উত্তরখণ্ডের বালি পাস ট্র্যাক

উত্তরখণ্ডের বালি পাস ট্র্যাক।। যদিয়ও পুরো ট্র্যাক সম্পন্ন হয়নি।। আবহাওয়ার জন্য ।। কিন্তু অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে যা আমার পরবর্তী তে অনেক কাজে দিবে এবং আমি চাই এই অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করতে ।। 🙂

আজকে ও হাঁটতে হবে ৭/৮ কিমিঃ এর মত।।
৩ দিন পর আজকে দাঁত ব্রাশ এর জন্য প্রস্তুতি নিলাম, 😛 পানি গালে দিলে ই মনে হয় কেও যেন জোরে জোরে থাপ্পড় দিচ্ছে 😑।। দাঁত ও গালের যত্ন পর্ব শেষ করে নাশ্তা শুরু করে দিলাম।। নাশ্তাতে ছিল পায়েশ , ডিম দিয়ে ব্রেড ভাজা ।। পায়েশ টা কোনমতে খেয়ে আমি শুরু করলাম হাঁটা ।। সাথে ছিল বাকিরা 😛 রাস্তায় ব্রেক নিয়ে জুস , চকলেট খাওয়া হয়েছিল।। দুপুর এর সময় আবার ব্রেক নিয়ে রুটি সবজি খেয়েছে বাকিরা।। আজকে আমাদের ৫০% স্নো তে হাঁটা হয়েছে ।। আজকে ও উপরে ই উঠতে হয়েছে।। হাল্কা পাতলা ডাউন এবং সমান রাস্তা ছিল সব ই পাথর এর রাস্তা ।। প্রধান সমস্যা অক্সিজেন এর।।

বিকাল ৩ টায় রুইন্সারা তাল
আজকের ক্যাম্প এইখানেই ।। অসম্ভব সুন্দর যায়গা।।
তাঁবুর ভিতরে যেয়ে ৫ লেয়ার নিয়ে নিলাম শরীরে 😂 আমার আবার শরীর এ ঠাণ্ডা বেশি 😔।। বিকালের নাশ্তায় ছিল সুপ এবং ভেজ নুডলস। আমি তাঁবুর ভিতর এ খাচ্ছিলাম আমি হটাত বাইরে থেকে আমার সে আমাকে জোরে জোরে ডাকছিল আর বলছিল জলদি বের হও দেখো কি আসছে !! আমি তহ আরামে ভিতরে বসেছিলাম , আর ভাবছিলাম তারা মনে হয় আমাকে ঠাণ্ডায় নেওয়ার জন্য ফন্দী করেছে কোন তাই নিজে না বের হয়ে তাঁবুর পর্দা খুলে দেওয়ার সাথে সাথে আমি অবাক! বাইরে তুষারপাত হচ্ছিল!! আমার জিবনে দেখা প্রথম তুষারপাত 😍আমি তারা তাড়ি করে বের হয়ে লাফাতে চাচ্ছিলাম কিন্তু আমার শরীর ততক্ষণ এ জমে ই যাচ্ছিল ্তবুও সুপ হাতে নিয়ে নাচতে নাচতে বাইরে এসে তুষার এবং সুপ ইঞ্জয় করলাম ৩ জন একসাথে 😀

পাশেই একটা পাথর এর বাড়ির মত ছিল যার দরজা জানালা নাই 😛 কিন্তু ওইখানের কিছু পুরনো লাকড়ি পেয়ে আমাদের খুশি তখন সেই লেভেল এ 😅।। লাকড়ি জ্বালিয়ে কিছুক্ষণ আনন্দ উপভোগ করা যাবে 😛 ।। উপভোগ শেষ করে তাবুতে তে ফিরে গেলাম , লাকড়ি ও শেষ উপভোগ ও শেষ😂
তাঁবু তে যেয়েই স্লিপিং ব্যাগ এ ঢুকে গল্প শুরু।। রাতের খাবার ৭.৩০ এ ই শেষ করে নিলাম।। রাত ৭ টা ই পাহাড়িদের কাছে অনেক রাত। রাতের খাবার এ ছিল ঢেঁড়স ভাজি , ডাল, পাপড়ি এবং ভাত। আজকে কিছু খেলাম। ঢেঁড়স টা খাওয়ার উপযোগী ছিল ।। আমার সে তার প্লেট আর ভাত শেষ করতে পারল।। আর হাসান ভাই?? সে তহ ২ প্লেট ভাত এবং ৩ টা রুটি ও খেয়ে নিল 😒
খেয়ে হাল্কা গল্প করে ঘুম দিলাম।।
রাত ১২ তার দিকে পেট এ চাপ দেওয়া শুরু ।। বাইরে যেই পরিমান স্নো ছিল ওইটা মাড়িয়ে প্রকৃতির ডাক এ সাড়া দেওয়া যেমন তেমন বেপার না।। এইটা শুয়ে শুয়ে ভাবছি।। আর চাইছি যাতে চাপ চলে যায়। ও মা! এ তহ জোরে সোরে চাপ শুরু হয়ে গেল ।। কি আর করা ৪ দিন না খেয়ে পরে হাল্কা খাওয়ার পরিণাম 😒😏

