ভোলাগন্জ ভ্রমণ গল্প ও খরচাবলি
চলো সিলেট যাই! ২-৩ দিন থাকবো, সব জায়গায় ঘুরবো। ২৫শে আগস্টের ট্রেনের টিকিট কেটে ফেল্লাম; ফার্স্টক্লাস পাইনি- পেলাম শোভন চেয়ার। বিমানবন্দর থেকে উঠে পরলাম। উঠেই মনে হলো বাসে গেলেও পারতাম! মাথার উপরে ফ্যান নেই, পুরো বগির সব সুইচ কাজ করে, আমাদের মাথার উপরের বাতির সুইচ কাজ করেনা! তাই সারা রাস্তা বগির একমাত্র জলন্ত বাতির নিচে নির্ঘুম পার করলাম। বাসে গেলেও পারতাম…..
পাঁচভাইতে নাস্তা করলাম; দারুন। আম্বুরখানার কাছাকাছি কোন হোটেলে থাকবো। গেলাম। ভাবলাম হোটেল ভাড়া করে ব্যাগ রেখে সাদাপাথর যাব। হোটেল আর পেলাম না। ভিড় তেমন ছিলনা, তারপরও তাহারা আমাদেরকে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড ভেবে রুম নাই বলে ভাগিয়ে দিয়েছে। সুতরাং যত বুড়াই হউন না কেন হাসব্যান্ড-ওয়াইফ অবশ্যই কাবিননামা নিয়ে যাবেন; সিলেট সুবিধার না! যাইহোক ২-৩ দিনের ট্যুর ১দিনে পরিণত হলো 😝।
সিস্টার ইন ল এর হোস্টেল কাছে হওয়ায়, ম্যাডামকে ওর ওখানে পাঠিয়ে দিলাম ফ্রেস হবার জন্য। আর আমি ওদেরই বন্ধুবান্ধবদের একটা বয়েজ মেস এ গেলাম। এই হেল্পটুকু পাবো দেখেই হোটেলের জন্য ডেস্পারেট হইনি।
লক্ষ্য ভোলাগন্জের সাদাপাথর। চৌহাট্টা থেকে সিএনজি নিলাম রিজার্ভ। আমরা ২জন, ৪-৫ জন হলে খরচ কম পরে জনপ্রতি, ১৪০০+১০০ নিয়েছিলো। ৩৬ কিমি রাস্তা, ভালো ছিল রাস্তা (২-২.৫ কিমি বাদে, কয়েক জায়গায় কাজ চলছিল)। অনেক জায়গায় সিএনজি থামিয়ে থামিয়ে অনেক ছবি তুলি। পুরো জার্নিটাই দারুণ। ঘাটে পৌছে নৌকা ভাড়া করি।
নৌকা ভাড়া ৮০০; সর্বোচ্চ ৮ জন যেতে পারে। ২জন বিধায় ঝামেলা হয়ে গেল। গ্রুপ খুজছিলাম; আমার ইউনিভার্সিটির ২ ছোটভাই পেয়ে গেলাম (পরিচয় পরে হয়েছে)। ভাড়ার আগে বলে নিয়েছিলাম কমপক্ষে ২ ঘন্টা থাকবো (জরুরী)।
প্রচুর ছবি তুললাম আর পানিতে ভিজলাম। ৭-৮দিন আগে কেনা ND filter টার প্রথম ফিল্ডটেস্ট করার উদ্দেশ্যে বেশ কিছু লং-এক্সপোজার তোলার চেষ্টা করলাম। একটা বড়সড় আছার ও খেলাম। কখন ২ঘন্টা চলে গেছে জানিও না। ফিরে আসলাম ঘাটে।
আসার সময় চা বাগানে দাড়ালাম ছবি তোলার জন্য। চৌহাট্টায় নেমে গেলাম। অবেলায় দুপুরের খাবার খেলাম ভোজনবাড়ি তে (পানসির পাশে)। তারপর SUST এ ঘুরাঘুরি করে আর সুরমা নদীর ব্রীজ থেকে সূর্যাস্ত দেখে চোখের ক্ষুধা মিটালাম। রাতে আবারো ভোজনবাড়ি তে মহাসুস্বাদু গ্রীল-নান খেয়ে ইউনিক বাসে চড়ে বসলাম! আগের ২৪ ঘন্টার নির্ঘুম ভ্রমনের পর দুজনেই এত বেশি টায়ার্ড ছিলাম যে বাসের সিটে পিঠ লাগানোর পর আর কিছু মনে নেই। সুপারভাইজার ডেকে তুলছে ভোরে। জীবনের অন্যতম স্মরনীয় সর্ট ট্যুরটি শেষ করলাম।
অপ্রাসঙ্গিক ডিটেইলস: খরচ ৪১৮০ + খাওয়া দাওয়া+ রিক্সাভাড়া+ হাবিজাবি আলাদা। ৪-৫ জনের গুনিতক আকারে গেলে জনপ্রতি খরচ কমবে।