ইলিশের বাড়ী চাঁদপুরে ভ্রমন বৃত্তান্ত
ঢাকা লঞ্চটার্মিনালের লালকুঠি লঞ্চঘাট থেকে চাঁদপুরের লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়। সকাল ৬:০০ থেকে সন্ধ্যা ৭:৪৫ পর্যন্ত ১৮ টি লঞ্চ এবং রাত ১০ :০০ টা থেকে রাত ১২:৩০ পর্যন্ত ৬ টি লঞ্চ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
একইভাবে,
চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে সকাল ৬:০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭:০০ টা পর্যন্ত ১৮ টি লঞ্চ এবং রাত ১০:০০ টা থেকে রাত ১:০০ টা পর্যন্ত ৬ টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ঢাকা থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাট পৌছাতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। লঞ্চ সবগুলোই ভাল।তবে, ‘ইমাম হাসান’ পরিবারের লঞ্চগুলোর স্টাফদের ব্যবহার এবং আরও অনেক কারনে দুর্নাম রয়েছে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে কালীবাড়ি মোড় – দূরত্ব ১ কিলোমিটার। ভাড়া ১০ টাকা জনপ্রতি। সময় লাগবে ১০ মিনিট। কালীবাড়ি মোড় থেকে ১ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন বিখ্যাত ওয়ান মিনিট আইসক্রিম ও মিষ্টির দোকান। ওয়ান মিনিট আইসক্রিম প্রতিকাপ -৪০ টাকা। প্রতিটি মিষ্টি -২০ টাকা। ছানা পাওয়া যায় তবে,এখানকার ছানা মজা না।
কালীবাড়ি মোড় থেকে বড় স্টেশন মাছের আরদ – দূরত্ব ১ কিলোমিটার। ভাড়া-১০ টাকা জনপ্রতি। সময় লাগবে ১০ মিনিট। মাছের আরদ থেকে ইলিশ মাছ কিনতে পাড়েন।ঢাকায় নিয়ে আসতে চাইলে বরফ দিয়ে ইলিশ প্যাকেট করার ব্যাবস্থা রয়েছে এই বাজারে।দীর্ঘদিন ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর যখন ইলিশ মাছ ধরা চালু হয় ঐ সময়ে গেলে কম দামে ইলিশ কিনতে পাড়বেন।
ঢাকা থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাট পৌছাতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। মাছের আরদের পাশেই
অনেকগুলো খাবার হোটেল আছে।হোটেলে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ মাছ মসলা মাখিয়ে সাজানো থাকে। বড় সাইজের প্রতিপিছ- ১৫০ টাকা। মাঝারি সাইজ- ১২০ টাকা। ছোট সাইজ- ১০০ টাকা। এছাড়াও আপনি যদি মাছের আরদ থেকে একটি মাছ কিনে খাবার হোটেলে দেন তাহলে তারা সেটা কেটে রান্না করে দিবে।এক্ষেত্রে তাদেরকে ১২০ টাকা দিতে হবে।
মাছের আরদ থেকে পাঁচ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন চাঁদপুরের অন্যতম আকর্ষণ – চাঁদপুর মোলহেড/চাঁদপুর বড় স্টেশন পার্ক।পদ্মা,মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী এখানে এসে মিলিত হয়েছে। বিকেলে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন এই মোহনায়।এই মোহনা থেকে ১ কিলোমিটার, ১.৫ কিলোমিটার এবং ২ কিলোমিটার দূরে বেশ কয়েকটি চড় আছে।আপিনারা চাইলে নৌকা,স্পীড বোর্ড অথবা ট্রলার ভাড়া করে এই চর গুলো থেকে ঘুরে আসতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যে,সন্ধ্যা ৭:০০ টা থেকে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত কোনও লঞ্চ চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে না।রাত ১০ টার মধ্যে ঢাকা আসতে চাইলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার আগে চাঁদপুর বড় স্টেশন পার্ক ত্যাগ করতে হবে।
বড় স্টেশন পার্ক থেকে চাঁদপুর – দূরত্ব ১ কিলোমিটার। সময় লাগবে ১০ মিনিট। ভাড়া-৫ টাকা জনপ্রতি।
লঞ্চের ভাড়া- ডেক-১০০ টাকা জনপ্রতি(ছাদ থেকে নিচতলা পর্যন্ত ঘুরতে হবে।) নিচের চেয়ার-১৫০ টাকা জনপ্রতি। নন এসি সিংগেল কেবিন-৪০০/৪৫০ টাকা। এসি সিংগেল কেবিন-৫০০/৫৫০ টাকা। নন এসি ডাবল কেবিন- ৮০০/৮৫০ টাকা। এসি ডাবল কেবিন-৯০০/১০০০ টাকা। নদীর পাশের কেবিন গুলো সাধারণত নন এসি হয়ে থাকে। ৪-৫ জন যদি একটা সিংগেল কেবিন ভাড়া নিতে চান সেক্ষেত্রে একজনের সিংগেল কেবিনের ভাড়া এবং বাকিদের ডেকের ভাড়া দিতে হবে। যেমন – (৪ জনের ক্ষেত্রে) ৪০০+১০০+১০০+১০০ =৭০০ টাকা।
আর,আপনি যদি ২ দিনের জন্য চাঁদপুর যেতে চান তাহলে তো এক্ষেত্রে আপনাকে হোটেলে থাকতে হবে।চাঁদপুরে অনেকগুলো হোটেল রয়েছে।এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য – Hotel Grand Hilsha. Gazi Hotel. Hotel Prince. আপনারা যদি চাঁদপুর ২ দিন থাকেন তাহলে ২য় দিন লোহাগড় মঠ এবং রূপসা জমিদার বাড়ী থেকে ঘুরে আসবেন।
আর,
চট্টগ্রাম থেকে যদি কেউ চাঁদপুর ঘুরতে যেতে চান, তাদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। চাঁদপুর থেকে, সকাল ৫ টায় মেঘনা এক্সপ্রেস এবং দুপুর ২ টায় সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
একইভাবে,
চট্টগ্রাম থেকে বিকেল ৫:১৫ তে মেঘনা এক্সপ্রেস। এবং সকাল ৭:৩০ এ সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।