ভুটান ভ্রমণ
ভিসা
সড়কপথে ভুটান যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম দরকার ইন্ডিয়ান ট্রানজিট ভিসা। অর্থাৎ আপনার ইন্ডিয়ান ভিসায় port of entry এবং port of exit দুটোই থাকতে হবে changrabandha/jaygaon। ইন্ডিয়ান ভিসা পাওয়ার ব্যাপারটা একটু ঝক্কির, কিন্তু ম্যানেজ করতে হবে। বাংলাদেশিদের জন্য ভুটানের ভিসা লাগে না। ফুন্টসোলিং (ইন্ডিয়ার জয়গাঁও)-এ গেলেই পাসপোর্টে এন্ট্রি পারমিশনের সিল মেরে দেবে। শুধু এক কপি করে ছবি নিয়ে যাবেন, আর ওদের দেওয়া ফর্ম ফিল আপ করা লাগবে। তবে এই পারমিশন সাত দিনের জন্য এবং শুধুমাত্র থিম্পু আর পারোর জন্য। অন্য কোথাও যেতে হলে বা বেশিদিন থাকতে হলে থিম্পু থেকে পারমিশন নিতে হবে।
মুদ্রা
ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি আর গুলট্রাম দুটোই চলে, তাই বর্ডার থেকে ডলার ভাঙিয়ে রুপি নিয়ে গেলেও কোন সমস্যা নেই। রুপি আর গুলট্রামের মান সমান। কেনাকাটা করলে ওরা আপনাকে গুলট্রাম দিতে পারে, এগুলো ওখানেই খরচ করে আসবেন, ইন্ডিয়ান মানি এক্সচেঞ্জাররা গুল্ট্রাম থেকে রুপি দিতে চায় না।
খরচ
ব্যক্তিগত কেনাকাটা ছাড়া থাকা-খাওয়া-বেড়ানোতে আমাদের একএকজনের খরচ হয়েছিল ২০২ ডলার করে। বাংলাদেশ থেকে বের হয়ে আবার বাংলাদেশে ঢোকা পর্যন্ত এই খরচ।
হোটেল
হোটেল আগে থেকে বুকিং করে রাখা ভালো। আমরা প্রথমে গিয়েছিলাম থিম্পু, আর ধারণা ছিল, পৌঁছুতে রাত হবে, তাই হোটেলটা আগে থেকে বুকিং করে রাখাটা দরকার মনে করেছিলাম। তবে পিক সিজন না হলে থিম্পু/পারো পৌঁছেও যে কেউ হোটেল ঠিক করতে পারেন। ভুটানে মোটামুটি ভাল মানের হোটেলগুলো ই-মেইলে রুম বুক করে, এদের ভাড়া সিজনভেদে ১১০০ থেকে ৩০০০ রুপির মধ্যে। অফ সিজনে সব হোটেলই অনেক ছাড় দেয়। তাই বুক করে যেতে দোষ কী? আমি অনেকগুলো হোটেলের ই-মেইল অ্যাড্রেস আর ফোন নাম্বার পেয়েছিলাম www.hotel.bt এই ওয়েবসাইট থেকে। থিম্পুতে আমরা ছিলাম ভুটান সিলভারপাইন রিসোর্টে www.bhutansilverpine.com । রিসোর্টটা নতুন, এর মালিক অমৃতা প্রধান বেশ মিশুক মানুষ, অফ সিজন ছিল দেখেই হয়তো আমাদের উনি দু’রাতের জন্য দুটো স্যুট রুম দিয়েছিলেন ১৫০০ রুপি করে। রিসোর্টটা শহরের মধ্যে না, থিম্পু গেটের ঠিক আগেই ডান দিকে হাইওয়ের পাশে এর অবস্থান, থিম্পু ক্লক টাওয়ার (মূল শহর) থেকে প্রায় ৬ কিমি দূরে। শহুরে ভাবটা না থাকায় আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে জায়গাটা। পাশেই থিম্পু চু (নদী), আপেলের বাগান আর বিশাল সব পাহাড়। জানালা থেকেই থিম্পু গেট দারুন দেখা যায়। পারোতে ছিলাম হোটেল সোনাম ট্রোফেল-এ। এখানে আমরা দুটো স্ট্যান্ডার্ড ডাবল রুম বুক করেছিলাম তিন দিনের জন্য, ভাড়া ১১০০ রুপি করে। Trip Advisor এ এদের সম্পর্কে রিভিউগুলো পড়ে নিতে পারেন। দু’জায়গাতেই ওরা প্রথমে ভাড়া কিছু বেশি বলেছিল, আমি ই-মেইলেই ভাড়া কিছু কমানোর জন্য রিকুয়েস্ট করেছিলাম।
