ট্যাকেরঘাট, নীলাদ্রি, সুনামগঞ্জ

নীলাদ্রির সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলা টা হয়তো বোকামি অথবা নিলাদ্রি কে অপমান করা হবে যদি ভাষায় বুঝাতে যাই। তার চেয়ে ভালো নিজে গিয়ে দেখে আসুন। লেখার সময় আমি আসলে কোন ভাষা পাচ্ছিলাম না কিভাবে নীলাদ্রির সৌন্দর্য তুলে ধরবো তাই একটা কথাই বলবো নিজে গিয়ে দেখে আসুন।
কিভাবে যাবেনঃ ঢাকার ফকিরাপুল আর সায়েদাবাদ থেকে রাত ১০-১১ টার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে হানিফ, শ্যামলী, মামুন, এনা ঢাকা ছেড়ে যায়। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৫৫০(শ্যামলী, হানিফ)। ৬.৩০ এর মধ্যে তারা আপনাকে সুনামগঞ্জ নতুন ব্রিজের গোড়ায় নামিয়ে দিবে অথবা আপনি চাইলে সুনামগঞ্জ বাস কাউণ্টরে নেমে ফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন। হানিফ বাস এর কাউণ্টরে মটামোটি ভালো পরিবেশ আছে। নতুন ব্রিজের গোড়া থেকে সিএনজি, লেগুনা, মোটর সাইকেল করে আপনাকে তাহিরপুর বাজারে যেতে হবে, সময় লাগবে ১.৩০ মিনিট। আমরা লেগুনা রিজার্ভ নিয়েছিলাম ভারা পড়েছিল ৮০০। ওরা ১০০০ টাকা চাবে এখন আপনি যেভাবে বারগেইন করে কমাইতে পারবেন সেটাই ভালো। অবশ্যই মনে রাখবেন সুনামগঞ্জ হলো বারগেইনিং এর জায়গা। আপনি যতো কমাবেন ততই আপনার খরচ কমে আসবে। তাহির বাজারে পৌঁছে দুই গ্রুপ হয়ে যাবেন। এক গ্রুপ যাবেন নৌকা ভারা করতে ১ দিনের জন্য ভারা পড়বে ৩০০০-৫০০০ টাকার মধ্যে। আবারো বলছি আপনি জেভাবে বারগেইন করবেন ওইটাই আপনার লাভ। আরেক গ্রুপ যাবেন বাজার করতে। মনে রাখবেন দুপুর আর রাতের খাবার এর জন্য আপনাকে এইখান থেকেই পর্যাপ্ত বাজার করে নিতে হবে কারণ লাঞ্চ আর ডিনার করবেন নৌকাতেই। আপনারা শুধু বাজার করবেন আর বাকি সব মাঝি দের কাছেই আছে। অবশ্যই নৌকাতে উথার আগে চুলা ঠিক আছে কিনা দেখে উঠবেন। আমাদের চুলা ঠিক ছিল না তাই রান্না করতে বিকেল হয়ে গিয়েছিল। মাঝপথে নৌকা থামিয়ে অথবা সাইডে কোথাও থামিয়ে দুপুরের খাবার রান্না করবেন। মনে রাখবেন আপনি যেইটা রান্না করবেন সেটাই আপনি রাতের খাবেন। আমরা এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলা রাতের জন্য আর কিছু অবশিষ্ট ছিল না কেননা আমাদের খেতেখেতেই বিকে হয়ে গিয়েছিলো। বিকালের দিকে ট্যাকেরঘাট, নীলাদ্রি যাবেন। আপনার ১ দিন এখানেই শেষ হয়ে যাবে। রাতের দিকে এদিক ওদিক টইটই করে ঘুরে বেড়াবেন। গ্রামের মানুষের সাথে পরিচিত হবেন। বর্ডারের নিকটে যাবেন আর এইভাবেই সন্ধ্যা টা কেটে যাবে আপনার। আর রাতে নৌকা ট্যাকেরঘাটেই থাকবে। সূর্যোদয় দেখবেন হাওরের মাঝখান থেকে হয়তো এইটাই নয়নভিরাম টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য।
দ্বিতীয় দিন, মোটর সাইকেল ভাড়া করে জাদুকাটা নদী আর বারেক্কাটিকা দেখে আসবেন। এই গ্রামে মোটর সাইকেল একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। ভাড়া টা মনে নেই। ঘুরে এসে দুপুরের মধ্যে তাহিরপুর বাজারে ফিরবেন। আরেকটা কথা হাওরের মাঝখানে লাইফ জ্যাকেট পড়ে গোসল করে নিতে ভুলবেন না। আমরা যাওয়া ও আসা দুইবার-ই পানিতে ঝাপ দিয়েছিলাম। লাইফ জ্যাকেট তাহিরপুর বাজার থেকে ৮০ টা করে ভারা নিতে পারবেন। তাহিরপুর এসে আবার সুনামগঞ্জ টাউনে চলে যাবেন। লাঞ্চ করার আগে একটা হোটেল ভাড়া করবেন কারণ ঢাকয় যাওয়ার জন্য ২.৩০ এ শ্যামলি আছে আর বাকি সব বাস ১১ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ ছেড়ে যায়।
**পানিতে আপনাদের ময়লা-আবর্জনা ফেলবেন না কারণ এই দেশ আপনার মতো আমাদের সবার। ভ্রমন হক ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল।

Post Copied From:Fairose Farabi‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment