প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য কাঞ্চনজঙ্ঘা

অনেকেএখনো সিকিম বলতে শুধু বোঝে, গাংটক, জিরো পয়েন্ট, বাবা মন্দির, ছাঙ্গু এগুলোই। কিন্তু এর বাইরেও প্রচুর অফবিট জায়গা আছে সিকিমে, যেখানে গেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে, এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরব সেরকম এক জায়গার কথা। হাওড়া থেকে ট্রেনে করে আসলে নামতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। যদি কেউ বিমান এ আসেন, তিনি নামবেন বাগডোগরা বিমান বন্দরে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ঘন্টা ছয়েকের পথ অতিক্রম করে মেলিবাজার, জোর্থাং হয়ে পৌঁছে যাবেন পশম সিকিমের ওখরে বলে এক গ্রামে। এখানে এসে আপনি কিছু হোম স্টের সন্ধান পাবেন, আগে থেকে বুক করে আসলে ভালো। দুপুরের খাবার টা সেরে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়ুন গ্রাম টা ঘুরতে। সাথে বাড়তি পাওনা, অপরুপ কাঞ্চনজঙ্ঘা, এবং বিভিন্ন ধরণের পাখি। হাতে শুধু থাকতে হবে একটা সুন্দর ক্যামেরা।

দ্বিতীয় দিন সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়ুন বার্সের উদ্দেশ্যে। মিনিট ৪০ গাড়ি করে যাওয়ার পর, গাড়ি এসে থামবে হিলে বলে একটি জায়গায়। এর পরে আর গাড়ি যাবেনা। এর পরের পথটা পুরোটাই হাঁটা পথ। রাস্তার সামনে সিঁড়ি দিয়ে দু পা উঠলেই দেখতে পাবেন লেখা আছে “welcome to Barsey Rhododendron Sanctuary” । গেট পাস বানিয়ে পাইন, বাঁশ, রোডডেনড্রোন গাছের ঘেরা রাস্তা দিয়ে পাহাড়ের গা ঘেঁষে হাঁটতে হবে ঘন্টা তিনেক পথ। গা ছমছম করা এক পরিবেশ। এই হাঁটা পথের মাঝে দু এক জায়গায় বসে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গাও পাবেন। ঘন্টা তিনেক হাঁটার পরে পৌঁছে যাবেন বার্সে ফরেস্ট ব্যারাক বা গুরাস কুঞ্জের কাছে। এখানে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার দিকে তাকালে আপনার চোখ ফেরানোর জায়গা থাকবেনা। বার্সেতে এই ফরেস্ট ব্যারাক এবং গুরাস কুঞ্জ এই দুটোই থাকার জায়গা। এখানে এসে দুপুরের খাবারটা সেরে ফেলতে পারেন। এখানে সেভাবে দেখার কিছু নেই, তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা যেভাবে আপনার কাছে ধরা দেবে সারাদিন ধরে, এর পরে আর আপনার কিছু নতুন করে দেখার ইচ্ছে থাকবে বলে মনে হয়না। বার্সেতে কিন্তু ইলেক্ট্রিকের ব্যবস্থা নেই। সোলারে দু একটা লাইট জ্বলে টিমটিম করে, তাও আবার আকাশ মেঘলা থাকলে সেটাও জ্বলবেনা। সুতরাং মোমবাতির আলোই ভরসা সূর্য ডুবে যাওয়ার পরে। ঠান্ডাটা এখানে বেশ ভালোই পরে, তাই রাতের খাবারটা তাড়াতাড়ি সেরে, লেপের নীচে চলে যাওয়াটাই শ্রেয়। বার্সেতে যদি খাবারটা নিজেরা করতে পারেন, তাহলে ভালোই হবে।

পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করে, সেই একই হাঁটা পথে ফিরে আসতে হবে হিলে পর্যন্ত। সেখানে আপনার গাড়ি ( আগে থেকে বলে রাখতে হবে) দাঁড়িয়ে থাকবে। হিলে থেকে গাড়ি করে ঘন্টা চারেকের পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যান কালুক বা রিনচেনপঙ, যে কোনো একটি জায়গায়। এখানে এসেও দুপুরের খাবার খেয়ে হাটতে হাটতে বেরিয়ে পড়তে পারেন, স্থানীয় বাজার, কিছু ঘোরার জায়গা ( গুম্ফা, লেক) দেখতে। আর আপনার একপাশে সব সময় আপনার সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘা তো আছেই। বিকেলে হোটেলে ফিরে এসে গরম গরম পোকরা, আর চা বা কফি খেতে খেতে তাসের আড্ডায় বসে পড়ুন বন্ধুদের সাথে।

Source: Tanura TopseTravelers Of Bangladesh (TOB)

Share:

Leave a Comment