রাণীশংকৈলের বনাঞ্চল অতিথি পাখিদের আপ্যায়ন স্থান
শীত আসলেই যেন রাণীশংকৈলে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম গড়ে উঠে। এসময় এখানকার গাছে গাছে, জলাশয়ে দেখা মেলে পানকৌড়ি, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি। সাইবার অঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে অতিথি পাখিরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে চলে আসে রাণীশংকৈলে।
শীতের তীব্রতার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরা আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশে যখন গরম নেমে আসে তখন সাইবার অঞ্চলে শীতের তীব্রতা কমে। এরপরই পাখিগুলো হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আবার ফিরে যায় সেখানে। কারণ সেসব অঞ্চলে শীতের আমেজ মোটামুটিভাবে সারা বছর থাকে।
জেলার রাণীশংকৈল-হরিপুর প্রধান সড়কের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা উপজেলার কেউটান গ্রামে বহু বছরের পুরনো শিমুল গাছে আশ্রয় নিয়েছে পানকৌড়ি পাখি। নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পাখিগুলো প্রতিবারের ন্যায় এবারও এখানে আশ্রয় নিয়েছে। সকাল হওয়ার সাথে সাথে তারা আহারের খোঁজে যে যার মতো বেরিয়ে পড়ে। আহার শেষে আবার ফিরে বিশালাকার এই শিমুল গাছে রাত কাটায়। গ্রামের ভিতর সবসময় লোক সমাগম হলেও তাদের প্রিয় এবং অতি পরিচিত জায়গা এটি।
কেউটান গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছর শীতের শুরুতেই পাখিগুলো আমাদের গ্রামে এসে আশ্রয় নেয়। কোনো মানুষকে আমারা এসব পাখি মারতে দেই না। পাখিগুলো আমাদের খুব প্রিয় হয়ে গেছে। পানির উপর ভেসে থাকে হাজার হাজার পাখি। পাখিগুলো এলাকার মানুষের খুব প্রিয় হয়ে যাওয়ায় কেউ পাখি শিকার করে না। এলাকার লোকজনও পাখি মারতে দেয় না।
অপরদিকে উপজেলা ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র রামরাই দিঘি বা রাণীসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে বালিহাঁস এসে ভিড় জমিয়েছে। এসব পাখি যখন পুকুরে অবস্থান করে তখন সবুজ শ্যামলে ঘেরা পুকুরটি বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। তাই এসময় দর্শনার্থীদের ভিড় জমে পাখি দেখার জন্য। একদিকে পুকুরের চারপাশে লিচু গাছের সারি, পুকুরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। তারই মাঝে পাখির কিচির মিচির ডাক আরো মেহিত করে তোলে।
হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বলেন, শীত আসলেই পাখিগুলো প্রতি বছর আমাদের রাণীসাগরে আসে। এখন পাখি শিকারীরা জানে এদের মারা যাবে না। এ ব্যাপারে এলাকার লোকজন খুব সজাগ।
এব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নান জানান,পাখিগুলো যাতে অবাধে বিরচণ করতে পারে এজন্য কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাথে মিটিং করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রচার প্রচারণার কমতি নেই। সকলের সহযোগিতায় পাখিগুলো নিরাপদে আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা বলেন, অতিথি পাখিরা এলাকার মানুষের ভালবাসা পেয়ে আপনজনের মতো হয়ে গেছে। সকলের সহযোগিতায় পাখিগুলো নিরাপদে আছে। যাতে কেউ পাখিগুলো শিকার করতে না পারে সেজন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে।