আগরতলা ট্যুরের আদ্যোপান্ত
স্বল্প খরচে যারা ইন্ডিয়া ঘুরা এবং কেনাকাটা করতে চান তাদের জন্য আগরতলা হতে পারে বেস্ট ডেস্টিনেশন।
থাকা খাওয়া এবং খরচপত্র পোস্টের প্রাসঙ্গিক অংশে আলোচনা করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে ভারতের সবচেয়ে কাছের রাজ্য ত্রিপুরা। ত্রিপুরার রাজধানী শহর আগরতলা।
আগরতলা থেকে ডোমেস্টিক ফ্লাইটে ভারতের প্রায় সব গন্তব্যে কম খরচে ভ্রমণ করা যায়। (আগরতলা থেকে ১৮০০* রুপিতে মাত্র ৫০ মিনিটে বিমানে কলকাতা যাওয়া যায়) যেখানে ঢাকা থেকে ভাল মানের বাসে কলকাতা গেলে সারারাত এবং দিনের অর্ধেক সময় নষ্ট হয় এবং ভাড়া ১৬০০/১৮০০ টাকা লাগে।
যাই হউক, এটা নিয়ে (কেউ জানতে চাইলে) অন্যকোন দিন অন্য কোন পোস্টে কথা হবে।
যাই হউক, এটা নিয়ে (কেউ জানতে চাইলে) অন্যকোন দিন অন্য কোন পোস্টে কথা হবে।
যাত্রাঃ
=====
ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতি ট্রেনে(৭.৪৫) যাত্রা শুরু করলে সকাল ১১টার মধ্যে আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে নামিয়ে দিবে। ভাড়া ১৬০ টাকা।
=====
ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতি ট্রেনে(৭.৪৫) যাত্রা শুরু করলে সকাল ১১টার মধ্যে আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে নামিয়ে দিবে। ভাড়া ১৬০ টাকা।
সেখানে সকালের নাস্তা সেরে নিয়ে অটোরিকশা অথবা সিএনজিতে করে চেকপোস্ট চলে যাবেন। ভাড়া নিবে সিএনজি জনপ্রতি ২৫/৩০ টাকা। রিক্সা ৫০/৬০ টাকা।
চেকপোস্টে ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসের কাজ শেষ করে ঢুকে পরুন ভারতীয় সীমান্তে। সেখানেও সব কাজ শেষ করে ভারতে প্রবেশ করুন।
বিঃদ্রঃ দুই ইমিগ্রেশনের কোন প্রান্তেই কাউকে কোন এক্সট্রা মানি/স্পিড মানি দিবেন না।
গেটে থেকে দুই মিনিট পথ এগুলেই মানি এক্সেঞ্জার পাবেন কিন্তু এখানে রেট অনেক কম দেয়। বেটার শহরে গিয়ে রুপি এক্সচেঞ্জ করা।
গেট থেকে বের হলেই আটোরিক্সা এবং রিক্সা পেয়ে যাবেন। দরদাম ঠিক করে উঠে পরুন।
কোথায় থাকবেনঃ
==============
রিক্সা নিয়ে চলে যান “হরি গঙ্গা বাসক রোড” অথবা “ফায়ার বিগ্রেড চৌমুনি” অথবা “পোস্ট অফিস চৌমুনি“। ভাড়া নিবে ৪০/৫০ রুপি।
বিগ বাজার থেকে শুরু করে সব শপিং মলসহ থাকা এবং খাওয়ার সব হোটেল এর আসেপাশেই পাবেন।
==============
রিক্সা নিয়ে চলে যান “হরি গঙ্গা বাসক রোড” অথবা “ফায়ার বিগ্রেড চৌমুনি” অথবা “পোস্ট অফিস চৌমুনি“। ভাড়া নিবে ৪০/৫০ রুপি।
বিগ বাজার থেকে শুরু করে সব শপিং মলসহ থাকা এবং খাওয়ার সব হোটেল এর আসেপাশেই পাবেন।
এই রোডে Hotel Somraj Regency, Hotel Sonar Tori সহ আরো অনেক হোটেল পাবেন। ৮০০ থেকে ১৫০০ রুপির মধ্যে এসি/ননএসি রুম পেয়ে যাবেন। সেখানে পছন্দ না হলে আসে পাশে আরো কয়েকটা হোটেল দেখে নিতে পারেন।
কি কি দেখবেন!
