বাংলাদেশের সাগরকন্যা
দক্ষিণ পশ্চিমে বাংলাদেশের সাগরকন্যা বলা হয় কুয়াকাটাকে। ১৩ কিমির কিছু বেশি দৈর্ঘ্যের এই সৈকতে আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখনি। জানাচ্ছি ইন ডিটেইলস। যতটা পারা যায়। আজ অর্থাৎ ১ অক্টোবর সকালে ফিরেছি কুয়াকাটা থেকে। সো আপনাকে যা জানাবো, সেগুলো একদম লেটেস্ট ইনফো।
লঞ্চ অথবা বাস যেভাবে খুশি যেতে পারেন।
#লঞ্চে_গেলে ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা জনপ্রতি। কেবিনের ভাড়া ১২০০ টাকা। সন্ধ্যা ৬ টার দিক থেকে ছাড়া শুরু করে লঞ্চগুলো। আমরা গিয়েছিলাম সুন্দরবন ৯ এ। সার্ভিস মোটের ওপর ভালো। পৌঁছে যাবেন ভোরে ৫ টার মধ্যে। রাতে চাইলে লঞ্চেই খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলতে পারেন। জনপ্রতি ১৫০ টাকা খরচ পড়বে খুব বেশি হলে। এমভি জামাল ৫, প্রিন্স আওলাদ নামেও আরও কিছু লঞ্চ আছে। সার্ভিস মোটের ওপর ভালো। লঞ্চ আপনাকে নামিয়ে দেবে পটুয়াখালীতে। নেমে অটো নিয়ে যেতে হবে কুয়াকাটার বাসস্ট্যান্ডে ভাড়া ১৫-২০ টাকা জনপ্রতি। সেখান থেকে সরাসরি কুয়াকাটার ডিরেক্ট বাসে যেতে পারেন। ভাড়া ১৪০ টাকা। পুরো বাস একদম লোড না হওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না। সিন্ডিকেট করা আছে। ওরা ব্যাপারগুলোকে এভাবেই কন্ট্রোল করে। ঢাকার লোকাল বাসগুলোর মত চেহারা। ডিরেক্ট বাসে ভাগ্য খারাপ হলে সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টার বেশি।
আবার চাইলে সেখান থেকে কলাপাড়ার বাসে ওঠে কলাপাড়া ব্রিজের নিচে নেমে যেতে পারেন। ভাড়া ১০০ টাকা জনপ্রতি। সেখান থেকে মাহিন্দ্রা নিয়ে কুয়াকাটা যেতে পারেন। চারপাশের পরিবেশ সুন্দর। রাস্তা কিঞ্চিৎ ভাঙ্গা। ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা। এভাবে ভেঙ্গে গেলে সময় লাগবে ২ ঘণ্টা। সবমিলিয়ে খরচ ১৫০ টাকা জনপ্রতি।
#ঢাকা_থেকে_সরাসরি_বাসে গেলে কুয়াকাটা এক্সপ্রেস, ঈগল পরিবহণ, হানিফ, সাকুরা, সুরভী, আবদুল্লাহ পরিবহণসহ বেশ কিছু বাস সার্ভিস আছে। ভাড়া জনপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকার মধ্যে। মাওয়া, পাটুরিয়া দুই দিকের বাসই আছে। ভাড়াও নির্ভর করে এই দুই সাইডের ওপর। স্পীডে টানতে অভ্যস্ত এই বাসগুলো। কিছুটা রেকলেস। সিট নর্মালি ভালোই। নামিয়ে দেবে একদম কুয়াকাটা বিচের একটু আগে চার রাস্তার মোড়ে।
কুয়াকাটা ঢোকার মুখেই বনানী প্যালেস, পর্যটন হোটেল, সি কুইনসহ বেশ কিছু হোটেল দেখতে পাবেন রাস্তার দুই পাশেই। হোটেলভেদে ভাড়াও ওঠানামা করবে। এছাড়াও অনেক ছোটখাটো হোটেলও পাবেন যেগুলো খুব একটা সুন্দর না হলেও ২/১ দিন থাকার জন্য মোটের ওপর ভালো। ডাবল বেড রুম ভাড়া ২০০০ টাকা থেকে শুরু। দামদর করে নিতে পারবেন।
কুয়াকাটা মোড়ের বাইক স্ট্যান্ডের পাশের রাস্তায় বেশ কিছু হোটেল আছে। খাটি বাংলায় যাকে বলে ভাতের হোটেল, ছালাদিয়া হোটেল। কিন্তু খাবার ঝাক্কাস। প্রাইসও তুলনামূলক কম। বিভিন্ন রকম মাছ ও মাছের ভর্তা থেকে শুরু করে মাংস সবই পাবেন। হোটেলগুলো দেখতে ভালো না হলেও খাবার আসলেই ভালো। অন্তত একবার ট্রাই করতে রিকমেন্ড করব আমি। জনপ্রতি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই ভরপেট খেয়ে নিতে পারবেন। পানির টেস্ট একটু অন্যরকম। টিউবওয়েলের পানি। আয়রন আছে। মিনারেল জেনারেল ওয়াটারও পাবেন। ডাব ট্রাই করা মাস্ট। ২৫-৩০ টাকা প্রতি পিস।
মুল আকর্ষণ হচ্ছে সি বিচ। বলে রাখছি বেশ নোংরা। শক্ত বালি। কিন্তু আবেদন একই রকম। মেইন বিচ থেকে একটু সাইডে সরে গেলে ভিড় একটু কম পাবেন। সিকিউরিটি মোটামুটি। পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ কম। বিচে নেমে হাতের ডানে ট্যুরিস্ট বোটে ঘুরে বেড়ানোর অফার সম্বলিত একটা ছোট্ট অফিস পাবেন। ভাড়া সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা। চার ঘণ্টার এই ট্রিপে লাল কাঁকড়ার চর, ফাতরার বনসহ কিছু জায়গা দেখাবে। আরও হাই প্রাইসে বেশি সময়ের ট্রিপও আছে। এছাড়াও মিছরি পাড়ার বুদ্ধ মন্দির দেখতে পারেন। ঝাউবন দেখতে পারেন। রাস্তাগুলো কিঞ্চিৎ ভাঙ্গা। কিন্তু পরিবেশ অসম্ভব সুন্দর। বাইকে ঘুরতে গেলে ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর জন্য প্যাকেজ জনপ্রতি ৫০০ টাকা। এক বাইকে দুইজন। চাইলে বাইকে নর্মালি ঘুরতে পারেন। কিমি প্রতি ২০ টাকা জনপ্রতি। খুব বেশি জায়গা নেই ঘোরার। তবে বিচের দিকে যাওয়া পিচের রাস্তার শেষ পয়েন্টটা বেশি বেশি জোস। স্লাবের ওপর পা রেখে বসে থাকতে থাকতে কখন যে সময় পেরিয়ে যাবে, টেরও পাবেন না।
ঘুরে আসুন তাহলে 🙂
Happy Travelling 🙂
Post copied From:Rajvi Bd>Travelers of Bangladesh (ToB