টাঙ্গুয়ার হাওর, শিমুল বাগান, শহিদ সিরাজী লেক, বারিক্কা টিলা, যাদুকাটা নদী, লাকমা ছড়া, রাজাই ঝর্না ভ্রমণ প্যাকেজ বিতান্ত

টাঙ্গুয়ার হাওর-
বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওর। এ হাওর বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি ।স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। হাওরের সৌন্দর্য উপভোগের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল, হাওরের রাতের আকাশে পূর্ণিমার আলো আর তারার মেলায় আপনি হারিয়ে যাবেন কোনো এক অজানায়, আর এই পূর্ণিমা রাতটি হবে আপনার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর রাতগুলির মধ্যে একটি…..

শহিদ সিরাজী লেক-
সবুজ ঘাসের পাটি বিছানো ছোট ছোট টিলায় বসে উপভোগ করতে পারেন এই লেক। তাছাড়া লেকের ধারে বেঞ্চ বসানো রয়েছে। সেখানে বসে পাহাড়ের সাথে লেকের সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হতে পারেন।

বারিক্কা টিলা-
পাহাড়ের উপর মেঘেদের দল বেধে ছুটে বেড়ানো দেখতে হলে অবশ্যই বারিক্কা টিলায় আপনাকে গমন করতে হবে। তাছাড়া পাহাড়ের গাঁ বেয়ে নেমে আসা ঝর্নাও দেখবেন দূর থেকে। দুঃখজনক হলেও বলছি, ঝর্না এরিয়া ভারতে হওয়াতে আমাদের সেখানে যাওয়া নিষেধ।

যাদুকাটা নদী-
বারিক্কা টিলা থেকেই নদীর সৌন্দয্য উপভোগ করা যায়। এখানেও ট্রলারে করে নদী পার হতে পারবেন ও ঘুরাঘুরি করতে পারবেন।

লাকমাছড়া-
পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা পানিতে জেলেদের মাছ ধরার অভিনব পন্থা দেখতে পাবেন সেখানে।

রাজাই ঝর্ণা
সাময়িক সমস্যার কারনে রাজাই ঝর্নার খুব নিকট থেকে শুধু ঝর্নার কলকল ধ্বনি শুনে চলে আসতে হল আমাদের।ঝর্না দেখার সৌভাগ্য হয়ে উঠনি।

পাহাড়, হাওর, বন, ঝর্ণা, টিলা, বাগান এবং নদী সব যে জায়গায় মিশে একাকার তার নাম সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ হচ্ছে সিলেট বিভাগ এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা।দিন দিন সেখানে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে বাস-এ করে সুনামগঞ্জ ।
সকালে সিনজি রিজার্ভ করে তাহিরপুর, চাইলে লেগুনা বা মোটর সাইকেলে করেও আসা যায়, তাহিরপুর যাওয়ার মাঝপথে শাপলা বিল আছে, চাইলে কিছু ক্লিক করে নিতে পারেন একদম ফ্রিতে, তাহিরপুর এসে ট্রলার ভাড়া করে নিতে হবে (অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন), ছুটির দিনগুলোতে ভাড়া একটু বেশি থাকে, এরপর পুলিশ স্টেশন গিয়ে নাম ঠিকানা এন্ট্রি করে নিবেন আর অবশ্যই ইনচার্জ এর মোবাইল নম্বর নিয়ে আসবেন, বিপদে কাজে লাগতে পারে।

ট্রলারে উঠে এক ঘন্টা হাওর এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাবেন ওয়াচটাওয়ার। ওয়াচটাওয়ার থেকে ছোট ছোট বাচ্চাদের নৌকায় চারপাশ ঘুরে দেখবেন আর অবাক হবেন সাথে গান শুনবেন ফ্রি, সাঁতার জানলে নীলাভ এই পানিতে গোসল করার লোভ সামলাতে পারবেন না, সাঁতার না জানলে ৫০ টাকা ভাড়ায় লাইফ জ্যাকেট নিয়ে পানিতে নেমে পড়ুন ….

সেখান থেকে চলে আসুন ট্যাকেরহাট। সেখানেই ট্রলারে রাত্রি যাপন করবেন আর রাতে হাওরের নযনাভিরাম দৃশ্য দেখবেন। ট্যাকেরঘাট থেকে মোটরসাইকেল অথবা অটোরিক্সা (অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন) করে ঘুরে আসবেন নীলাদ্রি লেক, বারিক্কা টিলা, যাদুকাটা নদী,রাজাই ঝর্ণা, লাকমা ছড়া এবং শিমুল বাগান (বাগানে এখন ফুল নাই)। একেকটা জায়গার সোন্দর্য একেকরকম যা কোনো ভাবেই ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

খরচ: (জনপ্রতি)
ঢাকা-সুনামগঞ্জ -৫৫০/-
সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর সিএনজি – ১০০ ট্রলার ভাড়া -১০,০০০/- (ঈদের সময় বলে একটু বেশি নিছে)
মোটরসাইকেল – ২০০ টাকা
তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ-১০০/-
সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা – ৫৫০/-
[[খাওয়াদাওয়া যার যেমন]]
আমাদের ১০ জনের টীম এ জনপ্রতি খরচ হয়েছে ২৭০০ টাকার মতো ।

বি: দ্র: এ দেশটা আমার আপনার সবার, এই দেশের সৌন্দর্য রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের। দয়া করে পানির বোতল, বিস্কুট, কেক এর প্যাকেট এবং অন্যান্য আবর্জনা দিয়ে হাওরের পানি নষ্ট করবেন না ।

Source:  BM Shakil <Travelers of Bangladesh (ToB)

 

Share:

Leave a Comment