চন্দ্রনাথ মন্দির + সীতাকুন্ড ইকোপার্ক+ গুলিয়াখালি

বঙ্গ বাসীদের কেবল মাঠ দেখে অভ্যাস, তাই মৃত্তিকার সামান্য স্তুপ দেখিলেই তাহাদের আনন্দ হয়। সঞ্জীবচন্দ্র কথাটা ভুল বলেন নি। সমতলের বাসিন্দা বলে বরাবরই পাহাড়ের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে। সে অনুযায়ী এবারের ট্যুরে পাহাড়ে যাব প্লান করলাম। এবারের ট্যুরে আমাদের গন্তব্য হলো চন্দ্রনাথ পাহাড়, সীতাকুন্ড ইকোপার্ক আর গুলিয়াখালি বিচ।

১৩ জনের টীম নিয়ে ২৬ তারিখ ভোর ৫ টায় লক্ষ্মীপুর থেকে রওনা হলাম । গন্তব্য সীতাকুন্ড। আগেই একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করে ছিলাম, পুরো ট্যুরে আমাদের সাথে থাকবে ভাড়া ৬৫০০ টাকা। সীতাকুন্ড পৌঁছাতে পৌঁছাতে ৮ টা বেজে গেল। বাজারে নেমে নাস্তা সেরে রওনা হলাম চন্দ্রনাথের উদ্দেশ্যে। যেতে মেবি ১৫ মিনিট লাগবে। যাওয়ার পথে একটা রেল ক্রসিং পড়বে। জায়গাটা সুন্দর, সময় থাকলে নেমে কয়েকটা ছবি তুলে নিতে পারেন ভাল ছবি আসবে।

পাহাড়ের নিচে এসে পানি, স্যালাইন আর লাঠি কিনে উঠার প্রস্তুতি নিলাম। ভুলেও লাঠি ছাড়া উঠবেন না। আর দলের মধ্যে কেউ যদি নিজেকে পলোয়ান ভেবে লাঠি ছাড়া উঠতে চায় তাকে জোর করে হলেও লাঠি নেওয়াবেন। কারণ নাহলে পরে নিজেই কষ্ট পাবেন। আমাদের এরকম হয়েছিল, কয়েকজন লাঠি নেই নাই পরে তাদের সাথে লাঠি শেয়ার করতে গিয়ে নিজেরাই কষ্ট পাইছি। প্রতিটি লাঠি ২০ টাকা করে নিবে আর আপনি নিচে নেমে লাঠি ফিরিয়ে দিলে আবার ১০ টাকা ফেরত দেবে। আর সাথে করে পর্যাপ্ত পরিমান পানি নিয়ে উঠবেন। আমরা এই ভুলটা করেছিলাম।

১৩ জনের জন্য পানি নিয়েছিলাম মাত্র ৪ লিটার। ভাবছিলাম একটা ক্রিকেট ম্যাচের মতো, ম্যাচ খেলতে এর বেশি পানি আমাদের লাগে না। যা নিয়েছিলাম অর্ধেক পথ উঠতেই তা শেষ। যদি পারেন তবে সীতাকুন্ড বাজার থেকেই পানি নিয়ে আসবেন। পাহাড়ের কাছে সবকিছুর এ দাম বেশি। পাহাড়ের নিচে যদিওবা ৫-১০ টাকা করে বেশি নিবে আর ৫ মিনিট হেটে পাহাড়ে উঠলে সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মন্দিরে উঠার দুইটা রাস্তা পাবেন। একটা মাটির রাস্তা অন্যটা সিঁড়ি। মাটির পথটা উঠার জন্যে আর সিঁড়ির পথ নামার জন্যে। ভুলেও সিঁড়ির পথ দিয়ে উঠতে যাবেন না গেলে পস্তাবেন।উঠা টা এমনিতেই কষ্টকর আর যদি সিঁড়ির পথে উঠতে যান তবে দ্বিগুন কষ্ট পাবেন।

নিজের ব্যবহৃত পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট কোন কিছুই ফেলে আসবেন না। সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। পানির বোতল নিয়ে আসার একটা উপকারিতাও রয়েছে। নিচে নামার সময় একটা মন্দিরে পানির কল আছে, সেখানে পানি খেয়ে সঙ্গে করে পানি নিয়েও আসতে পারবেন। এক কাজে দুই কাজ হলো পরিবেশ ও নষ্ট হলো না আর আপনিও পানির কষ্ট থেকে মুক্তি পেলেন।এমনিতেই লক্ষ্য রাখবেন আপনার দ্বারা পরিবেশের যেন কোন ক্ষতি না হয়।

Source: Asiful Habib‎ <Travellers Of Bangladesh

Share:

Leave a Comment

Shares