চীনামাটি ও স্বচ্ছ সোমেশ্বরীর দেশে

চীনামাটি ও স্বচ্ছ সোমেশ্বরীর দেশে
.
(বিরিশিরি, দুর্গাপুর, নেত্রকোনা)
.
১০০০ টাকায় একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন বিরিশিরি থেকে।
(পোস্টের শেষে টাকাটা যোগ করে নিবেন। আশা করি ১০০০ টাকার বেশি লাগবে না। আর বিলাসিতা করলে খরচের শেষ নেই। বাট, আমাদের মতো যারা স্টুডেন্ট তারা ট্যুরে যাওয়ার আগে মিনিমাম কত টাকা হলে যাওয়া যায় ওইটা আগে খেয়াল করে। আশা করি ব্যাপারটা বুঝবেন)
.
কিভাবে যাবেন:
>ঢাকা-নেত্রকোণা-চল্লিশাবাজার-শিমুলকান্দি-বিরিশিরি<
( যেহেতু প্রচলিত শ্যামগঞ্জ-পূর্বধলা রাস্তা চলাচলের অযোগ্য। অনেকে এই কারনে বিরিশিরি যেতে ভয় পায়। বাট, এই রাস্তা ব্যবহার করলে ৬০% কষ্ট কম হবে)
.
আপনি একদিনেই ঘুরে আসবেন তাই সবচেয়ে ভালো হবে রাতে রওনা দিলে।
ঢাকা টু নেত্রকোনা হাওড় এক্সপ্রেস। বিমান বন্দর থেকে ছাড়ে রাত ১২:০০ টায়। শোভন চেয়ার সিটে আপনি ২০০ টাকায় যেতে পারবেন। (যেহেতু নাইট কোচ রাত ১০ টার পরে নেই সে জন্য সকাল সকাল পৌছানোর জন্য ট্রেনে যাওয়া সবচেয়ে ভালো হবে)
ঈদ পূজা ছাড়া টিকিট নিয়ে চিন্তা না করলেও হয়। ট্রেন অর্ধেক খালি থাকে। আপনি শুয়ে শুয়েও যেতে পারবেন।
ভোর ৫:৩০ এর মধ্যে আপনি নেত্রকোনা পৌঁছে যাবেন। নেত্রকোণা নেমে শহরে ৩০ টাকায় নাস্তা করে আপনি চলে যাবেন চল্লিশা বাজারে। স্টেশন থেকে অটো রিকশায় চল্লিশা পর্যন্ত ২০ টাকা ভাড়া নিবে। নাস্তা করে ফ্রেশ হয়ে চল্লিশা আসতে আসতে আপনার ৬:০০-৬:৩০ বেজে যাবে।
যেহেতু বিরিশিরিতে অনেক গুলা স্পট এবং স্পটগুলোর দূরত্ব একটি আরেকটা ৩-৪ কি:মি তাই আপনাকে মোটরসাইকেলে করে ঘুরলে সবচেয়ে আরামদায়ক হবে। নাহলে হাটতে হাটতে আপনার শরীরের ১২ টা বাজবে। চল্লিশা বাজারে আপনি ভাড়ায় চালিত অনেক মোটর সাইকেল পাবেন। আপনাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাড়া করতে হবে। দামাদামি করে আপনি ৫৫০-৬০০ টাকায় একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে চলে যাবেন চল্লিশা টু শিমুলকান্দি রাস্তা দিয়ে পূর্বধলা হয়ে দূর্গাপুর বিরিশিরি। এক মোটরসাইকেলে ২ জন করে গেলে প্রতিজনে ৩০০ করে লাগবে (চল্লিশা-শিমুলকান্দি রাস্তাটা এখন ওইদিককার মানুষ সবাই ব্যবহার করছে। বিরিশিরি যাওয়ার Common রাস্তা শ্যামগঞ্জ – পূর্বধলা রাস্তার ব্যাপক খারাপ হওয়া এখন ওই রাস্তায় বাস চলাচল অনিয়মিত)
মোটরসাইকেলে করে যেতে আপনার লাগবে বড়জোর ১ ঘন্টা থেকে ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। সকাল ৮ টায় বিরিশি বাজারে হালকা নাস্তা করে আপনি বেরিয়ে পড়তে পারেন।
একে একে সবগুলা স্পট ঘুরে বিকেলের মধ্যেই ব্যাক করতে পারবেন।
উল্লেখ্যযোগ্য স্পটগুলো:
.
>বিজয়পুর পাহাড়
> সোমেশ্বরী নদী
>রানীখং মন্দির
>ওয়াচ টাওয়ার
>বিরিশিরি ক্যালচারাল একাডেমি
.
নেত্রকোনা শহরে পৌছাতে সন্ধ্যা হবে। শহরের বাস কাউন্টার থেকে শাহজালাল এক্সপ্রেসের নেত্রকোণা টু ঢাকা টিকেট কেটে সময় বাকি থাকলে নেত্রকোণা শহরটা ঘুরে দেখতে পারেন। যাওয়ার আগে শহরের গয়ানাথ মিষ্টি ভান্ডার থেকে নেত্রকোণার বিখ্যাত ‘বালিশ মিষ্টি ‘ খেয়ে যেতে পারেন।
তার পাশেই রাস্তার ধারে ১০০ রকম চায়ের একটা টং আছে। বিভিন্ন স্বাদের দুই এক কাপ চা খেতে পারেন।
এরপর রাতের খাবার খেয়ে বাসে উঠে পরবেন।
নেত্রকোনা থেকে আপনি ট্রেনেও ব্যাক করতে পারবেন।
দুইটা ট্রেন একটা সকালে আরেকটা বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেলের পরে যেতে চাইলে আপনাকে ময়মনসিংহে নেমে যেতে হবে। ময়মনসিংহে আরো কয়েকটি সিডিউলের ট্রেন ঢাকায় যায়।
.
(চল্লিশা বাজার থেকে যদি কোনো কারনে মোটরসাইকেল ভাড়া না করতে পারেন অথবা অনেক বেশি দাম হাকায় তাহলে আপনি চল্লিশা-শিমুলকান্দি-পূর্বধলা রুটে অটো-সিএনজি করে বিরিশিরি যেতে পারেন। এরপর বিরিশিরি থেকে মোটরসাইকেল ভাড়া করতে পারেন)
.
পুনশ্চ : Industrial Raw material হিসেবে চীনামাটির ব্যবহারের জন্য দিন দিন কেটে ফেলা হচ্ছে এই সাদা-নীলাভ চীনামাটির পাহাড়। অনেকটায় কেটে ফেলা হয়েছে হয়ত এখন থেকে ১০ বছর পর বিজয়পুরের এই চীনামাটির পাহাড়ের কোনো চিহ্ন থাকবে না। তাই সময় থাকতে দেখে ফেলুন

 

Share:

Leave a Comment