পৃথিবীর অন্যতম গভীরতম গুহা

একটা গুহা বা গর্ত কতটুকুন পর্যন্ত হতে পারে বলে আপনি মনে করেন। কোন মনুষ্য নির্মিত গর্ত নয়। একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়া গুহার কথা বলছি। জর্জিয়ার পাহাড়ি অঞ্চল আবখাজিয়াতে অবস্থিত ক্রুবেরা নামক গুহাটির গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে দুই কিলোমিটারেরও বেশি নিচে। অস্বাভাবিক এই গুহাটি একেবেকে মাটির নিচে অত্যন্ত বিস্ময়কর অবস্থার মধ্য দিয়ে মাটির অনেক গভীর পর্যন্ত চলে গিয়েছে।

বিশাল সব পুকুর, স্বচ্ছ পানির ধারক, গরম আবহাওয়া, মারাত্মক গ্যাস সহ হাজারও উপাদান পাওয়া যায় পুরো গুহাটি জুড়ে। প্রথম এই গুহাটা ২০০১ সালে পৃথিবীর নজরে আসে। যখন ইউক্রেনের একদল ডুবুরি এবং অত্যন্ত দুঃসাহসী কিছু মানুষ এই গর্তের ভিতরে প্রায় ১৭০০ মিটার নিচে চলে যান। কিন্তু তাদের কাছে যথেষ্ট খাবার এবং অক্সিজেন এবং প্রস্তুতি না তাকায় আবার ফেরত যেতে হয়। আবার একটা খুবই মারাত্মক গ্যাসীয় চেম্বারের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার মত যথেষ্ট জিনিসপত্রও তাদের সাথে ছিল না সেই সময়। পরের বার প্রস্তুতি নিয়ে তারা আবার সেখানে গিয়ে প্রায় ২০৮০ মিটার নিচে চলে যায় পুরো দল। কিন্তু এবার একটা অত্যন্ত গভীর পানির পুকুরের সম্মুখীন হয় তারা। এই পুকুরটির গভীরতা যে কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে তার কোন ধারনাই নেই এই দলের। তারা ২০০৯ সালে সর্বনিম্ন প্রায় ২২৯৭ মিটার পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন। এর নিচে যাওয়ার মতন যথেষ্ট জিনিষপত্র আর অক্সিজেন তাদের সাথে ছিল না।

ধারনা করা হয় ওই পুকুরটির তলাতে মানুষের জন্য কোন এক বিস্ময় অপেক্ষা করছে। কিভাবে এত গভীরে বিশাল এই পুকুরটার সৃষ্টি হল সেটাও আর একটা বিস্ময়। যেখানে ভালো করে অক্সিজেনই প্রবেশ করতে পারে না সেখানে এমন এক আবিষ্কার সবাইকেই অবাক করেছে। এখানকার অভিযাত্রী দলের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা ছিল অসহ্য অন্ধকার। ক্রুবেরি গুহাটির ভিতরের অন্ধকার আর নির্জনতা এতটাই বেশি যে আপনাকে দুই দিনের মধ্যে পাগল করে দিতে পারবে। আর এটাই অভিযাত্রিদলের জন্য সবচেয়ে সমস্যার বিষয় ছিল। তার পরে ওই পুকুরটা তাদেরকে আরো বেশি হতাশ করে ফেলেছিল। অভিযাত্রী দল নিজেদের সাতে অত্যন্ত শক্তিশালী একটা রোবট নিয়ে অভিযান চালিয়ে এর রহস্য দ্রুতই সমাধান করবেন। পুরো দুনিয়ায় মাটির নিচে তৈরি প্রায় সব কয়টি গুহার মধ্যে এটিই অন্যতম গভীরতম একটি গুহা। যদিও এর রহস্য এখন ও উন্মোচন করা সম্ভব হয়নি। তবে আশা করা যায় দ্রুতই এটি তৈরি এবং ভেতরের অন্যান্য প্রতিটি বিষয়ই বেশ ভাল ভাবে খুঁজে বের করে মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে।

Share:

Leave a Comment