কুমিল্লা ঘুরে দেখার ইচ্ছে হলে,দেখে নিন কীভাবে যাবেন
সকাল ৭ টায় আমরা কমলাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে রয়্যাল এসি কোচে সরাসরি চলে আসলাম কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট। বাস ভাড়া ২৫০ টাকা।
এরপর সেখান থেকে হাতের বামের রোডে অটো তে করে চলে আসি ময়নামতি War Cemetery।
১. ময়নামতি War Cemetery:
ময়নামতি রণ সমাধিক্ষেত্র মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) নিহত ভারতীয় (তৎকালীন) ও বৃটিশ সৈন্যদের কবরস্থান। এটি ১৯৪৩-১৯৪৪ সালে তৈরি হয়েছে। কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের খুব কাছেই এই যুদ্ধ সমাধির অবস্থান। এই সমাধিক্ষেত্রটি Commonwealth War Graves Commission (CWGC) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ও তারাই এই সমাধিক্ষেত্র পরিচালনা করেন। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সকল ধর্মের ধর্মগুরুদের সমন্বয়ে এখানে একটি বার্ষিক প্রার্থণাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ময়নামতি war cemetery থেকে বের হয়ে ১৫ টাকা রিকশা ভাড়ায় আমরা চলে আসি রানী ময়নামতির প্রাসাদে।
২. রানী ময়নামতির প্রাসাদঃ
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের সাহেবের বাজার এলাকায় রাণী ময়নামতি প্রাসাদ ও মন্দির অবস্থিত। স্থানীয়ভাবে এটি রানী ‘ময়নামতি প্রাসাদ’ নামে পরিচিত। জানা যায় ১৯৮৮ সালের নাগাদ এর খনন কাজ শুরু হয়।
লোকমুখে জানা যায় প্রথমে একটি ক্রুশাকার মন্দির ছিল। পরবর্তী সময়ে সংস্কার করে এটিকে ছোট আকারের মন্দির বানানো হয়। খননের করার সময় এখানে বেশ কিছু পোড়ামাটির ফলক এবং অলংকৃত ইট আবিষ্কৃত হয়েছে। খননের পরে বিশ্লেষকরা ধারনা করে এই প্রাসাদটি ৮ম থেকে ১২শ শতকের প্রাচীন কীর্তি।
রানী প্রাসাদ থেকে বের হয়ে আমরা অটোতে করে সরাসরি চলে আসি ক্যান্টনমেন্ট বাস স্ট্যান্ড। এরপর এখান থেকে মাইক্রোবাস সার্ভিস আছে। সেগুলোতে করে চলে আসলাম কোটবাড়ি। ভাড়া ১৫ টাকা। এরপর সেখান থেকে সি এন জি তে করে সরাসরি আসলাম শালবন বিহার। ভাড়া ২০ টাকা।
৩. শালবন বিহারঃ
শালবন বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতি প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনাগুলোর একটি এই বৌদ্ধ বিহার । এটি ১২শ প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত।
৪. শালবন বিহারের ঠিক বিপরীত পাশে রয়েছে নব্য শালবন বৌদ্ধ বিহার। অবশ্যই ঘুরে দেখবেন। অসাধারণ একটা জায়গা।
৫. কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
এরপর আমরা সেখান থেকে অটো নিয়ে সোজা চলে আসলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ।
আমরা আমাদের দুপুরের খাবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনের হোটেল থেকে করলাম।
এরপর সেখান থেকে অটো নিয়ে চলে আসি কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে অবস্থিত ধর্মসাগর দিঘী দেখতে ।
৬. ধর্মসাগর দিঘীঃ
ধর্মসাগর বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরে অবস্থিত একটি বিশাল জলাধার। এটি একটি প্রাচীন দিঘি। এটি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ধর্মসাগরের আয়তন ২৩.১৮ একর।
ত্রিপুরার অধিপতি মহারাজা প্রথম ধর্মমাণিক্য ১৪৫৮ সালে ধর্মসাগর খনন করেন।
এই অঞ্চলের মানুষের জলের কষ্ট নিবারণ করাই ছিল রাজার মূল উদ্দেশ্য।রাজমালা গ্রন্থ আনুসারে মহারাজা সুদীর্ঘ ৩২ বৎসর রাজত্ব করেন (১৪৩১-৬২ খ্রি:)।
মহারাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এর নাম রাখা হয় ধর্মসাগর। ধর্মসাগর নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে বহু উপাখ্যান ও উপকথা।