কাশ্মীর এর বুকে এক খন্ড বাংলাদেশ
কাশ্মীর, প্রকৃতির বিচিত্র সাজে সজ্জিত একটি স্থান। ভূ স্বর্গ হিসেবে খ্যাত কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতোটাই বিচিত্র এবং রোমাঞ্চর যে এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভ্রমণ করে। মজার বিষয় হচ্ছে এই কাশ্মীরের বুকেই একটি গ্রাম রয়েছে যার নাম আমাদের দেশের নামে, বাংলাদেশ। কাশ্মীরের বান্ডিপুরা জেলার আলুসা তহসীলে রয়েছে বাংলাদেশ নামের এই গ্রামটি।
উলার হ্রদের তীরে অবস্থিত গ্রামটি মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্নেহ ছায়ায় পরিপূর্ণ। চতুর্দিকে পানি দিয়ে বেষ্টিত মনোরম এই গ্রামটির পেছনে সুউচ্চ পর্বতমালা গ্রামটিকে ছবির মতো স্বপ্নিল করে তুলেছে। ভাসমান ছোট এই গ্রামটি কাশ্মীরের সৌন্দর্যকে এবং প্রকৃতির সরলতাকেই ধারণ করে আছে মুগ্ধকর ভাবে। এখানকার মানুষগুলোও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করে থাকে। প্রধানত মাছ শিকার করেই এরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
গ্রামটির নাম বাংলাদেশ হওয়ার পেছনে ও গল্প রয়েছে। বাংলাদেশের জন্মের সাথে গ্রামটিরও জন্মের অদ্ভুত এক সাদৃশ্য রয়েছে। ৭১ সালে বাংলাদেশ যখন লড়ছে পাকিস্তান আর্মির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের জন্য তখন ভারতের অন্যপ্রান্তে থাকা এই গ্রামটিতে আগুন লেগে ৫/৬ টি ঘর পুড়ে যায়। তখন ঐ গ্রামটির নাম ছিলো জুরিমন। সহায় সম্বলহীন এই নিরীহ মানুষগুলো তখন জুরিমন থেকে কিছুটা দূরে বর্তমান বাংলাদেশ গ্রামে এসে বসতভিটা তুলে এবং বসবাস করতে থাকে। ততদিনে বাংলাদেশ নামক নতুন একটি দেশের জন্ম হয়। সেই বাংলাদেশের জন্ম এবং নিজেদের নতুন আবাসস্থলকে নতুন উত্থান হিসেবেই তারা বিবেচনা করে। নতুন এই স্থানটিকে নামকরণ করতে তারা বেছে নেয় বাংলাদেশ নামটিই। সেই থেকে গ্রামটি বাংলাদেশ নামে পরিচিতি পেলেও ২০১০ সালে এটি কাগজে কলমে বাংলাদেশ নামে মর্যাদা পায়। বর্তমানে এখানে পঞ্চাশের অধিক পরিবারে ৩০০ এর মতো লোক বসবাস করে।