সুন্দরবন, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, UNESCO World Heritage Site.
যেভাবে যেতে পারেন…
সুন্দরবনে আপনি মেইনলি ২ ভাবে যেতে পারেন, নিজ উদ্যোগে বা কোন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে। আমি একটি ট্রাভেল এজেন্সির সাথে গিয়েছিলাম।
ট্রাভেল এজেন্সিগুলো মেইনলি প্যাকেজ সিস্টেমে ট্যুরিস্টদের সুন্দরবন ঘুরিয়ে থাকে। আমার এই ট্যুরে ট্রাভেল এজেন্সি নিয়ে বেশ কিছু মিশ্র অভিজ্ঞতা আছে, সেগুলা অন্য একদিন শেয়ার করব।আজকে শুধু ঘোরার অংশটুকুই বলি।
— প্রথমে চিত্রা এক্সপ্রেসে করে ঢাকা থেকে খুলনা। – ভাড়া ১০০০/- (ভ্যাট সহ)। সুন্দরবন যাত্রা শুরুর একদিন আগেই আমি খুলনা পৌঁছেছিলাম খুব টাইট স্কেজিউল এড়ানোর জন্য।
— একদিন বিশ্রাম নিয়ে খুলনা শহর ঘুরে পরদিন সকালে এজেন্সির লঞ্চে উঠি সকাল ৬.৪৫ এ। ছাড়ার কথা ছিল ৭ টায়। কিন্তু লঞ্চ ছাড়ে ১০.৩০ এ। কারন ঢাকা থেকে চিত্রা আসতে অইদিন ৪ ঘণ্টা লেট করে।
— লঞ্চ মংলা পৌঁছানোর পর একজন গার্ড নেয়া হয়। তারপরই মেইনলি শুরু হয়ে যায় সুন্দরবন যাত্রা পশুর নদী ধরে।
— প্রথমদিন বিকালে আমরা পৌঁছাই হারবারিয়া। গাইড এর তথ্যমতে, আমরা যে কয়টা পয়েন্ট ঘুরব(এই পোস্টের পরবর্তী অংশে পয়েন্টগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলা আছে) সেগুলার মধ্যে হারবারিয়াতেই বাঘের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও আমাদের শেষ পর্যন্ত বাঘের একটা অস্পষ্ট পায়ের ছাপ দেখেই খুশি থাকতে হয়েছে। হারবারিয়া তে প্রায় ১.৫ কি.মি. দীর্ঘ একটা ওয়াকওয়ে আছে বনের ভেতর দিয়ে।
— হারবারিয়া তেই প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমরা লঞ্চে ফিরে আসি আর এরপর রাতেই কটকা এর উদ্দেশ্যে রওনা হই। কটকা পৌঁছাই রাত ২ টার দিকে।
— পরদিন ভোর ৬ টায় আমরা কটকা বিচের উদ্দেশ্যে রওনা হই। ৩০ মিনিট হাঁটার পর বিচে পৌঁছাই। বিচে সূর্যোদয় দেখে আমরা এরপর যাই শরনখোলা রেঞ্জের বন বিভাগের অফিস এর দিকটায়। ওখানে কিছুক্ষন হাঁটার পর আমরা দেখা পাই এক পাল চিত্রা হরিণ এর। আমাদের লঞ্চের একজন কর্মচারী গিয়ে গাছে উঠে পাতা ছিঁড়ে দিলে হরিণগুলো খেতে আসে, তখন হরিণগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়।
— এরপর আমরা লঞ্চ এ ফিরে আসি আর হিরনপয়েন্ট এর জন্য রওনা দেই। ওখানে বনের ভিতরে আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা হাঁটি। হিরনপয়েন্টে নৌ বাহিনীর রেস্ট হাউস আছে একটা।
— হিরনপয়েন্ট থেকে আমরা যাই দুবলার চরে। ওখানে আমরা সূর্যাস্ত দেখি আর জেলেপাড়া থেকে শুঁটকি কিনে লঞ্চে ফিরে আসি।
— এরপর রাতে জোয়ার আসলে করমজল এর উদ্দেশ্যে রওনা হই। পৌঁছাই রাত ১ টার মধ্যে। ওখানেই সারারাত লঞ্চে ছিলাম। পরদিন সকালে করমজল ঘুরতে যাই, ওখানে কুমির প্রজনন কেন্দ্র আছে, আর হারবারিয়া এর মত একটা ওয়াকওয়ে আছে।
— এরপর খুলনার উদ্দেশ্যে ফিরতি যাত্রা। খুলনা পৌঁছাই বিকাল ৫ টায়। এরপর আবার চিত্রা এক্সপ্রেসে করে ঢাকা।
খাওয়া-দাওয়া সম্পূর্ণ প্যাকেজের ভিতরে ছিল।প্যাকেজে পার পারসন ৮৫০০/- নিয়েছে। আর যাওয়া আসায় ২০০০/- টাকা ট্রেন ভাড়া(স্নিগ্ধা চেয়ার কোচ)। টোটাল ১০৫০০/- খরচ হয়েছে আমাদের পার পারসন।
Post Copied From:Soumit Saha>Travelers of Bangladesh (ToB)