জলদস্যু না, একবারে সত্যিকারের দুধর্ষ জলদস্যু! অবশ্য অনেক কল্পকাহিনীও প্রচলিত আছে এদের নিয়ে। ব্লু বিয়ার্ডের কাহিনী তার মাঝে অন্যতম। সে কাহিনী আপাতত এখানে আর পাড়লাম না।

ইতিহাস খুঁজতে খুঁজতে দুপুর হয়ে গেলো। সেইন্ট থমাসের সব বড় বড় অফিসিয়াল ও প্রশাসনিক লোকজনের বাস এখানেই। বেশির ভাগ ঐতিহাসিক ভবনগুলোকে সংরক্ষণ করে তাদের বাসস্থান বানানো হয়েছে। যেহেতু স্থাপনাগুলো সব পাহাড়ের গাঁয়ে, তাই সেখান থেকে অপূর্ব সব মেরিনাভিউ পাওয়া যায়। অনেকক্ষণ সময় নিয়ে শহর আর পাহাড়ে হেঁটে হেঁটে, বাচ্চার স্ট্রলার ঠেলে ঠেলে সব ঘুরে ফিরে দেখলাম। এরপর খাঁড়ির পাশ ঘেঁষে চলে যাওয়া একটা পায়ে হাঁটা পাকা রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটলাম। খাঁড়ির পাশ ঘেঁষেই খোলা মতন একটা জায়গায় এসে খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। এরপর রিসোর্টে ফিরে বিশ্রাম করে আবার বের হলাম। পাহাড়ের উপর বারবার উঠতে নামতে গিয়ে খেয়াল করলাম এই দ্বীপে কৃষ্ণচূড়ার আধিক্য। যেদিকেই যাও, পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে যেখানে সেখানে এই কৃষ্ণচূড়া। আমি তো ঘোষণাই করে দিলাম, সেন্ট থমাসের জাতীয় ফুল কৃষ্ণচূড়া! দ্বিতীয় হল বাগানবিলাস। এরপর নাম না জানা আরো অসংখ্য ফুল। অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠা। প্রথম গেলাম একটা ছোট্ট পাহাড়ি বোটানিক্যাল গার্ডেনে। খুব বেশি মুগ্ধকর কিছু নয়। তবে পাহাড়ি বন জঙ্গলে একা কিছুটা সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত স্থান। গার্ডেনে একটা ইকো সিস্টেম মেনটেইন করা হয়েছে। তাই ওখানে প্রচুর গিরগিটি ও ব্যাঙ আছে। এদের কারণে এখানে কোন মশা নেই। আসলেই তাই। আটলান্টায় আমাদের বাগানেও কয়েকটা ব্যাঙ আর গিরগিটি পোষার চিন্তা এলো তৎক্ষণাৎ। মশার যন্ত্রণায় আমাদের বাগানে নামা কষ্ট হয়ে যায় মাঝেমাঝে।

এরপর গেলাম মাউন্টেন টপে। মাউন্টেন টপ এখানকার টপরেটেড ট্যুরিস্ট স্পট। সেন্ট থমাসের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় এই মাউন্টেন টপ। আর এখান থেকে দেখা দৃশ্য নাকি ক্যারিবীয়ান অঞ্চলের অন্যতম সুন্দর দৃশ্য! আসলেই তাই। প্রথম যখন দেখলাম, মনে হলো এই দৃশ্য কি সত্যি নাকি সিনেমাতে দেখছি! প্রায় ১৫০০ ফুট উপর থেকে দেখা যায় ইউ আকৃতির অপূর্ব নীল এক সমুদ্র সৈকত। দূরে হালকা নীল আকাশ আর ধূসর মেঘের আড়াল থেকে উঁকি দিচ্ছে নীলচে সবুজাভ কিছু দ্বীপ। সবমিলিয়ে কি এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য! আমি শব্দের কারিগর নই। তাই ভাষায় সেই সৌন্দর্যের কিছুই প্রকাশ করতে পারছিনা। উত্তর দিকের সব পাহাড়ের চূড়া থেকে এই সৈকতের খুব অসাধারণ কিছু ভিউ পাওয়া যায়। শুধু তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা হয়। দূরের দ্বীপগুলো ছিল ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস ও অন্যান্য ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস।

