নেত্রকোনা ঘুরার জায়গায়াগুলি ও যেভাবে যাবেন

এখানে ঘুরবার জায়গাগুলো নিচে দেয়া হলো, যার প্রথম চারটিকে বিরিশিরি হিসেবে মানুষ বলে আসে:

সোমেশ্বরী নদী
সোমেশ্বরী চর
চিনামাটির পাহাড়
নীল-সবুজ জলের লেক
বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্প
বিজয়পুর জিরো পয়েন্ট
কমলা বাগান
উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি
গারো পল্লী
গারো পাহাড়
রানীখং চার্চ

প্রথমে যাত্রা শুরু মহাখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে “মা মণি পরিবহন” এ, রাত ১১.৪০ মিনিটে। বিরিশিরি গামী অনেক বাস পাওয়া গেলেও এই বাসেই যাত্রা শুরু করলাম কারণ বাসটি আমাদের গেস্ট হাউজের সামনে নামিয়ে দেয়। টিকিটের মূল্য ৩৫০/- টাকা। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ বিশেষ করে ঝারিয়া এর পর থেকে।

ভোর সকালে ৬টা বাজে নেমে গেলাম ঠিক গেস্ট হাউজের সামনে। অন্যান্য গেস্ট হাউজে সিট ফাঁকা ছিল না বলে “স্বর্ণা গেস্ট হাউজ” এ উঠলাম। ৪ জন একটা রুমেই হয়ে যায়, দুটো করে সিংগেল বেড থাকে। খরচ ৭০০/- টাকা। গেস্ট হাউজেই খাবারের ব্যাবস্থা আছে। গেস্ট হাউজ এর ইনফরমেশন শেষে দিয়ে দিচ্ছি।

এরপর ব্যাগ রেখে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বের হয়ে পড়লাম। পায়ে হেঁটে সোমেশ্বরী নদীর ঘাট পর্যন্ত গেলাম। সাদা চকচক পরিষ্কার বালুর ঘাট। সেখান থেকে জনপ্রতি ৫/- টাকা করে নদী পার।

নদী পার হতেই টমটম-বাইক দাঁড়িয়ে থাকবে আপনার জন্যে। আমরা ৪ জন ছিলাম বলে টমটম রিজার্ভ করে নিলাম, সন্ধ্যে পর্যন্ত। নদীর ওপাড়ের প্রত্যেকটা স্পট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবে আপনাকে। সময় নিয়ে কোনো তাগিদ দিবে না। খরচ ৫৫০/- টাকা।

এরপর শুরুতেই চলে এলাম সাদামাটির পাহাড়ে। মূলত এখান থেকেই শুরু। লিস্টের প্রথম চারটি লোকেশন সিরিয়ালি এখান থেকে সাজানো। এখানে টমটম আপনাকে নামিয়ে অপেক্ষা করবে আপনার জন্য, যতক্ষণ পর্যন্ত এ চারটি জায়গা ঘুরে আবার না আসেন। সেখান থেকে একটা বাচ্চা বাহাদুর গাইড নিয়ে শুরু করলাম। পাহাড় হয়ে পাহাড়ে ঘুরে ঘুরে জায়গাগুলো উপভোগ করা। নয়নাভিরাম প্রত্যেকটা দৃশ্য! সেখানে দু-একটা দোকান আছে। চা-সিগারেট-কসমেটিক্স-ডাব পাওয়া যায়। কসমেটিক্স গুলো বর্ডার বাজার থেকে আনা। গারোরা সকালে সেখানে সবজি বিক্রি করতে যায় আর আসার সময় এই সামগ্রীগুলো নিয়ে এসে এখানে বিক্রি করে। অনেক কম দামে।

এখানটা ঘুরে আবার টমটম করে জিরো পয়েন্ট-বিজিবি ক্যাম্পে গেলাম। একদম বর্ডারে। আপনার আশে পাশে শূকর ঘুরবে! অবাক হবার কিছু নেই। ওপাড়ের গারোদের খাবার এরা, পালন করে তারা।
এরপর কমলা বাগান ঘোরা শেষে ফিরে যাই নদীর তীরে। সেখান থেকে আবার নৌকায় করে নদী পার হয়ে পায়ে হেঁটে গেস্ট হাউজ। যদিও সেদিন রাতেই চলে আসা যেত কিন্তু আমরা একরাত কাটিয়ে পরদিন ভোর পর্যন্ত থেকেছিলাম। ফিরতি বাসও পাওয়া যাবে গেস্ট হাউজের উল্টো পাশেই!

বলে নেয়া ভালো, নেত্রকোণার খাবারের মান খুব একটা ভালো নয়। এটা কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে। কিন্তু এটা আর সোমেশ্বরী নদীর এপাড়ের রাস্তা বাদে বাকিসব অনেক সুন্দর। একদিনেই ট্যুর শেষ করতে চাইলে গেস্ট হাউজে উঠার কোনো প্রয়োজন নেই। সব মিলিয়ে অল্প খরচে ঘুরবার মত অনেক সুন্দর জায়গা।

যাত্রা সুন্দর হোক এবং পরিবেশকে সুন্দর রাখুন!

Share:

Leave a Comment