উমেংগট নদী- মেঘালয়ের অদেখা জান্নাত!

যেখানে আকাশ ধুয়ে সাজিয়েছে নিজের যতো রঙ, যেখানে প্রকৃতি মিশেছে হয়ে সবুজ তরঙ্গ…

সিলেট শহর থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টার পথ, সেখানে তামাবিল বর্ডার পার হয়ে জাষ্ট ১৫ মিনিটের দূরত্বেই বাস করছে এই সৌন্দর্যের খনি।

ডাউকি, মেঘালয়ের রাজ্যের খাসিয়াদের ছোট এক রাজত্ব ,যেখানে খুব বেশী মানুষের আনাগোনা নেই। নেই ব্যস্ত নাগরিক জীবনের পদচারণ।

আছে শুধু প্রকৃতির ঢেলে দেয়া সৌন্দর্যের এক ফালি সবুজ প্রতিকৃতি যেখানে নিজেকে হারায়ে যেন নিজেকেই পাওয়া যায় নতুন রুপে…।

সারাদিনের জন্য চলে যেতে পারেন ছোট এক জীপ ভাড়া নিয়ে কিংবা নিজের প্রাইভেট কার থাকলে কিংবা সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত যাওয়া যে কোন পরিবহনে চড়ে, ফ্যামিলি কিংবা বন্ধুদের সাথে। এর জন্যে থাকতে হবে পাসপোর্ট, ট্রাভেল ট্যাক্স আর ডাউকির করা ভিসা।

তামাবিল পাড় হয়ে ওপারেই পেয়ে যাবেন অনেক ট্যাক্সি যাদেরকে বললে আপনাকে নিয়ে যাবে কাঙ্ক্ষিত সেই স্বচ্ছ নদীর পারে।

এটা মূলত বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার মধ্যকার মাল আনা নেয়ার যে ব্রীজ রয়েছে তা পার হয়ে যেতে হয়। সেখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় নৌকা যারা আপনাকে ৫০০ রুপীর বিনিময়ে ঘুরে দেখাবে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত।

এখানে একটা ছোট ইনফরমেশন দিয়ে রাখা ভালো, চেষ্টা করবেন ব্রীজ পার হয়ে ওই পাড়ে যেয়ে নৌকায় উঠতে তাহলে বেশীক্ষন সময় পাবেন ঘুরে দেখার নদীটা ,আর আসল সৌন্দর্য ও মুলত ওই পাড়েই। ব্রীজের এপাড় থেকে ডাউকি ভিলেজ শুরু হলেও, বাংলাদেশের একটা সীমান্ত (জাফলং) পড়ে গেছে ওই নদীটার একটা অংশে তাই ইচ্ছা থাকলেও বেশী দূর যেতে পারবেন না নৌকা নিয়ে।

এই অংশ টাতে পাবেন প্রচুর বাংলাদেশী লোক যারা অনেকেই বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে রয়ে গেছে এখানে তাই চাইলে বাংলাদেশি টাকাও নিতে পারেন সাথে, এখানে বাংলা টাকাও প্রচুর চলে। প্রতিটি নৌকায় প্রায় ৪ থেকে ৫ জন করে চড়তে পারবেন, সামনেই রয়েছে মূল ঝরনার উৎসস্থল।

নদীর পাড় ঘেষেই রয়েছে ছোট বড় অনেক পাথর, চাইলেই নেমে হেটে যেতে পারেন সামনে , করতে পারেন ছোট খাটো বনভোজন কিংবা রাত্রিকালে ফায়ার ক্যাম্প।

এখানকার বেশীরভাগ মানুষের পেশা মাছ ধরা, ইভেন বাংলাদেশীরাও মাছ ধরতে এখানেই আসে, যদিও এখন আর তেমন পারমিশন পাওয়া যায়না।

অদ্ভূত লাগে দেখতে পুরা নদীটা, যেখানে নিচে পরে থাকা অসংখ্য নূড়ি পাথর আর ছোট বড় নাম না জানা মাছ। ইচ্ছা করলেই, পা ভিজিয়ে নিতে পারেন, পারেন তৃপ্তি ভরে মুখে জলচ্ছটা দিতে। দিনের বেলাতেই এর সৌন্দর্যে জ্ঞান হারাতে হয় , পুর্নিমার রাতে না জানি কেমন লাগে একে দেখতে, ভাবতেও হারিয়ে যাচ্ছি ভাবনার অতল গহবরে।

এখানে একতা অদ্ভূত ব্যাপার রয়েছে, সবাই যদিও বলে পানি দেখতে নীল, আমরা পেয়েছি পুরাই সবুজ আবার বর্ষা ঋতুতে নাকি এটা লাল বর্ণ ধারন করে।

এখানে একটা কথা বলে নেয়া ভালো, শীতকাল বা নভেম্ভর থেকে ডিসেম্বর ই কিন্তু উপযুক্ত সময় এই নদী দেখতে যাবার কারন অন্য সময় এই নদীতে পানি এতো বেশী থাকে যে নিচের স্বচ্ছ রুপ টা দেখতে পাওয়া তখন ভাগ্যের ব্যাপার।

আলহামদুলিল্লাহ, চোখের রিযিক হয়ে গেছে এই শান্ত স্নিগ্ধ অদ্ভুত সুন্দর নদী দেখে। ছবিতে বন্দি করা যদিও সম্ভব না এই নদীর প্রকৃত রুপ তারপরেও ক্ষুদ্র চেষ্টা!

Post Copied From:Farhana Asha‎>Travelers of Bangladesh (ToB

Share:

Leave a Comment