শাহ পরীর দ্বীপ টেকনাফ, জেটি টেকনাফ বীচ, শামলাপুর বীচ ভ্রমণ
এর সর্ব দক্ষিনের বৈচিত্রতা মুগ্ধ করে দিবে আপনাকে।। এখানে প্রকৃতি যেমন সুুন্দর, জীবন ধারণ ও তেমন কঠিন।।
নির্জন, কোলাহল বিহীন ও মায়াবী দ্বীপ, শাহ পরীর দ্বীপ।। এখানে নেই কোন পর্যটকের আনাগোনা।। এ দ্বীপের জেটি থেকে দেখা যাবে দক্ষিণে বাংলাদেশের শেষ সীমানা।। রাতে থাকার জন্য কোন হোটেল নেই।। তাবু করে থাকা ও তেমন নিরাপদ নয়।। তাই চলে আসা লাগে।। আমি হলফ করে বলতে পারি দ্বীপ যদি পুরোটা ঘুরে দেখেন এ দ্বীপের মায়া কাটাতে আপনার লেগে যাবে অনেকদিন।।
টেকনাফ জেটিও নির্জন।। এখানে দেখা মিলবে ম্যানগ্রোভ ফরেষ্টের।। আরও দেখবেন বরশি ও জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য।।
টেকনাফ বীচ, কক্সবাজারেরর মতই কিন্তু মানুষ তেমন নেই।।।
শামলাপুর বীচ, কর্ম-ব্যস্তময় এক বীচ।। সারি সারি সাম্পান পাড়ে সাজানো থাকে।। কেও সাগরে নামা প্রস্তুতি নিচ্ছে, কেও জাল সাজাচ্ছে, কেউ নৌকা ঠিক করছে, কেওবা পাড়ে টেউয়ের তালে মাছ ঝরছে।। খুব ইচ্ছা ছিল তাবু করে থাকব।। কিন্তু বৃষ্টির জন্য হল না।। ইনশাআল্লাহ আবার যাওয়া হবে।।
ভ্রমনের বর্ণনা:
চট্টগ্রাম থেকে রাত ১ টার গাড়িতে উঠি ও সকাল ৬.৩০ এ নেকনাফ নামি।। নেমে নাস্তা শেষ করে টমটম ভাড়া করি।।প্ল্যান ছিল টমটম নিয়ে সব গুলো জায়গা কভার করব।। যেহেতু আমরা ১৫ জন ছিলাম তাই দুটো টমটম ঠিক করলাম।। আপনারা CNG ও নিতে পারেন।।। দরদাম করে নিবেন।। ড্রাইভার কে বললাম প্রথমে জেটিতে যাব ওখান থেকে টেকনাফ বীচ, তারপর শাহ্ পরীর দ্বীপ হয়ে আবার টেকনাফ বাজারে নামিয়ে দিতে হবে।। সবঠিক করে চলে গেলাম টেকনাফ জেটিতে।। ওখানে ৩০/৪০ মিনিট মত ঘুরে রওনা হলাম বীচের দিকে।। বীচে ও ৩০/৪০ মিনিট কাটিয়ে, শাহ পরীর দ্বীপের দিকে যাত্রা শুরু করলাম।। ১২ কি.মি পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে যেতে পারসি।।। এরপর থেকে রাস্তা ভাঙ্গা।। টমটম এখানে অপেক্ষা করবে আমরা ফিরে না আসা পর্যন্ত।। এখান থেকে ১ কি.মি হেটে আমাদের নৌকায় উঠতে হলো।। স্পিডবোট ও আছে।। আমরা ১৫ জন ছিলাম তাই একটা নৌকা রিজার্ভ নিয়েছিলাম।। নৌকা করে ১৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম শাহ পরীর দ্বীপে।। নৌকা যেখানে নামিয়ে দিবে সেখান থেকে কিছুদূর গিলে পেয়ে গেলাম দ্বীপের জেটি।।জেটি অনেক সুন্দর খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছিল তাই কোন ছবি নিতে পারি নাই।।। বীচ ঘুরে দেখতে লাগলাম।। জেটি থেকে ডানপাশ বরাবর হাটতে লাগলাম দেখা মিলল আরেক সুন্দর বীচের।। দেখতে পেলাম সারি বেঁধে নৌকা, আটকে পড়া লঞ্চ।। কক্সবাজার এর চাইতে এই বীচ টা আরও সুন্দর।। রাস্তার কাজ চলতেসে শেষ হয়ে গেলে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে সরাসরি আসা যাবে।। আমরা ১ ঘন্টা মত ছিলাম।। তারপর আবার নেকনাফ বাজারের দিকে রওনা হলাম।। বাজারে নেমে টমটম বিদায় করে দিলাম।। তারপর লাঞ্চ করে নিলাম।। গোল চত্বর থেকে জেটির দিকে ১ মিনিট হাটলে (ঢাকা রেস্তোরা) নামে এক হোটেল আছে।। খাওয়া মান, দাম সব মিলে ভাল।। সকালের নাস্তা ও এখানে করেছিলাম।।
খাওয়া শেষ করে আবার টম টম দেখতে লাগলাম শামলাপুর যাওয়ার জন্য।। দরদাম করে উঠে গেলাম।। ১ ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম শামলাপুর বীচে।। ইচ্ছা ছিল রাতে তাবু করে থাকব শামলাপুর কিন্তু বৃষ্টির কারনে সেটা সম্ভব হলান।। তাই কিছু সময় শামলাপুরে কাটিয়ে কক্সবাজারেরর জন্য CNG দেখতে লাগলাম।। CNG ভাড়া বেশি চাওয়াতে মিনি পিকআপ বাড়া করে সবাই উঠে পরলাম।। এমনিতে CNG জনপ্রতি ১৩০/১৪০ করে নে শামলাপুর টু কক্সবাজার।। অবশেষে রাত ৯ টায় কক্সবাজার পৌঁছালাম।। চাইলে তখনি চট্টগ্রামের গাড়ি ধরতে পারবেন।। আমাদের ১৫ জনের মধ্যে ২ জন চট্টগ্রাম চলে আসল আর আমরা রাতে কক্সবাজার থেকে পরাদিন সন্ধ্যায় গাড়িতে উঠলাম।।
খরচ জনপ্রতি:
★চট্টগ্রাম টু টেকনাফ= ৪০০/-
★সকালের নাস্তা =৫০/-
★ ২ টি টম টমের ভাড়া, (জেটি+ নেকনাফ বীচ+ শাহপরীর দ্বীপ হয়ে আবার টেকনাফ বাজার সব মিলে)(১১০০*২=২২০০): (২২০০/১৫)=১৪৭
★নৌকা ভাড়া (যাওয়া-আসা): (৭৫০/১৫)= ৫০/-
★লাঞ্চ= ১৮০/-
★ টেকনাফ টু শামলাপুর ২ টি টম টম ভাড়া (৮০০/১৫)= ৫৪/-
★ শামলাপুর টু কক্সবাজার মিনি পিকআপ ভাড়া (১৮০০/১৫)= ১২০/-
★ কক্সবাজার টু চট্টগ্রাম = ২৫০/-
★অন্যান্য= ১৫০/-
মোট খরচ জনপ্রতি ১৪০১/- টাকা।।
যত্রতত্র ময়লা না ফেলে, পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখি।।
Source: Mohammad Ataher Ishraq RafiTravelers of Bangladesh (ToB)