উত্তর গনভবন, নাটোর পরিদর্শনে

নাটোরের বিখ্যাত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি বর্তমানে উত্তরা গণভবন (Uttara Gonovobon) নামে পরিচিত। নাটোরের রানী ভবানী তাঁর নায়েব দয়ারাম রায়কে দিঘাপতিয়া পরগনা উপহার দেন। পরবর্তীতে নায়েব সেখানে কয়েকটি প্রাসাদ গড়ে তোলেন। প্রায় ৪৩ একর আয়তনের লেক ও প্রাচীর বেষ্টিত রাজবাড়িটিতে মোট ১২ টি ভবন রয়েছে। উত্তরা গণভবনের পিরামিড আকৃতির চারতলা প্রবেশদ্বারের চূড়ায় বিখ্যাত কোক অ্যান্ড টেলভি কোম্পানির তৈরি একটি ঘণ্টা ঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে। আর মূল প্রাসাদ ভবনে প্রবেশ করলে রাজার সিংহাসন, আক্রমণ ঠেকানোর বর্ম এবং তলোয়ার দেখতে পাওয়া যায়। রাজ প্রাসাদের প্রাঙ্গণে ইতালি থেকে সংগৃহীত ভাস্কর্যে সুসজ্জিত বাগান রয়েছে। মনোমুগ্ধকর এই বাগানে স্থান পেয়েছে হাপরমালি, নীলমণিলতা, রাজ-অশোক, পারিজাত, কর্পূর, সৌরভী, হৈমন্তী, যষ্টিমধু, বনপুলক, পেয়ালি, সেঁউতি, তারাঝরা, সাইকাস, মাধবী ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এছাড়া আছে রাজা প্রসন্ননাথের অবক্ষমূর্তি, জমিদার দয়ারামের ভাস্কর্য, চারটি কামান, কুমার ভবন, তহশিল অফিস ও অতিথিশালা।

উত্তরা গণভবন পরিদর্শনের সময়সূচী
গ্রীষ্মকালে সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত উত্তরা গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকলেও শীতকালে ৫ টায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়। সপ্তাহের প্রতি রবিবার উত্তরা গণভবন বন্ধ থাকে। গণভবনের আঙিনায় প্রবেশ করতে ২০ টাকা মুল্যের টিকেট ক্রয় করতে হবে।

কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে নাটোর যাওয়া যায়। নাটোর বাস স্টপ কিংবা রেলস্টেশন থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উত্তরা গণভবন যেতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে। অথবা নাটোরের যে কোন জায়গা থেকেই উত্তরা গণভবনে যাওয়ার পর্যাপ্ত রিক্সা বা অটোরিক্সা পাবেন। নাটোরের মাদ্রাসা মোড় থেকে উত্তরা গণভবন যেতে ৩০ টাকা রিকশা ভাড়া লাগে।

বাসে ঢাকা থেকে নাটোর
ঢাকা থেকে নাটোর যাওয়ার বেশকিছু বাস সার্ভিস রয়েছে এদের মধ্যে গ্রীণ লাইন, হানিফ, দেশ, শ্যামলি এবং ন্যাশনাল পরিবহন উল্লেখ্য। এসব পরিবহণের বাসগুলো নিয়মিতভাবে ঢাকার কল্যানপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নাটোরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

ট্রেনে ঢাকা থেকে নাটোর
ঢাকা থেকে সাধারনত রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাটগামী রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো নাটোর স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে গন্তব্যের পথে এগিয়ে যায়। তাই সময় জেনে এসব ট্রেনে সহজেই নাটোর যেতে পারবেন।

কোথায় খাবেন
উদরপূর্তির জন্য নাটোরে বেশকিছু বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। নিজের পছন্দ মত যেকোন রেস্টুরেন্টে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খেতে পারবেন। কম খরচে খাওয়ার জন্য ইসলামিয়া পঁচুর হোটেলের বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া রেলস্টেশনের কাছে নয়ন হোটেলের খাবারও বেশ ভাল। সমগ্র বাংলাদেশে চলনবিল এবং রানী ভবানী সুস্বাদু মাছের সুনাম ছড়িয়ে আছে। তাই নাটোর ভ্রমনকালে মাছ খাওয়ার এই সুযোগ মিস করা মোটেও ঠিক হবে না। সাথে নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা খেয়ে সাথে করে নিয়েও আসতে পারেন।

source:  Tomal Ahmed Tipu <Travellers Of Bangladesh

Share:

Leave a Comment