শিলং ভ্রমন ট্যুরিজম

এটাই প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যুর ছিলো। গিয়েছিলাম ৫ জন, এর আগে কেও শিলং যাইনি তাই ট্যুর নিয়ে অনেক স্টাডির ব্যাপার ছিলো। অনেকগুলো ট্যুরিজম এজেন্সির শিলং ট্যুরের ইভেন্ট নিয়ে স্টাডি করতে হয়েছে। কিছু ব্যাপার শেয়ার করি, হয়তো নতুন ট্রাভেলারদের কাজে লাগবে।

১. চেষ্টা করতে হবে তামাবিল বর্ডারে যত সকালে সম্ভব পৌছাতে। আমরা সকাল ৯ টার দিকে পৌছায়ে দেখি অনেক বড় লাইন। সকাল ৮ টা সোয়া ৮ টার ভেতরে সেখানে পৌছাতে পারলে ভালো।

২. শিলং ট্যুরে প্রত্যেকের কাছে ছাতা থাকা মাস্ট। রেইনকোট থাকল আরো ভালো হয়
৩. সকালের নাস্তা অবশ্যই ইন্ডিয়াতে ঢোকার আগে (তামাবিলে) করে নিয়েন। ডাউকি বাজারে পরটার দাম ২০ রুপি করে(আমরা বলে কয়ে ১৫ রুপি করে দিছি)।

৪. সাথে পর্যাপ্ত বাংলাদেশি টাকা অথবা রুপি রাখবেন। ডলার যেটা থাকবে সেটা না ভাঙানোই ভালো।

৫. যে জায়গাগুলো exceptionally beautiful মনে হয়েছে সেগুলো হলো বুড়হিল ঝর্না(বাংলাদেশে পান্থুমাই নামে যেটা পরিচিত), লিভিং রুট ব্রিজ। চেরাপুঞ্জিতে সব জায়গাই সুন্দর, তারপরো ইকো পার্ক আর সেভেন সিস্টার ফলসের কথা আলাদা ভাবে বলতেই হবে।

৬. সব ট্যুরিজম ইভেন্টগুলোতে শেষদিনটা থাকে সিটি ট্যুর। এইদিন সবাই ক্যাথেড্রিল চার্চ, মদিনা মসজিদ, লেডি হায়দার পার্ক, ওয়ার্ডস লেক ইত্যাদি জায়গা ঘোরে। কিন্তু আমাদের কাছে আসলে চেরাপুঞ্জি ঘোরার পরেরদিন এই জায়গা গুলো খুব সাধারণ কিছু মনে হয়েছে। হয়তো চেরাপুঞ্জি ঘোরার আগেরদিন এই জায়গাগুলো দেখলে বেশি ভালো লাগতো। আমরা ২ রাত তিনদিন ছিলাম শিলংয়ে। প্রথম দিন ডাউকি সাইট, দ্বিতীয়দিন চেরাপুঞ্জি আর তৃতীয়দিন সিটি ঘুরেছি। সবার কাছেই মনে হয়েছে সিটি না ঘুরে ওইদিন ভোরে আমরা সোনেংপেডাং চলে যেতে পারতাম। সুতরাং হাতে সময় কম থাকলে সিটি অংশটা বাদ দিতে পারেন। its nothing exceptional(in my opinion)

৭. শিলং পিক আমরা দেখতে পারিনি। ওখানে নাকি ফরেনার এলাউড না। আমরা বলে দিয়েছিলাম আমরা বাংলাদেশী, তাই ঢুকতে পারিনি। সাধারণত এটা ড্রাইভার তার আইডি কার্ড দেখিয়ে গাড়ি এন্ট্রি করে তার প্যাসেঞ্জারকে নিয়ে যায়। আমাদের ড্রাইভার বা আমরা কেও সেটা জানতাম না।

৮. হোটেল কস্ট ডিপেন্ড করে। আমরা একটু পিক টাইমে গিয়েছিলাম, জনপ্রতি ৮০০ রুপি করে খরচ হয়েছে পার নাইট। ডাবল বেড ছিলো ১৫০০ রুপি পার নাইট আর ট্রিপল বেড ছিলো ২৫০০ রুপি পার নাইট।

৯. আমরা ৭ সিটের গাড়ি নিয়েছিলাম। চেরাপুঞ্জিতে ঘোরার দিন আমাদের খরচ হয়েছে ২৫০০ রুপি। আর ৩-৪ সিটের গাড়িতে খরচটা হবে ১৫০০ থেকে ২০০০ রুপি।

১০. ডাউকি বর্ডার থেকে শিলংয়ে যাওয়ার পথে আমরা মাওলিলং ভিলেজ, লিভিং রুট ব্রীজ, উমক্রেম, বুড়হিল ঝর্না দেখে শিলং গিয়েছি। ৭ সিটের গাড়ি ছিলো। ওইদিন নিয়েছে ৩৬০০ রুপি।

১১. পাওয়ার ব্যাংক থাকা মাস্ট কারণ কেন জানি হোটেলে আমাদের মোবাইলের চার্জার দিয়ে চার্জ হচ্ছিলো না।

১২. কম খরচে বাংলাদেশি খাবার খাওয়ার জন্যে সুরুচী হোটেল বেস্ট। এটা শিলং সেন্টার পয়েন্টের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে একটু হেঁটে গেলেই হাতের ডানপাশে পাবেন।

১৩. কেনাকাটার জন্যে “বিশাল বাজার” বেস্ট। এটা সুরুচী হোটেল থেকে একটু আগায়ে গেলে হাতের বামপাশে পাবেন।

আর কোন কিছু মাথায় আসছে না। কারোর কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। নিজের স্বল্পজ্ঞানে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।

আর ড্রাইভার আপনারা বাংলাদেশ থেকেই ঠিক করে যেতে পারবেন। +917641022862 এই নাম্বারে whats app এ যোগাযোগ করে যেতে পারেন। তার নাম ভিরু সিং, খুবই স্মার্ট লোক, বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি সব ভাষা জানে সে। whats app এ আগে থেকে যোগাযোগ করলেই সে ডাউকি বর্ডারে গাড়ি নিয়ে চলে যাবে সময় মতো।

source: Md. Ebrahim Hossain‎  <Travellers Of Bangladesh

Share:

Leave a Comment