============
হেরিটেজ পার্কঃ
============
হোটেল থেকে নেমে একটা আটো নিয়ে হেরিটেজ পার্কে চলে যান। ভাড়া নিবে ৮০/১০০ রুপি। পার্ক এন্ট্রি ফি ২০ রুপি।
অনেক দেশি বিদেশি গাছপালা এবং ত্রিপুরার বিখ্যাত সব যায়গা সমুহের মিনিয়েচার দিয়ে এই পার্কটি তৈরী করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং ত্রিপুরার সব ঐতিহ্য একনজরে দেখে ভাল লাগবে আশা করি।
হেরিটেজ পার্ক সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
============
হেরিটেজ পার্কঃ
============
হোটেল থেকে নেমে একটা আটো নিয়ে হেরিটেজ পার্কে চলে যান। ভাড়া নিবে ৮০/১০০ রুপি। পার্ক এন্ট্রি ফি ২০ রুপি।
অনেক দেশি বিদেশি গাছপালা এবং ত্রিপুরার বিখ্যাত সব যায়গা সমুহের মিনিয়েচার দিয়ে এই পার্কটি তৈরী করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং ত্রিপুরার সব ঐতিহ্য একনজরে দেখে ভাল লাগবে আশা করি।
হেরিটেজ পার্ক সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
উজায়ন্ত প্যালেসঃ
============
এটি মুলত একটি মিউজিয়াম। তবে এটা আমদের ঢাকা মিউজিয়ামের মত এত বেশি সমৃদ্ধ না।
এই মিউজিয়ামের একটা অংশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সেসময়ের প্রকাশিত পত্রিকা এবং মুক্তিযুদ্ধের অনেক ছবি আছে যেটি দেখলে আপনার অনেক ভাল লাগবে।
============
এটি মুলত একটি মিউজিয়াম। তবে এটা আমদের ঢাকা মিউজিয়ামের মত এত বেশি সমৃদ্ধ না।
এই মিউজিয়ামের একটা অংশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সেসময়ের প্রকাশিত পত্রিকা এবং মুক্তিযুদ্ধের অনেক ছবি আছে যেটি দেখলে আপনার অনেক ভাল লাগবে।
উজায়ান্ত প্যালেস এর ভিতর থেকে বাহিরের অংশ বেশি সুন্দর। এর নির্মান শৈলী, খোলা মাঠ, প্রশস্থ বাগান, পানির ফোয়ারা সব কিছু আপনার নয়ন কেরে নিবে।
উজায়ন্ত প্যালেসে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
উজায়ন্ত প্যালেসে প্রবেশ ফি স্থানীয়দের জন্য ২০ রুপি আর ফরেনারদের জন্য ১০০ রুপি।
টিপসঃ টিকেট কাটার সময় যদি দুই এক লাইন হিন্দি বলতে পারেন তাহলে ২০ রুপিতেই টিকেট নিতে পারবেন। 😉
আত্মবিশ্বাসের সাথে বলবেন “দু টিকিট দি জিয়ে”
মানে দুটি টিকিট দিন! 😁
তবে আত্মবিশ্বাসের সাথে বাংলায় বললেও হবে কিন্তু বাংলাদেশি বুঝতে পারলে আর ২০ টাকায় দিবে না 😏
আত্মবিশ্বাসের সাথে বলবেন “দু টিকিট দি জিয়ে”
মানে দুটি টিকিট দিন! 😁
তবে আত্মবিশ্বাসের সাথে বাংলায় বললেও হবে কিন্তু বাংলাদেশি বুঝতে পারলে আর ২০ টাকায় দিবে না 😏
দ্বিতীয় দিন
========
========
দ্বিতীয় দিন হোটেল থেকে চেক অউট করে আগরতলা থেকে দূরের গন্তব্যগুলো (সিপাহিজলা অভয়ারণ্য, উদয়পুর এবং নীরমহল) দেখে আসতে পারেন।
স্থানীয় বাসে যেতে পারেন অথবা ডিরেক্ট গাড়ি রিজার্ভ করেও নীরমহল যেতে পারেন। রাজবাড়ির(উজায়ান্ত প্যালেস) সামনে অথবা মটর স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করতে পারবেন। সারাদিনের জন্য ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা নিবে।
স্থানীয় বাসে যেতে পারেন অথবা ডিরেক্ট গাড়ি রিজার্ভ করেও নীরমহল যেতে পারেন। রাজবাড়ির(উজায়ান্ত প্যালেস) সামনে অথবা মটর স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করতে পারবেন। সারাদিনের জন্য ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা নিবে।
গাড়ি রিজার্ভ করে গেলে ড্রাইভার কে বলে রাখবেন বিকেল ৫টার আগে যেন চেকপোস্টে নামিয়ে দেয় (যদি সেদিন দেশে ফেরত আসেন)
সন্ধ্যা ৭টায় আখাউরা থেকে মহানগর গোধূলি ট্রেনে ঢাকা ফেরত আসতে পারবেন।
সিপাহিজলা অভয়ারণ্যঃ
===================
আগরতলা থেকে মাত্র ২৫ কিমি দূরে সিপাহিজলা অভয়ারণ্য, অনেকটা মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মতো। আগরতলা থেকে সিপাহিজলা যাবার পথটি বেশ রোমাঞ্চকর।
===================
আগরতলা থেকে মাত্র ২৫ কিমি দূরে সিপাহিজলা অভয়ারণ্য, অনেকটা মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মতো। আগরতলা থেকে সিপাহিজলা যাবার পথটি বেশ রোমাঞ্চকর।
উদয়পুরঃ
=======
আগরতলা থেকে দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। অমরসাগর, জগন্নাথ দিঘি, মহাদেব দিঘি ইত্যাদি সুদৃশ্য জলাশয়ের জন্য উদয়পুর বিখ্যাত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য যায়গাটি প্রায় তীর্থস্থানের মত।
=======
আগরতলা থেকে দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। অমরসাগর, জগন্নাথ দিঘি, মহাদেব দিঘি ইত্যাদি সুদৃশ্য জলাশয়ের জন্য উদয়পুর বিখ্যাত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য যায়গাটি প্রায় তীর্থস্থানের মত।
নীরমহলঃ
========
আগরতলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত নীরমহল। যেতে সময় লাগবে ১.৩০ ঘন্টা।
রুদ্রসাগরের বিশাল জলরাশীর মাঝখানে মুসলিম স্তাপত্য রিতীতে তৈরি করা এই মহলটি দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। ৩০ রুপির টিকেট কেটে ট্রলারে করে মহলে যেতে হয়।
========
আগরতলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত নীরমহল। যেতে সময় লাগবে ১.৩০ ঘন্টা।
রুদ্রসাগরের বিশাল জলরাশীর মাঝখানে মুসলিম স্তাপত্য রিতীতে তৈরি করা এই মহলটি দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। ৩০ রুপির টিকেট কেটে ট্রলারে করে মহলে যেতে হয়।
কোথায় কেনাকাটা করবেনঃ
====================
আগরতলায় Addidas, Skechers, UCB, Woodland, Fastrack সহ প্রায় সব নামকরা ব্র্যান্ডের শোরোম আছে।
====================
আগরতলায় Addidas, Skechers, UCB, Woodland, Fastrack সহ প্রায় সব নামকরা ব্র্যান্ডের শোরোম আছে।
কাপড় চোপড় কেনার জন্য
১. কলকাতা বাজার
২. বিগ বাজার
৩. মেট্রো শপিং কমপ্লেক্স সহ আরো অনেক দোকান আছে।
১. কলকাতা বাজার
২. বিগ বাজার
৩. মেট্রো শপিং কমপ্লেক্স সহ আরো অনেক দোকান আছে।
কসমেটিকস এবং অলংকার কেনার জন্য ওভারসিজ মার্কেট। (গায়ের দাম থেকে ৫ থেকে ৭% কম রাখবে।)
চকলেট, বিস্কিট, বাদাম পাইকারি দরে কেনার জন্য গুলবাজার(নেতাজি চৌমুনি)।
স্টিল, তামা কাসার তৈজসপত্রের জন্য কাসারি পট্টি।
মোবাইল ও ইলেকট্রনিকস কেনার জন্য মেলার মাঠ।
🙏 ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে সেগুলো নিজের কাছে সংরক্ষণ করবেন। পরে নির্ধারিত যায়গায় সেগুলো ফেলে দিবেন। প্রকৃতিকে ভালোবাসুন। প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসুন।
Source: Ahmed Faruk<Travelers of Bangladesh (ToB)
Tags: