চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ

যদি কেউ জিজ্ঞেস করে বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের মানুষগুলো খুব আপন করে নিয়েছিলো তবে নিঃসন্দেহে চলে আসবে শ্রীমঙ্গলের নাম…এখানের মানুষগুলো প্রচন্ড ভালোবাসতে পারে…প্রতিবার এদের কাছে ছুটে যেতে বাধ্য করে…

আপনি যদি পাহাড়প্রেমী হন…তবে শ্রীমঙ্গল কিছুটা হলেও সেই তৃষ্ণা মেটাবে…ছোটো-ছোটো পাহাড় আর উঁচুনিচু টিলায় সাজানো গোছানো চা বাগান আপনাকে এনে দেবে এক বিচিত্র প্রশান্তি..আর চা বাগানের বৃষ্টি যদি দেখার সৌভাগ্য হয় ব্যাস! তবে তো হয়েই গেলো…পুরোটাই পাওয়া…

প্রায় শ খানেক বিশাল চা বাগান নিয়ে শ্রীমঙ্গলের বেশিরভাগ জায়গা বিস্তৃত… দুপাশে চা বাগান আর মধ্যে দিয়ে সরু রাস্তা এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে.. চোখ যেনো প্রচন্ড চঞ্চল হয়ে যায় চারপাশে প্রকৃতির এতো রূপ দেখে…সবুজে ঘেরা চা বাগান গুলো স্বস্তি এনে দেয়…

শ্রীমঙ্গলে যেখানেই যান চা বাগানের দেখা মিলবেই…

এক বা দুদিনে ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন শ্রীমঙ্গলের কিছু অসাধারণ স্পটে..

মাধবপুর লেক – অস্বাভাবিক সুন্দর এই লেকের বৈশিষ্ট্য হলো এর চারপাশে রয়েছে উচু টিলা ও ছোটো পাহাড় যার পুরো অংশ জুড়েই চাষ হয় চায়ের…লেকের স্বচ্ছ পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে রয়েছে ছোট্ট একটি ঘাট…আর ফুটে থাকা অসংখ্য শাপলা এই লেকের সৌন্দর্য শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে…তবে দুপুরের রোদে না গিয়ে সকাল কিংবা বিকেলে যাওয়ার পরামর্শ রইলো…

নীলকন্ঠ কেবিন – ভানুগাছ থেকে কয়েক কিলোমিটার কাছেই রামনগরে রমেশের নীলকন্ঠ কেবিনের অবস্থান…সন্ধায় এই স্পেশাল সাতরঙা চায়ের সাথে আড্ডায় হারিয়ে যাওয়া যায় নির্দ্বিধায়…আর সামনে চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য তো আছেই…

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান – সবুজে ঘেরা এই গাছের রাজ্যে প্রবেশ করলেই প্রচন্ড গরমেও শীতল হয়ে আসবে আপনার মন ও প্রাণ…পাখির কিচিরমিচির ডাক আর একগাদা ভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাবেন মুহুর্তেই…এই উদ্যানে গেলেই বিভিন্ন বন্যপ্রাণী চোখে পরবে…বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক যার মধ্যে বিশেষ… রেইন ফরেস্ট এই উদ্যানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে এর সৌন্দর্য শতগুণে বাড়িয়ে দেয়…যদিও ইদানিং এর সৌন্দর্য অনেকাংশেই কমে এসেছে বলে অনেকের ধারণা…তবে শ্রীমঙ্গল গেলে কেউ লাউয়াছড়া মিস করতে চায় না সহজে…

এছাড়াও মনিপুরী পল্লী, খাসিয়া পল্লী, টি মিউজিয়াম, সিতেশ দেবের মিনি চিড়িয়াখানা সহ আরো অনেক জায়গা আছে…

যেভাবে যাবেন – কমলাপুর থেকে বিকেল ৪.০০ টা কালনী এক্সপ্রেস বা সকাল ৬.৪০ এ পারাবত এক্সপ্রেসে সিলেট গামী ট্রেনে করে চলে যেতে পারেন শ্রীমঙ্গল..এছাড়াও সায়েদাবাদ, আরামবাগ থেকে শ্যামলি, হানিফের বাস সারাদিনই পাওয়া যায়…

যেখানে থাকবেন – শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য রয়েছে অসংখ্য রিসোর্ট…এছাড়াও কম বাজেটে যারা থাকরে চান তাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু স্টুডেন্ট ডরমিটরি…

যেখানে খাবেন – শ্রীমঙ্গল শহরে অনেক বেশি রেস্টুরেন্ট না থাকলেও কিছু হোটেল বেশ ভালো অবস্থানে আছে…যেমন পানসী রেস্টুরেন্টের প্রতিটি খাবারই ভালো লেগেছে….স্পেশালি ওদের ভর্তা আইটেম গুলো টেস্ট করতে ভুলবেন না…এছাড়াও যেতে পারেন কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টে…

নোংরা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না প্লিজ.

Source: Mehjabin Antu<Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment