“ঝুলন্ত সেতু” রাঙ্গামাটি ভ্রমনে কিছু তথ্য
♦ প্রথমেই বলেনি ঝুলন্ত সেতু দেখতে গেলে অবশ্যই হাতে সময় নিয়ে যাবেন।
♦ এখানকার সুন্দয্য এতটাই বেশি যে আপনে আসতেই চাইবেন নাহ।
♦ রাঙ্গামাটি শহরের প্রধান আকর্ষন হলো ঝুলন্ত সেতু।সাধারণত রাঙামাটি গিয়ে এই ঝুলন্ত সেতুটি না দেখে কেউ ফেরত আসেন না।
♦ এটা এখানকার শেষ প্রান্তে যা যেতে আসতে কিছুটা সময় লাগে।
♦ রাঙামাটি শহরের শেষপ্রান্তে কাপ্তাই লেকের একাংশে ৩৩৫ ফুট লম্বা এই ব্রিজটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্পট।
♦ এ সেতুকে বলা হয় ‘Symbol of Rangamati’। নয়নাভিরাম বহুরঙা এই ঝুলন্ত সেতুটি দুইটি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে হৃদ্দিক সম্পর্ক।
♦ সেতুটি পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি আপনাকে এনে দেবে ভিন্ন দ্যোতনা।
♦ এখানে দাঁড়িয়েই কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন।
♦ কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য।
♦ ওপারেই রয়েছে আদিবাসী গ্রাম।
♦ ইচ্ছে হলেই দেখতে পাবেন আদিবাসী জীবনযাপনের ক্ষয়িষ্ণু চালচিত্র।
♦ এটি দেখতে হলে পর্যটন কর্পোরেশনকে দিতে হবে পাঁচ টাকা।
♦ এছাড়াও এখানে আছে সময় কাটানোর অনেক উপকরণ।
♦ আছে অডিটোরিয়াম, পার্ক, পিকনিক স্পট, স্পিড বোট ও দেশীয় নৌ-যান।
কখন যাবেন ও কি দেখবেন=
ঝুলন্ত ব্রিজ (Hanging Bridge) দেখতে বছরের যে কোন সময়ই যেতে পারেন।
♦ শীত মৌসুম হলো পাহাড় আর অরণ্যের শহর রাঙামাটিতে বেড়ানোর শ্রেষ্ঠ সময়।
♦ বর্ষাকালে অনেকটা সময় ব্রিজটি পানির নীচে ডুবে থাকে।
♦ ব্রিজ দেখতে আপনে বছরের যে কোন সময় আসত পারেন।
♦ তবে বর্ষায় অতি বৃষ্টি হলে অনেক সময় ঝুলন্ত ব্রিজের উপর পানি উঠে যায়।
♦ সেইসময় ঝুলন্ত ব্রিজের উপরে যাওয়া না।
♦ তাই বর্ষায় গেলে আগেই খোঁজ নিয়ে যাবেন।সাধারণত শীতের আগে আগে ও শীতকালেই পর্যটকগন ঝুলন্ত সেতু ভ্রমণে যান।
♦ রাঙ্গামাটি গেলে শুধু ঝুলন্ত ব্রিজ নয় আশেপাশে আছে আরও দর্শনীয় স্থান যা আপনি একইদিনে একসাথে ঘুরে দেখতে পারবেন।
♦ সারাদিনের জন্যে ট্রলার রিজার্ভ করে নিলে ঝুলন্ত ব্রিজ, শুভলং ঝর্ণা, রাজবন বিহার, লেক ভ্রমণসহ আরও কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখায়।
♦ কি দেখবেন সেইভাবে পরিকল্পনা করে ট্রলার/বোট রিজার্ভ করে নিন।
কিভাবে যাবেন=
♦ ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি গামি অনেক বাস আছে।
♦ আপনে আপনার পছন্দ মত বাসে আসতে পারেন।
♦ ঢাকা হতে ঢাকার ফকিরাপুল মোড় ও সায়দাবাদে রাঙ্গামাটিগামী অসংখ্য বাস কাউন্টার রয়েছে।
♦ এই বাসগুলো সাধারণত সকাল ৮ টা থেকে ৯ টা এবং রাত ৮ টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১১ টার মধ্যে ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে ছাড়ে।
♦ ঢাকা টু রাঙ্গামাটি শ্যামলীর এসি বাসের প্রতি সীট ভাড়া ৯০০ টাকা, বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া ৭০০ টাকা।
♦ এছাড়া সকল নন-এসি বাসের ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।
♦ চট্টগ্রাম হতে চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড় থেকে রাঙ্গামাটিগামী বিভিন্ন পরিবহণের লোকাল ও গেইটলক/ডাইরেক্ট বাস পাওয়া যায়।
♦ ভাড়া একটু বেশি হলেও গেইটলক বা ডাইরেক্ট বাসে উঠা উচিত।
♦ চট্টগ্রাম হতে রাঙ্গামাটি ডাইরেক্ট বাস ১৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
♦ চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকেও রাঙ্গামাটি যাবার বাস পাবেন।
♦ রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়িতে নেমে অটোরিক্সা বা সিএনজিতে করে সরাসরি ঝুলন্ত ব্রিজে যাওয়া যায়।
♦ তবলছড়ি থেকে ঝুলন্ত ব্রিজে সিএনজি ভাড়া লাগে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
♦ আর রাঙ্গামাটির বনরূপা থেকে সিএনজি ভাড়া লাগে ১২০ টাকা।
রাঙ্গামাটি থাকার ব্যবস্থা=
♦ এখানে উন্নত মানের হোটেল পাবেন নাহ।
♦ তবে উন্নতমানের না হলেও হোটেল যেগুলো পাবেন তা যেমন হোক ব্যবহার তাদের অমাইক এক কথায়।
♦ রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের গেষ্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল রয়েছে।
♦ রাঙ্গামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি হোটেল ঠিক করার চেষ্টা করুন।
♦ তাহলে হোটেল থেকে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ ও শান্ত বাতাস উপভোগ করতে পারবেন।
♦ এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ যোগযোগ করতে পারেন।
♦ বোডিংগুলোতে থাকতে খরচ কম হলেও এগুলোর অবস্থা খুব একটা ভাল নয়।
♦ উল্লেখযোগ্য কিছু আবাসিক হোটেলের নামঃ
♣ হোটেল গ্রিন ক্যাসেল : রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত এ হোটেলে।
♣ পর্যটন মোটেল : রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশে অবস্থিত এ হোটেলটি।
♣ রংধনু গেস্ট হাউজ
♣ হোটেল সুফিয়া : ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী।
খাওয়া দাওয়া=
♦ রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের অসংখ্য খাবার রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
♦ ঝুলন্ত ব্রিজের ভিতরে একেবারে শেষ প্রান্তে দুইটা খাবার দোকান আছে।
♦ তাদের কাছে ভিন্ন রকম কিছু খাবার পাবেন, যা আপনে আগে কখনোই খাওয়া হয় নাই।
♦ অবশ্যই ট্রাই করবেন খাবার।
♦ সাধ্যের মধ্যে যেকোন রেস্টুরেন্টে আপনার প্রতিবেলার খাবার সেরে ফেলতে পারেন।
♦ রেস্টুরেন্টে পাবেন স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী সব খাবার।
♦ ভিন্ন স্বাদের এইসব খাবারের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
রাঙ্গামাটির আশেপাশে দর্শনীয় স্থান=
এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলায় আরো যেসমস্ত আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থান রয়েছেঃ
♠ ঝর্ণা, ♠ কাপ্তাই লেক, ♠ শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্ক,♠ উপজাতীয় জাদুঘর, ♠ ঝুম রেস্তোরা,♠ টুকটুক ইকো ভিলেজ,♠ চিৎমরম গ্রাম ও টাওয়ার,♠ যমচুক, রাইক্ষ্যং পুকুর, ♠ নির্বাণপুর বন ভাবনা কেন্দ্র,♠ রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজবাড়ি, ♠ পেদা টিং টিং, উপজাতীয় টেক্সটাইল মার্কেট,♠ নৌ-বাহিনীর পিকনিক স্পট, ♠ রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু, ♠ ফুরমোন পাহাড়,♠ সাজেক ভ্যালি,♠ আর্যপুর ধর্মোজ্জ্বল বনবিহার, ♠ ডলুছড়ি জেতবন বিহার, ♠ বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, ♠ কাট্টলী বিল ও ন-কাবা ছড়া ঝর্না ইত্যাদি।
সতর্কতা=
♦ নিজের মালামাল নিজের হেফাজতে অবশ্যই রাখবেন।
♦ অফসিজনে ও ছুটির দিন ব্যাতিত গেলে খরচ কম হবে।
♦ ট্রলার/বোট রিজার্ভ করার সময় কি দেখবেন কোথায় যাবেন ভালো মত বলে নিন।
♦ রিজার্ভ করার সময় ঠিকমত দরদাম করে নিন।
♦ লেকের কাছাকাছি কোন হোটেল ঠিক করার চেষ্টা করুন।
♦ কোথাও কোথাও লেকের পানির গভীরতা অনেক, নামতে চাইলে মাঝিকে জিজ্ঞেস করে নিন।
♦ যার তার কাছে কোন রাস্তা খোজ নেবেন নাহ।ট্রুরিষ্ট পুলিশের কাছে খোজ নিবেন।
♦ অহেতুক কোন রিক্স নিবেন না।
♦ একদিনেই কমন স্পট গুলো ঘুরে বেড়ানো যায়।
♦পরিবেশে ও জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় দয়া করে এমন কিছু করবেন না।
♦ভ্রমন স্থান পরিষ্কার রাখবেন।
ধন্যবাদ
Source: শুভ রণভ্রমন বিলাসী মন / Travel Lover