যাতায়াত
ভুটান সিল্ভারপাইনের অমৃতা প্রধান আমার প্ল্যান শুনে আমাকে রেকমেন্ড করেছিলেন ৬ দিনের জন্য একটা ছোট গাড়ি ভাড়া করতে, দিনপ্রতি ২৪০০ রুপি। আমার মনে হয়, এটা বেশ ভাল একটা পরামর্শ ছিল। জয়গাঁও/ফুন্টসোলিং থেকে থিম্পু শেয়ার ট্যাক্সিতে জনপ্রতি ৬৫০ রুপি করে নেয়, সে তুলনায় এটা ভাল ছিল। উনিই আমাদের উনার পরিচিত ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। আমরা নিয়েছিলাম ছোট্টএকটা WagonR গাড়ি, যাতে চারজনের খুব ভালভাবেই হয়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, চারজনের গ্রুপ হলে গাড়ি ভাড়াটা খুব ভালভাবে মিটে যাবে। ভুটানের বেশিরভাগ গাড়িই ছোট ছোট, মাঝারি সাইজের গাড়ি তেমন একটা চোখে পড়েনি। ৮/৯ জন বসা যায় এমন গাড়ি/মাইক্রোবাস অবশ্য ভাড়া পাওয়া যায়, ভাড়া দিনপ্রতি ৪০০০ টাকার মত। ছোট গাড়ির ভাড়া আমি পরে যাচাই করে দেখেছি, থিম্পু থেকে ভাড়া করলে দিনপ্রতি ২৫০০ রুপির কমে পাওয়া যেত না। ভুটানের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু এগুলো নির্দিষ্ট কিছু টাইমে ছাড়ে, তাই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে খুব একটা convenient হবে না। এছাড়া এগুলো সব ট্যুরিস্ট স্পটে যায়ও না। গাড়ি ভাড়া করলে ড্রাইভারের থাকা-খাওয়ার খরচ সে নিজেই বহন করবে। আসলে ভুটানের প্রায় সব হোটেলেই ড্রাইভারদের থাকা-খাওয়া ফ্রি।
দিন ১:
ঢাকা-বুড়িমারি/চেংরাবান্ধা-জয়গাঁও/ফুন্টসোলিং-থিম্পু
২৭ নভেম্বর রাতের বাসে ঢাকা থেকে বুড়িমারি যাই। নন-এসি বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬০০ টাকা। ভোর বেলায় বুড়িমারি পৌঁছে বাস কাউন্টারে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। বুড়ির হোটেলে খাওয়াদাওয়া সেরে নিয়ে বর্ডার পার হলাম সাড়ে নয়টার দিকে। ডলার ভাঙ্গিয়ে ইন্ডিয়ান রুপি নিয়ে নিলাম ওপারে। তারপর একটা অ্যাম্বাসেডর গাড়ি ভাড়া করলাম ১৪০০ টাকায় জয়গাঁও পর্যন্ত। জয়গাঁও পৌঁছুতে সময় লাগলো দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। জয়গাঁও গিয়ে প্রথম কাজ ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে যাওয়া। ছোট শহর, তাই বেশিরভাগ লোকই চেনে জায়গাটা। এরপর বেশ কিছু বিস্কুট-চিপস-কেক কিনে নিয়ে ফুন্টসোলিং গেটের কাছে ভুটান ইমিগ্রেশন অফিসে গেলাম। ওখানে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিয়ে অমৃতার দেওয়া ট্যাক্সি ঠিক করলাম। তারপর থিম্পুর উদ্দেশ্যে যাত্রা, তখন প্রায় বিকেল চারটা। পথে পড়ল গেদু আর চুখা শহর। চুখাতে পৌছে খাবার খেয়ে নিলাম, কেননা ড্রাইভারমাইকেল জানাল, থিম্পু পৌঁছুতে রাত হয়ে যেতে পারে, আর শীতের দিন বলে কোন রেস্টুরেন্ট খোলা নাও থাকতে পারে। রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ আমরা পৌঁছুলাম থিম্পু,অর্থাৎ আমাদের রিসোর্টে। আগে থেকে বুকিং রাখাটা যে কি ভাল decision ছিল, তা এখন বুঝতে পারলাম।
দিন ২:
King’s Memorial Chorten, Buddha Dordenma Statue, Simtokha Dzong, National Takin Reserve, Tashiccho Dzong, Parliament House, King’s Palace
পরদিন সকালে আমরা থিম্পু সাইট সিইং-এ বের হলাম। একে একে গেলাম কিংস মেমোরিয়াল চর্টেন, বুদ্ধ দরদেনমা স্ট্যাচু বা বুদ্ধ পয়েন্ট, সিমতোখা জং, তাকিন রিজার্ভ বা চিড়িয়াখানা। এগুলো দেখা শেষে শহরে ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। খাওয়ার পরে গেলাম তাশিচো জং (TashicchoDzong)। জং মানে সরকারি অফিস, সাথে মন্দিরও আছে। এই জং এর পাশেই ওদের পার্লামেন্ট হাউস আর রাজার প্রাসাদ। প্রাসাদ বলতে ছোট্ট একটা বাসা। লোকে বলে, এই বাসার কিচেনও বাসা থেকে আলাদা একটা ঘরে, সেখানে রানি রান্না করেন। একারণেই মানুষজন রাজাকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করে।
দিন ৩
Dochu La Pass, Changangkha Monastery, Folk HeritageMuseum, National School of Arts, National Library, Archery Ground
এদিন সকাল সকাল বের হয়ে পড়লাম আমরা, উদ্দেশ্য দোচু লা পাস। দোচু লা পাস যেহেতু পুনাখা ডিস্ট্রিক্ট-এ পড়েছে, তাই থিম্পু থেকে পারমিশন নিতে হয়। আমাদের দিনটা ছিল রবিবার, সরকারি ছুটি, অফিস বন্ধ। যাই হোক, রওনা দিয়ে দিলাম, চেকপোস্টে এসে রিকুয়েস্ট করে পাসপোর্টগুলো জমা রাখলাম। তারা যেতে দিল। দোচু লা পাস ঘুরে আসতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগলো। শহরে ফেরার পথে গেলাম চ্যাংগাংখা মন্দির। শহরে ফিরে লাঞ্চ সেরে নিয়ে একে একে দেখলাম ফোক হেরিটেজ মিউজিয়াম, আর্ট স্কুল, ন্যাশনাল লাইব্রেরি – এগুলো সব এক জায়গায়। এরপর গেলাম আর্চারি গ্রাউন্ড। তীরন্দাজদের ১৫০/২০০ মিটার দূরের নিশানা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। এরপর আমরা রওনা দিয়ে দিলাম পারোর উদ্দেশ্যে। থিম্পু থেকে পারোর রাস্তাটা অসাধারণ সুন্দর। একজায়গায় গাড়ি থামিয়ে ছবি তুলতে ভুললাম না।
দিন ৪
Tiger’s Nest, Kichu Monastery, Paro Chu (River)