যা এ হোক 😁 সকাল এর যে ভিউ ছিল! আহা!! সৃষ্টিকর্তার শুক্রিয়া আদায় করে চলে গেলাম লেকটা দেখতে। ৫ মিনিট এর রাস্তা ।। বাকি ২ জন আগের দিন ই গিয়েছিল লেক এ, আমার ই তখন যাওয়া হয়নি তাই আজ বাকি ২ জনকে নিয়ে আমি গেলাম 😛
সকালের নাশ্তায় ছিল শুঙ্কনা খিচুড়ি ডাল চাউল এর , চা এবং বিস্কিট ।। আবার ২ চামচ এর বেশি গলা দিয়ে গেলনা। চা খেয়ে রেডি হয়ে আবার হাঁটা ।। আজকের টার্গেট আপার ধামিনি ।। আজকে হাঁটতে হবে আবার ৭ কিমিঃ এর মত ।। রাতে এইখানে তাপমাত্রা ছিল -৫°থেকে -৮°
আজকে হাঁটার শুরু থেকেই বরফ শুরু ।। তাজা স্নো , পা রাখলে ই নিচে চলে যায়। প্রথম এ টাকনু থেকে শুরু করে হাঁটুর কাছা কাছি পর্যন্ত ছিল আমার।। এবং ট্যুর এর এইখান থেকে আমাদের সব মজা ফাইযলামি শেষ হয়ে গেল, কারন আবহাওয়া ক্রমশ খারাপ হচ্ছে ।। দেখা যাচ্ছিল দূরে থেকে অন্নেক অন্ধকার আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে ।। আমরা প্রথম এ হাল্কা আলোতে হাঁটা শুরু করলাম পরে আস্তে আস্তে অই অন্ধকার টা আস্তে আস্তে আমাদের কাছে কাছি আসতেই হাল্কা স্নো ফল শুরু হয়ে গেল ।। এখনো স্নো ভালো লাগছিল সবার , অন্যদিকে গাইড বলছিল আর না যাওয়ার জন্য।। আমাদের সব মজা হাওায় উড়ে গেল , মাথায় ভর করল একগাদা চিন্তা ।। গাইড বলছিল এই স্নো কমবেনা বাড়বে , কিন্তু কমে গেলে যাওয়ার চান্স আছে।। মাথায় একটা ই কথা, আসছি এতো দূরে কি চলে যাওয়ার জন্য? পরে গাইডকে বললাম যে তাহলে দেখি স্নো কমে কিনা।। আমরা ইতিমধ্যে ৪ কিমিঃ চলে এসেছিলাম এবং পিছু যেতে চাচ্ছিলাম্না কেও ই ।। স্নো আস্তে আস্তে আরও ভারি হতে থাকলো । টেনশন বাড়ছে আমরা একটা যায়গায় দাঁড়িয়ে আছি কারন তাঁবু আনার জন্য যারা ছিল তারা এখনো আসেনি।। প্ল্যান হল যে এইখানে আজকে থেকে যাবো , কালকে স্নো কমে গেলে সামনে যাবো না হয় পিছনে চলে যাবো তবুও লাস্ট চেষ্টা ।। ১ ঘণ্টা ভারি স্নো আর মধ্যে অপেক্ষার পরে তাঁবু নিয়ে আসলো বাকিরা ।। তাঁবুতে ঢুকে নিজেরা ই সিদ্ধান্ত হিনতায় ছিলাম আমরা। কারন প্রকৃতি এইটা ভালো ও হতে পারে আবার আরও খারাপ ও হতে পারে। কিছু ই মাথায় ধুকছিলনা । তার মধ্যে বাইরের স্নো বেড়ে ই জাচ্ছে ।। আমাদের তাঁবু বার বার ঝাড়া দিতে হচ্ছে, না হলে তাঁবু ভেঙ্গে যেতে পারে , তার মধ্যে তাঁবু ইতিমধ্যে ১.৫ ফুট ঢুকে গিয়েছে বরফ আর মধ্যে ।। তাঁবুর নিচে ম্যাট লিক করে পানি ঢুকা শুরু হয়েগিয়েছে ।। আমাদের ৩ জনের অবস্থা ই খারাপ।। টাকা তহ বেপার কিন্তু তার চেয়ে বড় যেই বেপার টা ছিল টা হল বাঁচা মরার প্রশ্ন চলে এসেছিল ।। গাইড বার বার বলছিল নিচে চলে যাওয়ার জন্য না হলে কেও এক জন মারা যেতে পারে ।। তাদের অভিজ্ঞতা আছে তাই আমরা র ২য় প্রশ্ন না করে বিকাল ৫/৬ টায় রওয়ানা দিলাম নিচে।। অন্ধকার এ স্নো তে ট্র্যাক ।। নিচে গিয়ে কোনমতে শুয়ে পরলাম খাবার আজকে খেজুর ছাড়া কিছু ই খাইনি আমি।।
আমরা থাঙ্গা পর্যন্ত যেতে পেরেছিলাম এবং সেখানে তাপমাত্রা ছিল -১০° থেকে -১৫° পর্যন্ত

আমরা সবাই ই অসুস্থ ছিলাম অলরেডি ।। আমাদের সাথের পাহাড়ি এক জন ভারি ভারি জিনিস বহন করে বমি করেদিয়েছিল ।। আর একজন কান্নাকাটি করে দিয়েছিল কারন আমরা যেই ঠাণ্ডা ফেস করেছিলাম টা সাভাবিক ছিলনা ।। রাখে আল্লাহ্‌ মারে কে! শুধু এইটা ই বলব ..
রাত এ আমরা রুইন্সারা তাল এর পাশে পাথর এর বাড়ির মত যায়গাটা তে ছিলাম
চরম একটা অভিজ্ঞতা!

যা ফেস করেছি তার ১০% ও লিখতে পারিনি।যখন অভিজ্ঞ গাইড বলেন যে, আরও উপরে গেলে যেকোনো একজন মারা যেতে পারে তখন কি অবস্থা হয় শুধু ফিল করলে এ বার বার কাঁপুনি চলে আশে । বলে বুঝানো সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয়না।

Share:

Leave a Comment