ভাসমান পেয়ারা বাজার ভ্রমন

অসময়ে ভাসমান পেয়ারা বাজারের সৌন্দর্য ঃ ভাসমান পেয়ারা বাজার ভ্রমনের যথার্থ সময় হচ্ছে জিলাই-আগস্ট মাস ।তবে গত কয়েক বছর যাবত ঐ যায়গায় বিপুল পরিমানে মানুষ ভীড় করায় আমরা এবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পেয়ারা বাগান ভ্রমন করি এবং আমরা একটি অসাধারন ট্যুর কম্পিলিট করি।

২ রাত এবং ১ দিনের ট্যুরে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ভাসমান পেয়ারা বাজার, ঐতিহ্যময় ‘দুর্গাসাগর দিঘী’ এবং দক্ষিন এশিয়ার অন্যতম সুন্দর মসজিদ ‘গুটিয়া বাইতুল আমান জামে মসজিদ’ ঘুরে আসার ভ্রমন বৃত্তান্ত : লঞ্চে তিন উপায়ে ভাসমান পেয়ারা বাজার ঘুরতে যাওয়া যায় – ১)ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ ঢাকা লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন রাত ৮:৩০-৯:০০ টার মধ্যে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ডেকে ভাড়া:২০০ টাকা। বরিশাল লঞ্চ টার্মিনাল থেকে চৌরাস্তা অটো/রিস্কায় ভাড়া-১০ টাকা। চৌরাস্তা থেকে স্বরূপকাঠির উদ্দেশ্যে বাস যায়। ভাড়া -৫০ টাকা।আপনি চাইলে বানারীপাড়া বাস স্ট্যান্ডেও নামতে পাড়েন-এক্ষেত্রে ভাড়া -৪০ টাকা। ২)ঢাকা-হুলারহাট ভান্ডারিয়া রুটের লঞ্চ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:৩০ এবং ৬:৪৫ টায় মিনিটে যাত্রা শুরু করে।ডেকে ভাড়া :২০০ টাকা।

এই লঞ্চে আপনি সরাসরি বানারীপাড়া লঞ্চ টার্মিনালে নামতে পাড়েন অথবা আপনি বানারীপাড়া লঞ্চ টার্মিনালের পরের ঘাট ছারছিনা নৌঘাট/স্বরূপকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নামতে পারেন।বানারীপাড়া লঞ্চঘাট নেমে ওখান থেকেই অথবা কিছুটা দূরে গিয়ে বানারীপাড়া ফেরীঘাট থেকে ট্রলার রিজার্ভ করতে পারেন।ভাড়া-১০০০-১৪০০ টাকা।(মাঝারী সাইজ)আর আপনি লঞ্চ থেকে যদি স্বরূপকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নামেন সেক্ষেত্রে স্বরূপকাঠি লঞ্চ টার্মিনাল থেকে অথবা স্বরূপকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের পাশ থেকে ৬-৭ ঘন্টায় আটঘর-ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারার বাজার,নোকার হাট সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরানোর চুক্তিতে একই দামে ট্রলার ভাড়া করতে পাড়েন।

অথবা স্বরূপকাঠি লঞ্চঘাট থেকে ৬ কিলোমিটার দূরত্বে কুরিয়ানা বাজার/কুরিয়ানা অটোস্ট্যান্ড (অটো-২০ টাকা) সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে ভাসমান পেয়ারা বাজার অনেক ভিতরে যেতে পারেন।ভাড়া-৩০০/৪০০ টাকা।ট্রলার পেয়ারা বাগানের খুব বেশী ভিতরে যায় না।নৌকা অনেক ভিতরে যেতে পারে। ‘বানারীপাড়া অথবা স্বরূপকাঠি থেকে ট্রলার ভাড়া করলে সেখান ৬ ঘন্টা ঘুরাতে হবে এরকম চুক্তি করে নিবেন এবং স্থানীয়দের সহায়তা নিবেন এক্ষাত্রে।সাতার না জানলে নৌকা ভ্রমন করা বিপদজনক। ‘বানারীপাড়া এবং স্বরূপকাঠি লঞ্চঘাটের পাশেই বাস স্ট্যান্ড রয়েছে। বানারীপাড়া থেকে স্বরূপকাঠির দূরত্ব ৯ কিলোমিটার।

