মজিদবাড়িয়া শাহী মসজিদ, পটুয়াখালী

উপমহাদেশের ইসলাম প্রচারের সময় থেকেই এখানে নানা মুসলিম স্থাপত্য গড়ে ওঠে। নির্মাণ শৈলী থেকে অতীত ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারণে এইসব মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তির মর্যাদা লাভ করে। যদিও সঠিক রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে এইসব স্থাপনার অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। শত শত বছরের সময়কালের সাক্ষী হয়েও এরা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে অযত্নে। প্রায় ৫০০ বছর আগে নির্মাণ হওয়া ঐতিহাসিক মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শনের একটি মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদের একটি এই মজিদবাড়িয়া মসজিদ। সুলতানি আমলে নির্মাণ হওয়া এই মসজদিওটি মুসলিম স্থাপত্য ও শাসন আমলের অনন্য নিদর্শন। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়ীয়া গ্রামে এই মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদের নাম অনুসারের এই এলাকার নামকরণ করা হয়। এই এলাকায় এটি ‘মসজিদ-ই-মজিদবাড়িয়া শাহী মসজিদ’ নামে পরিচিত।

</p“মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ”

এই মসজিদের  ইতিহাস সম্পর্কিত একটা শিলালিপি থেকে এর নির্মাণ নিয়ে কিছু তথ্য মেলে। শিলালিপিটি কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ১৮৬০ সালে কমিশনার মি. রেলির রিপোর্ট হতে এই তথ্য জানা যায়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ইলিয়াস শাহী বংশের নবাব রুকনদ্দিন বরবক এর আমলে ১৪৬৫ সালে মসজিদ টি নির্মাণ করেন খান-ই-মোয়াজ্জেম উজিয়াল খান।

তবে অন্যান্য প্রাচীন মসজিদের মতো এই মসজিদ নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে নানা গল্প শুনা যায়। তাদের মতে মসজিদটি কোন এক সময় মাটির নিচ থেক উঠে আসে কোন অলৌকিক ক্ষমতা বলে।

</p“মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ”

প্রাচীন এই মসজিদটি নির্মাণ শৈলী খুবই আকর্ষণীয়। ৪৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এই মসজিদের প্রধান কামরা বর্গাকৃতির। চমৎকার কারুকাজ লক্ষ্য করা যায় এর তিনটি মেহরাব ও ছয়টি মিনার সাদৃশ্য আট কোনা কোণ বিশিষ্ট পিলারে। বিশাল আকৃতির গম্বুজটাই মূলত এর প্রধান আকর্ষণের বিষয়। চুন সুরকি ও পোড়া মাটির ইট দিয়ে তৈরি হয় গম্বুজটি।

এছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে ইয়াকিন শাহ, কালা শাহ এর কবর রয়েছে। আছে একটি দিঘীও।

কিভাবে যাবেন:

ঢাকা-পটুয়াখালী যাতায়াতের জন্য লঞ্চে ভ্রমণই সবচেয়ে আরামদায়ক ও তুলনামূলক ভাবে বেশি নিরাপদ। সদরঘাট থেকে সুন্দরবন, কাজল, সাত্তার খান, প্রিন্স আওলাদ ও এ আর খান লঞ্চযোগে পটুয়াখালী পৌঁছতে লাগবে ৩০০-১০০০ টাকা।

পাশাপাশি সড়কপথেও পৌঁছানো যায় পটুয়াখালী। ঢাকার গাবতলি বাস-স্ট্যান্ড থেকে সারাদিনই ঘণ্টায় ঘণ্টায় সাকুরা পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাস ছাড়ে পটুয়াখালী উদ্দেশ্যে। অধিকাংশ বাসই যায় পাটুরিয়া ঘাট পার হয়ে, তবে কিছু বাস মাওয়া ঘাট হয়েও পটুয়াখালী পৌঁছায়। এক্সপ্রেস বাস সার্ভিসের প্রায় সবকটিই ফেরি-পারাপার।

এছাড়া ঢাকার গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ী থেকে বি আর টি সি সহ অন্যান্য পরিবহনে মাওয়া এসে ফেরী,লঞ্চ বা স্পীড বোট যোগে নদী পার হয়ে কাওড়াকান্দি থেকে বি আর টি সি সহ অন্যান্য পরিবহনে কলাপাড়া আসা যায় ।

অসি সম্প্রতি ঢাকা-কলাপাড়া রুটে সাকুরা পরিবহন ও বি আর টি সি’র এ সি সার্ভিস চালু  হয়েছে।

পটুয়াখালী থেকে মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়িয়া যেতে খরচ হবে ১৫০ টাকা।

Share:

Leave a Comment