বানানা ডাইকুরি নামের একটা বার কাম স্যুভেনির শপ এই স্পটের হোস্ট। বানানা ডাইকুরি হলো কলা মিশ্রিত এক প্রকার রাম যা এখানকার খুব জনপ্রিয় আইটেম। স্যুভেনির শপটা বেশ বড়। টুকটাক কেনাকাটা করে একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম। এরপরের গন্তব্য ছিল উপর থেকে দেখা সেই অপূর্ব নীল সৈকত মেগান্স বে!

মেগান্স বে, ক্যারিবীয়ান অঞ্চলের টপ রেটেড ও জনপ্রিয় সৈকতগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেইন্ট থমাসের উত্তর উপকূলে দুইটা পাহাড়ের মাঝে এক মাইল দীর্ঘ ছোট্ট একটা সৈকত। ক্রুইজ শিপ যেদিন আসে, সেদিন লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় এই সৈকত। ভাগ্যিস আমরা যেদিন গিয়েছিলাম, সেদিন কোন ক্রুইজ শিপ আসেনি। তাই খুব আয়েশ করে উপভোগ করতে পেরেছি এর নির্মল সৌন্দর্য। কোন উত্তাল ঢেউ নেই। কোন ভীড় নেই। শান্ত ঢেউ আর অগভীর পরিষ্কার নীল জল। পা ভিজিয়ে হেঁটেছি বেশ কিছুক্ষণ। বালুকাবেলায় বসে নিরিবিলি কাটিয়েছি আরো কিছুটা সময়।

এর মধ্যেই আমার ছোট্ট মেয়েটা একটু অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রচন্ড গরমে। এতো ভালোলাগার মধ্যে সমস্যা শুধু এটাই। তা হলো এই গরম। তাই সেদিনের পাততাড়ি গুটিয়ে আমরা রিসোর্টে ফিরে গেলাম। এমনিতেই আজ তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে। পরের দিন পার্শ্ববর্তী দ্বীপ সেইন্ট জনে যাবো আমরা ডে ট্রিপে। সকাল সকাল এই দ্বীপের অপর প্রান্তে গিয়ে ধরতে হবে ফেরি।

চলবে…

বিঃদ্রঃ ভ্রমণ সংক্রান্ত খরচাপাতি আমি সেভাবে হিসাব করিনা। আর বাজেট ট্রিপ না বলে তেমন স্বস্তিও বোধ করিনা পাইপাই হিসাব দিতে। নিছক আমার দেখা ও অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্যই এই লেখা। তাও প্রায় দুই বছর আগে লিখেছিলাম। এখানে যা কিছু লেখা, সব দুই বছর আগের ঘটনা।

চাহিদা ও বাজেট মতো ফ্লাইট, হোটেল, রিজোর্ট সব আজকাল অনলাইনেই বুক করা সম্ভব। কারো তবু কিছু জানার থাকলে আমাকে ইনবক্স করতে পারেন। শুধু এটুকু বলবো, ভার্জিন আইল্যান্ডস ভ্রমণের জন্য বেশ ব্যয়বহুল একটা গন্তব্য। আমার ভ্রমণ রুট ছিল Atlanta, USA থেকে Saint Thomas, USVI (United States Virgin Islands)। আশেপাশের ক্যারিবীয়ান দ্বীপগুলো থেকেও সহজে আসা যায় এখানে। আরো রুট থাকতে পারে আপনার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। তবে US ভিসা লাগবে।

শুধু ঘুরতে গিয়েই নয়, আশা করি যে যেখানে আছেন, তার আশেপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করবেন। অন্তত নিজে কোনোভাবেই নোংরা করবেননা। হোক তা জল কিংবা স্থল।

Source:  Sofia Nishi‎ <Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment