তেঁতুলিয়ায় দেখে আসুন হিমালয় আর এভারেস্ট

দেশের ভ্রমণ পিপাসুদের হিমালয় দেখতে আর নেপাল বা তিব্বত যেতে হবে না। বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকেই উপভোগ করা যাবে হিমালয়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য। শুধু হিমালয় নয়, বাড়তি পাওনা হিসেবে ভারতের কাঞ্চনজংঘা পাহাড় দেখা যাবে একই সফরে। এ দৃশ্য দেখার জন্য দূরবীণ বা বাইনোকুলার সাথে করে নিয়ে আসতে হবে না। দৃষ্টিশক্তি ভাল থাকলে খালি চোখে দেখতে পারেন প্রকৃতির এসব অপরূপ দৃশ্য। দুর্লভ এ দৃশ্য স্মৃতিপটে ধরে রাখতে সাথে নিতে পারেন ডিজিটাল ষ্টিল কিংবা মুভি ক্যামেরা। আর এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার সময় এখনই। তাই দেরি না করে জলদি তেঁতুলিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারেন। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পঞ্চগড়ে আসতে শুরু করেছেন দেশি পর্যটকরা।

শীত মৌসূমে মেঘমুক্ত এবং কুয়াশাবিহীন দিনে পঞ্চগড় জেলার উত্তর দিকে তাকালে চোখে পড়ে হিমালয় গিরিমালার নয়নাভিরাম দৃশ্য। তবে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের পাশ ঘেঁষে প্রবাহিত মহানন্দা নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালে দেখা যায় সূর্যের বর্ণিল আলোকচ্ছ্বটায় উদ্ভাসিত এভারেস্ট শৃঙ্গ। মনোরম আবহে মনে জাগে অপার্থিব সৌন্দর্যের ঘোর। সেই অভূতপূর্ব দৃশ্যে অন্যরকম ভালোলাগার দ্যুতিতে মন ভরে উঠে।

এভারেস্ট দেখতে কার না মন চায়। কিন্তু তা দেখতে আপনাকে যেতে হবে নেপাল কিংবা তিব্বতে। কিন্তু ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব মাত্র ৪৫৭ কিলোমিটার। আর পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। তেঁতুলিয়া থেকে বাংলাবান্ধা ১৭ কিলোমিটার। পঞ্চগড় থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটার। আর বাংলাবান্ধা থেকে টেকনাফের দূরত্ব ১০২১ কিলোমিটার। দেশের যে কোন স্থান থেকে সড়ক, রেল ও বিমানে করে পঞ্চগড় যাওয়া যায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সরাসরি এখানে আসতে পারেন। ঢাকা থেকে ভালমানের নন-এসি বাস পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়া পর্যন্ত দিবা-রাত্রি চলাচল করে। ঢাকা থেকে রেলপথেও পঞ্চগড় আসা যায়। ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে বিমান চলাচল করে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স নিয়মিতভাবে ঢাকা-সৈয়দপুর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করছে।

তেঁতুলিয়া বেড়াতে যেতে হলে আপনাকে পঞ্চগড় শহরে থাকার প্রস্তুতি নিয়েই যেতে হবে। কারণ তেঁতুলিয়ায় থাকার মত তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই। তবে পূর্বানুমতি নিয়ে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে রাত্রিযাপন করতে পারেন। এজন্য আগে ভাগেই আপনাকে সিট বুক করতে হবে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের একটি বাংলো রয়েছে। এখানে থাকতেও আগাম বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। তবে শীত মৌসূমে এগুলোতে সিট পাওয়া দুষ্কর। রাতযাপনের জন্য পঞ্চগড় জেলা শহরে বেশকিছু ভাল আবাসিক হোটেল ও রেস্ট হাউস রয়েছে। এসি, নন-এসি এ দু’ধরনের রুম পাওয়া যায়। ভাড়াও তুলনামূলকভাবে কম।

Share:

Leave a Comment