হরিহর দুর্গ, নাসিক, মহারাষ্ট্র

ব্রহ্মগিরি ও বৈতর্ণ পাহাড়ে ঘেরা হরিহর দুর্গ ট্রাকিং হলো মহারাষ্ট্রের অন্যতম ভয়ঙ্কর ট্রাকিং। আপনি যদি রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন কিংবা পাহাড়ে ট্র্যাকিং করে শত বছর পুরাতন দুর্গ গুলো দেখতে উৎসাহী হয়ে থাকেন তবে নিচের লিখা গুলো আপনার জন্য।
.
হরিহর দুর্গ ট্রাকিং কে ভয়ঙ্কর বলার কারন ৩,৬৭৬ ফুটের কেল্লাটির ২০০ ফুট উচ্চতা একেবারে খাড়াই। ত্রিম্বকেশ্বর পর্বত থেকে ১৩ কিমি দূরে বৈতর্ণা বাঁধের কাছে রয়েছে এই কেল্লা। পাথরের সিঁড়ির মতো খাঁজ রয়েছে এই কেল্লায়। ১১৭টি খাঁজকাটা পকেটের মতো ধাপ রয়েছে। ভূমি থেকে ওই কেল্লার শীর্ষ পর্যন্ত দু’টি ঢাল প্রায় ৯০ ডিগ্রি খাড়াই। পশ্চিম দিকের ঢাল প্রায় ৭৫ ডিগ্রি খাড়া। কেল্লার উপরে রয়েছে দু’টি আলাদা ঘরের মতো জায়গা। এক সময় এটি নাকি রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করা হত। কেল্লার কাছেই নিরগুডপাড়া গ্রাম। সেখান থেকে জঙ্গলের দিকে যাওয়ার রাস্তা ধরে এগোলেই কেল্লার দিকে পৌঁছানো যাবে। কেল্লার শীর্ষে পৌঁছে দেখা যাবে দূরের অসম্ভব সুন্দর পর্বতশ্রেণি।
.
বর্ষাকালে এই স্থান আরো সুন্দর হয়ে উঠে, কিন্তু পিচ্ছিল মাটিতে ট্রাকিং করাটা বিপদজনক। তাই আমরা জানুয়ারীতে গেছি। পর্যাপ্ত সাহস না থাকলে এই কেল্লায় না আসাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারন আপনি যখন খাড়া পাথুরে সিড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠে যাবে তখন নিচে তাকালে হার্ট বিট বেড়ে যেতে পারে।
.
এই কেল্লা ঘিরে মরাঠা, মুঘল ও ইংরেজ তিন দলেরই যুদ্ধ হয়েছিল। বিখ্যাত মারাঠা রাজা ছত্রপতি শীবাজি এই দুর্গকে মুঘলদের সাথে যুদ্ধের সময় ব্যাবহার করেছিলেন। ১৬৮৯ সালে এই কেল্লা দখল করেছিল মুঘলরা। পরবর্তীতে মারাঠারা এই দুর্গ আবার দখল করে নেয়। ১৮১৮ সালে ব্রিটিশরা মরাঠাদের থেকে এই কেল্লা দখল করে। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী হয়ে থাকেন তবে এই কেল্লা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে তার অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে। ৯০ খাড়াই পাহাড়ের ভয় শিরশির অনুভূতি আর ইতিহাস আপনাকে ডাকছে।

কিভাবে যাবেনঃ
===========
ঢাকা থেকে কলকাতা, পরে কলকাতা থেকে ট্রেনে নাসিক অথবা বিমানে করে মুম্বাই। পরে মুম্বাই থেকে ট্রেনে নাসিক। নাসিক থেকে ৫০ কিঃ মিঃ দূরে হারিহার দুর্গ। তাই নাসিক থেকে ত্রিম্বাগে চলে আসবেন। এখানে অনেক হোটেল আছে। ত্রিম্বাগ থেকে ট্যাক্সি নিয়ে ১৩ কিঃ মিঃ দূরে হারিহার দুর্গ যেতে পারেন। আপ আন্ড ডাউন হিসেবে মিলে ১২০০ রুপি ম্যাক্স লাগবে।

Share:

Leave a Comment