শীতের সকালে কুয়াকাটা ভ্রমন
গত বুধবার, এক দিনের ডে ট্রিপে ঘুড়ে আসলাম সাগর কন্যা কুয়াকাটা এবং বরিশাল এর গুঠিয়া মসজিদ থেকে।
কুয়াকাটা যাতায়াত এর জন্য লঞ্চ সার্ভিস টাই ভালো, কিন্তু যেহেতু আমাদের হাতে সময় একদিন, তাই আমরা সড়ক পথেই রওনা হই।
টেকনিক্যাল মোড় থেকে হানিফ পরিবহন এ করে রাত ৯ টা ৩০মিনিট এ রওনা হই কুয়াকাটা এর উদ্দ্যেশে। রাত ১২ টায় পৌঁছে যাই ফেরি ঘাট।
বাস এর দীর্ঘ লাইন দেখে, বাস থেকে নেমে হালকা খাওয়া দাওয়া করে নিলাম।
লাইন পেরিয়ে ফেরি পার হতে হতে বেজে গেলো রাত ২ টা ।
ফেরি পার হয়েই বাস চলতে শুরু করলো আপন গতিতে, আর আমরা দিলাম ঘুম। ভোর ৬ টা ৩০ এ আমাদের বাস কুয়াকাটা পৌঁছায়।
বাস থেকে নেমে শীত টা ভালোই অনুভব করলাম। চা এর দোকানে গরম চা খেয়ে, দ্রুত চোলে যাই বিচ এ।ততক্ষনে পূর্ব আকাশে সূর্য উঠে গেছে অনেক খানি, আকাশে লাল সূর্য, আর পাড়ে আছড়ে পড়ছে ছোট ছোট ঢেউ, এ এক অন্য রকম পরিবেশ।
কুয়াকাটায় ঘুড়ার মতো ৭/৮ টা স্পট আছে। কিন্তু যেহেতু আমরা ১ দিন সময় নিয়ে এসেছি, এবং বরিশাল গুঠিয়া মসজিদ দেখবো, তাই ঘুরার জন্য বেছে নিলাম লেবু চর , এবং তিন নদীর মোহনা।
নাস্তা করে বিচ থেকে বাইক ভাড়া করে চল্লাম লেবুচর আর তিন নদীর মোহনার দিকে। এই ১ ঘন্টার বাইক রাইড টি আমার মনে থাকবে অনেক দিন। একপাশে সাগর আর একপাশে বন দেখতে দেখতে আমরা প্রথমে চলে যাই তিন নদীর মোহনা।
জায়গা টা অনেক সুন্দর , তিনটা নদী একসাথে মিলিত হয়েছে, মানুষজন খুব একটা ছিল না , খুবি নিরিবিলি একটা পরিবেশ। তবে বিকালে নাকি অনেক মানুষ হয়। এখানে ও লাল কাঁকড়া দেখা যায় , তবে আমরা দেখিনি।
কিছুক্ষন এখানে আশেপাশে ঘুড়ে, আমরা চলে আসি লেবুচর , লেবুচর এ ভালো ভিউ পাওয়া যাচ্ছিলো , লেবুচর এর পাশেই রয়েছে বন , বন টা নাকি ভাল বড়ো, স্থানীয়রা বললো, আমরা আর বনের ভিতরে যাইনি। আশেপাশে ঘুড়লাম ।
লেবুচর এর সাথেই ৩/৪ টা মাছের দোকান আছে, দর দাম করে একটা ইলিশ মাছ ৩৫০ টাকায় নিয়ে ভেজে খেলাম, টেস্ট ভালোই। কাঁকড়া ও পাওয়া যায়।
মাছ খেয়ে আমরা চলে আসি কুয়াকাটা মূল বিচ এ। ফিরার পথে চাইলে শুটকি বানানো দেখতে পারেন।
১ টা পর্যন্ত আশেপাশে ঘুড়ে, কুয়াকাটা বাজারে দুপুরের খাবার খেয়ে, দুপুর ১ টা ৩০ এ আমরা কুয়াকাটা বাজার থেকে লোকাল বাস এ করে চলে আসি বরিশাল। লোকাল বাস এ সময় লাগবে ৪ ঘন্টা। কুয়াকাটা থেকে ৪৫ মিনিট পড় পড় বাস ছেড়ে আসে বরিশাল এ।
বিকাল ৫:৩০ এ বরিশাল পৌঁছে সেখান থেকে অটোতে করে নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড, সেখান থেকে অটোতে করে বাইতুল আমান জামে মসজিদ , যা গুঠিয়া মসজিদ নাম পরিচিত।
সন্ধ্যার পড় গুঠিয়া মসজিদ এর আসল সৌন্ধর্য ফুটে উঠে। সোনালী আলোয় পুরো মসজিদ হয়ে উঠে আরো সুন্দর। মাগরিবের নামাজ সেখানে পড়ে, কিছু সময় থেকে, ৭ টার দিকে আমরা অটো তে করে চলে যাই লঞ্চ টার্মিনাল।
রাতের খাবার সেড়ে সুন্দরবন ১০, এ করে আমরা ফিরে আসি ঢাকায়।
খরচ (২জনের ) :-
ঢাকা টু কুয়াকাটা বাস টিকেট = ১২০০ টাকা
সকালের নাস্তা = ১৫০ টাকা
বাইক ভাড়া = ৩০০ টাকা(লেবুচর ও তিন নদীর মোহনা)
মাছ ভাজা = ৩৫০ টাকা
দুপুরের খাবার = ২০০ টাকা
কুয়াকাটা টু বরিশাল = ৪৮০ টাকা (লোকাল বাস)
নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড টু = ৬০ টাকা (অটো )
গুঠিয়া মসজিদ
গুঠিয়া মসজিদ টু লঞ্চ টার্মিনাল = ৮০ টাকা (অটো )
রাতের খাবার = ২০০ টাকা
লঞ্চ (ডেক) = ৩০০ টাকা
এক্সট্রা খরচ = ১৮০ টাকা
টোটাল = ৩৫০০ টাকা (২জনের )