সকাল সাতটার মধ্যে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম আমাদের ট্যুরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ – তাকসাং মন্দির বা টাইগারস নেস্ট এর উদ্দেশ্যে। ২০/৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম এর বেজ ক্যাম্পে, যেখান থেকে ট্রেকিং শুরু হবে। টাইগারস নেস্টে উঠতে আমাদের সময় লাগলো প্রায় ৩ ঘণ্টা, পথে কত শত ছবি যে তুলেছি তার ইয়ত্তা নেই। সেখানে ছিলাম প্রায় ঘণ্টাখানেক, তারপর নেমে আসা। আসার পথে সাথে নিয়ে যাওয়া স্ন্যাক্স খেয়ে নিলাম এক জায়গায়। নামতে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগলো। আমাদের ড্রাইভার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, পারো ফেরার পথে উনি আমাদের নিয়ে গেলেন কিচু মন্দির।
গাড়ি ভাড়া করার ক্ষেত্রে এদিনটা নিয়েই আগে একটু সন্দেহ ছিল, কেননা এদিন গাড়ি দিয়ে আমরা বেশি ট্রাভেল করিনি। কিন্তু পরে সন্দেহটা কেটে গিয়েছিল, কারণ পারো থেকে টাইগারস নেস্টের বেজ পর্যন্ত ট্যাক্সি ভাড়া নেয় একেকজন ২০০ টাকা (যদিও distance খুবইকম), খুব একটা available ও না। গাড়ি ভাড়া করা না থাকলে ফেরারসময় ঝামেলা হতে পারত, আবার আমরা ফেরার পথে কিচু মন্দির ঘুরতে গিয়েছিলাম, সেটাও হত না।
দিন ৫
Chele La Pass, Airport Viewpoint, National Museum / TaDzong, Paro Dzong
সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে রওনা দিলাম চেলে লা পাসের উদ্দেশ্যে। এটা ভুটানের সবচেয়ে উঁচু রাস্তা, হা যাওয়ার পথে পড়ে, উচ্চতা ৩৯৮৮ মিটার। ভুটানের ২য় সর্বোচ্চ পর্বত জমলহারি এখান থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। আর একটু ঠান্ডা পরলে এখানেও বরফ/তুষার পাওয়া যায়। এখান থেকে ফিরে আসতে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগলো। ফেরার পথে এয়ারপোর্ট ভিউ পয়েন্টে একটু থামলাম ছবি তোলার জন্য। শহরে ফিরে লাঞ্চ সেরে নিয়ে গেলাম তা জং বা ন্যাশনাল মিউজিয়াম। এরপর গেলাম পাশেই অবস্থিত পারো রিনপুং জং বা পারো জং। নদীর ধারে পারো জংটা অসাধারণ। শেষ বিকেলের দিকে ড্রাইভার মাইকেল আমাদের নিয়ে গেল শহর থেকে একটু বাইরে পারো নদীর ধারে, আমরা জমিয়ে আড্ডা দিলাম হু হু বাতাসের মধ্যে বড় বড় পাথরে বসে, আর মাইকেল তার গাড়িটা চটপট ধুয়ে নিল।
দিন ৬
ভুটানে আমাদের দিন শেষ, ইচ্ছে করছিল আর ক’টা দিন থাকার, কিন্তু ফিরতে তো হবেই। এদিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই রওনা দিলাম ফুন্টসোলিং এর দিকে। উদ্দেশ্য, দুপুর একটায় জয়গাঁও থেকে কালিম্পং-এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া শেয়ার জিপ ধরার। মাইকেল ফোন করে চারটে টিকিট বুক করে রেখেছিল, ভাড়া জনপ্রতি ২০০ রুপি। পথে চুখাতে থেমে নাস্তা সেরে নিলাম। এখানে দেখতে পেলাম বড় একটা হাইড্রো-প্রজেক্ট। যাওয়ার দিন অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল বলে পথের সৌন্দর্য বেশিক্ষণ দেখতে পারিনি, এবার দুচোখ ভরে দেখলাম পথের সৌন্দর্য। দুপুর সাড়ে