ঈদের ছুটিতে যারা রাঙ্গামাটি যাচ্ছেন তাদের জন্য কয়েকটি টিপস।

১। খাবার সংক্রান্তঃ খাবারের পূর্বেই প্রাইস জেনে নিবেন। দেশী মুরগীর অর্ডার দিলে নিশ্চিত থাকুন কক মুরগী গুছিয়ে দিবে। কাপ্তাই লেকের কাচকি ভূনা বা ফ্রাই কিন্তু মিস করবেন না।  রাঙ্গামাটির অনেক হোটেলেই আতপ চালের ভাত রান্না হয়। চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য অঞ্চলের লোকদের জন্য তা ভাল নাও লাগতে পারে। তাই আগেই জেনে নিবেন চাল কি সিদ্ধ নাকি আতপ।  ভাল মানের খাবার হোটেল সমুহঃ বনরূপা এলাকা- কুটুমবাড়ি, হোটেল মক্কা; কাঠালতলী এলাকা- হোটেল হিল জামান। এসব হোটেলে সেদ্ধ চালের ভাত রান্না হয় তাই জিজ্ঞেস করার দরকার নেই।এক বেলা খাবারের মূল্য ১২০ থেকে ২০০ টাকা এর মতো পড়বে। পাহাড়ি ধাচের খাবার খেতে চাইলে শহরে-  সাবারাং রেস্তোরা ও হোটেল ক্যাবাং।  অনেকেই ক্যাবাং, বেম্বু চিকেন ইত্যাদি পাহাড়ি ধাচের খাবারের মুল্য জানতে চান।  কাপ্তাই লেকে দ্বীপ রেস্তোরা জুমঘর রেস্তরার এ ধরনের খাবারের মূল্য তালিকা দিয়ে দিচ্ছি। পেদাটিংটিং, চাংপাং রেস্তোরাতেও খাবারের মুল্য প্রাই একই হবে।এসব রেস্তোরায় খাবারের মূল্য একটু বেশি তবে খাবারের পরিবেশটা অসাধারন।

ভাত এক প্লেট ২জন অন্যান্য খাবার এক প্লেট চারজন খেতে পারবেন।প্লেট প্রতি মূল্যঃ

ভাত- ৬০ টাকা, পাজন-১৫০ টাকা, বেম্বো চিকেন-৩০০ টাকা, চাপিলা ফ্রাই/ভর্তা/কাচকি ফ্রাই/ভর্তা-২০০ টাকা, মাছের কেবাং-৩০০ টাকা, ডিম কেবাং-১৫০ টাকা, কলা মোচার ভর্তা-১৫০ টাকা, মাশরুম-৩০০ টাকা,  ডাল-৯০ টাকা।

২। বাস সংক্রান্তঃ ঢাকার ফকিরাপুল, আরামবাগ, সায়দাবাদে রাঙ্গামাটির বাস কাউন্টারগুলো অবস্থিত। আর চট্টগ্রামে দয়ামপাড়া হতে বিআরটিসি এবং অক্সেজেন হতে অন্যান্য বাস ছাড়ে। ঢাকা হতে ননএসি বাস ভাড়া ৬২০ টাকা। এসি ২ টি বাস ছাড়ে। শ্যামলি ৯০০ ভাড়া টাকা, এবং বিআরটিসি ৭০০ টাকা।চট্টগ্রাম হতে ভাড়া ১২০ টাকা। চট্টগ্রাম হতে পাহাড়িকা বা বিআরটিসিতে রাঙ্গামাটি আসবেন অন্য বাসগুলোর সার্ভিস মানসম্মত নয়।সমস্যা হলো ফিরতি টিকেট নিয়ে। ঈদের পর রাঙ্গামাটি হতে ঢাকার টিকেট পাওয়া কঠিন হবে। পরিচিত কেউ থাকলে আগেই টিকেট কেটে ফেলবেন।

৩। কাপ্তাই লেকে নৌভ্রমনঃ রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট, পর্যটন(ঝুলন্ত ব্রিজ), কাঠালতলীর ফিশারী এলাকা, তবলছড়ি নৌঘাট হতে লেকে ঘুরার জন্য বোট পাবেন।বোটে ঝুলন্ত ব্রিজ, শুভলং ঝর্ণা, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার ঘুরে আসবেন। বোট ভাড়া নৌকার আকারের ভেদে ১৫০০ হতে ২৫০০ টাকা। ঈদ ছাড়া অন্য সময় ১২০০ টাকায়ও বোট পাওয়া যায়। এসব বোটে ইঞ্জিনের প্রচন্ড শব্দ মাথা খারাপ করে দেয়। বোটের ছাদে বসার ভাল ব্যবস্থা থাকলে সেখানেই বসুন, শব্দ কম হবে। তাছাড়া পর্যটনের ফাইবার বোটগুলোতে শব্দ তুলনামুলক কম তবে ভাড়াও একটু বেশি।বোটে অবশ্যই পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট নিয়ে উঠবেন এবং লাইফ জ্যাকেট হাতের কাছে রাখবেন। ঝড়-বৃষ্টিতে লেকের কোথাও কোথাও পানি প্রচন্ড উত্তাল হয়ে উঠে এবং অনেক সময়েই নৌকা ডুবি ঘটে। ঝড় হলে নৌকা ভ্রমন না করাই ভাল।

৪। শুভলং ঝর্নাঃ শুভলং ঝর্ণা সারা দেশে সুপরিচিত। বোটে গেলে শুভলং ঝর্ণার একটু আগে বামে একটি ঝর্ণা পড়বে। ঝর্ণাটি সুপরিচিত নয় এবং বোট চলাচলের পথে দেখা যায়না কিন্তূ মূল শুভলং ঝর্ণা অপেক্ষা এই ঝর্ণাটিতেই পানি বেশি থাকে।বোটম্যানকে আগেই বলে রাখবেন এই ঝর্ণাটিতে আপনাকে নিয়ে যেতে। শুভলং বাজার বা আর্মি ক্যাম্পে যেতে চাইলে বোট কন্তাক্টের সময়ই বলে রাখবেন। না হলে পরে ভাড়া নিয়ে ঝামেলা হবে। প্রথমে বললে একই ভাড়ায় হয়ে যাবে।

৫। কাপ্তাই উপজেলায় ভ্রমনঃ রাঙ্গামাটি গেলে একদিন সময় কাপ্তাই উপজেলার জন্য বরাদ্দ রাখুন। রাঙ্গামাতি-কাপ্তাই নতুন রাস্তা, ঝুম রেস্তোরা, কার্ণফুলীতে নৌবিহার, চিৎমরমে তাওয়ার সবই অসাধারন। রাঙ্গামাটি হতে বাসে কম খরচে কাপ্তাই এর বড়ইছড়ি যেতে পারেন। কিন্তু সিএনজি বা জীপ/মাইক্র রিজার্ভ করলে রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই নতুন রাস্তা দিয়ে ভ্রমন করতে পারবেন। রাস্তাটি অসাধারন, একপাশে লেক অন্য পাশে পাহাড়। সিএনজি আপ-ডাউন সহ সারাদিনের জন্য রিজার্ভ নিলে ১৫০০ টাকা ভাড়া পড়বে। জীপ/মাইক্র এসি ৩৫০০-৪০০০ টাকা, নন এসি ৩০০০-৩৫০০ টাকা।

Share:

Leave a Comment