যেখান থেকে ট্রলারে উঠবেন দুপুর ১ টার দিকে আবার সেখানেই ট্রলার থেকে নেমে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করবেন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিবেন এবং তারপর দুর্গাসাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন।বানারীপাড়া এবং স্বরুপকাঠি লঞ্চঘাটের পাশেই বাসস্ট্যান্ড সেখান থেকে বাসে উঠতে পারেন।একই বাস+একই রুট! বানারীপাড়া থেকে দুর্গাসাগর মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব।দুর্গাসাগর জাওয়ার পথেই গুটিয়া মসজিদ দেখা যাবে তবে আমরা তখন গুটিয়া মসজিদ নামবো না!কারন গুটিয়া মসজিদের আসল সৌন্দর্য সন্ধার পরে প্রকাশ পায়!তাই,দুর্গাসাগর যাবেন এবং ২০ টাকা প্রবেশমূল্য দিয়ে দুর্গাসাগর ঘুরবেন।৪৬ একর জমির উপর বিস্তৃত দুর্গাসাগরের চারপাশ ঘুরবেন এবং বিশ্রাম নিবেন।তারপর সন্ধ্যা হওয়ার কিছুক্ষন/অনেকক্ষন আগে দুর্গাসাগর থেকে আলিফাতে/অটোতে করে গুটিয়া মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন।

দুর্গাসাগর থেকে গুটিয়া মসজিদ ৬ কি.মি. দূরত্ব। ভাড়া-২০ টাকা জনপ্রতি।গুটিয়া মসজিদ সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিট পর্যন্ত ঘুরার পর… গুটিয়ার সামনে থেকে বরিশাল লঞ্চঘাট জাওয়ার অটো পাওয়া যায়। গুটিয়া মসজিদ থেকে বরিশাল লঞ্চঘাট ২০ কিলোমিটারের মত দূরত্ব এবং ভাড়া-৪৫ টাকা বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রাত ৮:৩০ থেকে ৯:০০ টার মধ্যে লঞ্চ ছেড়ে আসে।ডেকে ভাড়া-২০০ টাকা। ৩)ঢাকা-থেকে সন্ধ্যায় ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব, অটো ভাড়া-৩৫ টাকা জনপ্রতি।ভিমরুলি থেকে ২০০-৩০০ টাকায় নৌকায় ভাসমান পেয়ারা বাজারের অনেক ভিতর পর্যন্ত যেতে পারেন।সাতার না জানলে নৌকায় ওঠা রিস্ক তবে পেয়ারা বাগানের ভিতরে এতই সরু খাল যে- নৌকা দুর্ঘটনা হলেও একদম বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

ভিমরুলি থেকে কুরিয়ানা বাজার ৩ কিলোমিটার দূরত্ব আর কুড়িয়ানা বাজার থেকে স্বরূপকাঠি বাস স্ট্যান্ড ৬ কিলোমিটার দূরত্ব।তারপর স্বরূপকাঠি বাসে করে উপরের নিয়মে ঘুরবেন..!! ‘দয়া করে, বড় সাইজের একটা পানির বোতল ছাড়া অন্য কোনও প্লাস্টিক,পলিথিন,চিপসের প্যাকেট সহ ‘পচনশীল নয়’ এরকম কোনও জিনিশ নদীতে,খালে অথবা পেয়ারা বাগানে ফালাবেন না অথবা এরকম কোন জিনিশ ঢাকা থেকেই নিবেন না।একটা পানির বোতল নিবেন এবং সেটা আবার সাথে করে নিয়ে আসবেন।

Share:

Leave a Comment