এগারটার দিকে পৌঁছুলাম ফুন্টসোলিং/জয়গাঁও। ইন্ডিয়ার টাইম তখন এগারটা। প্রথমে ভুটানের ইমিগ্রেশন থেকে exit,তারপর ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন থেকে entry সিল মেরে নিলাম। এরপর কিছু খাওয়া দাওয়া করলাম একটা রেস্টুরেন্টে, তারপর কালিম্পং-এর গাড়িতে চেপে বসলাম। গাড়ি ছাড়ল দু’টার দিকে। বিরপাড়া, মালবাজার হয়ে আমাদের গাড়ি কালিম্পং পৌঁছুল পাক্কা সাড়ে চার ঘণ্টা পর। পথে পড়ল ডুয়ার্সের চা বাগান আর তিস্তা নদী। হ্যাঁ, সমরেশের বইয়ের সেই জায়গাগুলো। চা বাগানের মাঝেই একটা ভুটিয়া হোটেলে ব্রেক দিয়েছিল,জীবনের সেরা মম মনে হয় ওখানেই খেলাম, আর পান করলাম সুস্বাদু চা। কালিম্পং এ উঠলাম Sood’s Garden Retreat এ। এখানেও মেইল করে বুকিং দিয়েছিলাম, আর ডিলাক্স রুমপেয়েছিলাম ডিসকাউন্টে, ১৫০০ রুপি প্রতি রাত। এই হোটেলটা তো সুন্দরই, তার ওপর রুম থেকে কাঞ্চঞ্জঙ্ঘার যে ভিউ পাওয়া যায়, তার কোন তুলনাই নেই।
দিন ৭
এদিন কালিম্পং সাইট সিইং এ বের হলাম। কালিম্পং শহরের মধ্যে যা কিছু আছে তা ঘুরতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। আমরা ঘুরলাম পাইন ভিউ ক্যাকটাস নার্সারি, দূরপিন মন্দির, গলফ কোর্স, দেওলো হিল, সাইন্স সেন্টার, বুদ্ধ মন্দির, হনুমান তোক (মুর্তি), গ্রাহাম’স হোম ও স্কুল আর মঙ্গল ধাম মন্দির। একটা ছোট গাড়ি ভাড়া করেছিলাম ১৩০০ রুপিতে। দেওলোতে প্যারাগ্লাইডিং হয়, খরচ ৩০০০ রুপি। কালিম্পং এর বিশেষত্ব হচ্ছে এখানকার নার্সারি/ফুল আর স্কুলগুলোর জন্য। আর অনেকের মতে কাঞ্চঞ্জঙ্ঘার ভিউ এখান থেকে দার্জিলিং এর চেয়েও ভাল পাওয়া যায়। শহরে এসে লাঞ্চ সেরে মার্কেটে ঘুরলাম, শপিং করলাম শীতের কাপড়ের। সন্ধ্যের পরে হেঁটে ফিরলাম হোটেলে।
দিন ৮
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হোটেল ছেড়ে দিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে গিয়ে হাজির হলাম, যাব শিলিগুড়ি। সকাল আটটার দিকে শেয়ার জিপ ছাড়ল, ভাড়া একজন ১২০ রুপি। দশটা বাজতে না বাজতেই পৌঁছে গেলাম শিলিগুড়ি শহরে। নাস্তা সারলাম সব্জি-পুরি, রসগোল্লাআর চা দিয়ে। তারপর রিক্সা করে গেলাম বিধান মার্কেট আর হংকং মার্কেট। বেশকিছু কেনাকাটা করে বারোটার দিকে গেলাম তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাল। ওখান থেকে চ্যাংরাবান্ধার বাস ছাড়ে কিছুক্ষণ পরপর। ভাড়া নিল ৩৬ রুপি করে, বাস সার্ভিস খুবই ভাল। পৌনে তিনটায় বাস আমাদের নামিয়ে দিল বর্ডার থেকে ৩ কিমি দূরে, বাইপাস বাসস্টপে। একটা ভ্যানে করে সবাই চলে এলাম বর্ডারে। বর্ডার পার করে পৌনে ছয়টার বাসে উঠে বসলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে, যাওয়ার দিনই টিকেটটা করে রেখেছিলাম।