বর্ষায় টাঙ্গুয়া ভ্রমণ

ঢাকা থেকে শ্যামলী বাসে করে সুনামগঞ্জে যাওয়ার আগে জানতে পারলাম তাহিরপুরে যাওয়ার কিছু রাস্তা পানিতে ডুবে গিয়েছিলাম। তাই মাঝিকে তলব করে আনা হয়েছিল বিশ্বনাথপুর থানার সামনে। সুনামগঞ্জ থেকে বিশ্বনাথপুর রাস্তা তুলনামুলকভাবে ভালো ছিল। তাই যেতে কোন অসুবিধা হয়নি। সারাদিন থেমে থেমে খুবই অল্প বৃষ্টি হলেও আকাশ ছিল মেঘে ভরা। তবে এত বৃষ্টিতে হাওরের ঘোলা পানি দেখে একটু হতাশ ছিলাম। নৌকার ছাদে বসে গুড়ি বৃষ্টি আর চারদিকে অথৈ পানি দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম তাহিরপুর বাজারে। বাজার শেষে রওনা দিলাম ওয়াচ টাওয়ারের উদ্দেশ্যে ঠান্ডা পানিতে গা ভিজানোর জন্যে। যাওয়ার পর এত নৌকা আর মানুষ দেখে সত্যিই পরিবেশটা কেমন যেন লাগছিল। হাওর আর আগের মত শান্ত নাই অনেক মানুষের কোলাহলে কেমন যেন পিকনিক স্পট মনে হচ্ছিল। যাই হোক, পানিতে ডুবাডুবির পরে পাহাড়ে মেঘের খেলা দেখতে দেখতে চলে গেলাম টেকেরঘাটে। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ!! বিকেল আর সন্ধায় নিলাদ্রি লেকের আশেপাশের স্পটে ঘুরাঘুরি করে রাতে নৌকার উপর গান, আড্ডা। সকালে উঠেই নাস্তা শেষ করে বাইকে উঠে একে একে বারিক্কা টিলা, যাদুকাটা নদী, রাজাছরা ধর্না (নামটা নিয়ে সন্দিহান) এবং লাকমাছড়া ঘুরে আসলাম। টেকেরঘাট থেকে বারিক্কা টিলা পর্যন্ত জার্নিটা এক কথায় অসাধারণ। বামপাশে পাহাড় আর ঝর্না মিলে যেই মোহ সৃষ্টি করেছিল সেটার রেশ এখন পর্যন্ত আছে। বারিক্কা টিলার উপরে উঠলে বিপরীত পাহাড়ে প্রায় ৪ টা ঝর্ণার দেখতে পেয়েছিলাম। প্রচুর মেঘ ছিল যা দেখে মন পুরাই খুশি। এক কথায় লাইফ এর অন্যতম সেরা একটা ট্যুর ছিল। ভরা বর্ষায় একবার হলেও সবার টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমন করা উচিত এই রোমাঞ্চকর আবহাওয়া উপভোগ করার জন্যে।

বিঃদ্রঃ ভ্রমনকালিন সময়ে অবশ্যই পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের। যত্র তত্র যায়গায় চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল, ডায়পার ফেলে পরিবেশের কাছে অপরাধী হবেন নাহ। দেশ আমাদের, পরিবেশটাও আমাদের। তাই সবার একটু সতর্ক থাকা উচিত।

Source:  SH Shagor

Share:

Leave a Comment