নীল স্বাদু পানির নয়নাভিরাম স্লোভেনিয়া ভ্রমন
এই লেকের পাড়ে বসে যতোদূর চোখ যায় নীল নীল স্বাদু পানির নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে এরপর যখন বাড়ি ফিরি,কেবলি মনে হয়,আর কিছুর কি দরকার ছিলো জীবনে।কিসের টাকা, কিসের দম্ভ,কিসের ক্ষমতা,এ প্রকৃতি নীরবে গ্রাস করবে সবই।
স্লোভেনিয়া ভ্রমন:
স্লোভেনিয়া মধ্য ইউরোপের ছোট একটি দেশ।। স্লোভেনিয়া কে ইউরোপের পূর্ব ও পশ্চিমের সেতু হিসাবে বিবেচনা করা হয়, এর পাশাপাশি স্লোভেনিয়া কে ইউরোপের হার্ট বলা হয়। স্লোভেনিয়া প্রজাতন্ত্র সুন্দর একটি দেশ এবং সুশৃঙ্খল, এর ফলে এখানে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক ভীর জমায়।
স্লোভেনিয়ার গাইড বই মানেই মলাটে একটা অপূর্ব সুন্দর পাহাড়ি হ্রদের ছবি থাকবে, দেখা যাবে দিগন্তে তুষার ছাওয়া আল্পস, চারিদিকে পান্নাসবুজ বন, নীলার মত স্বচ্ছ নীলাভ সেই হ্রদের জল, যার মাঝখানে আছে রূপকথার এক দ্বীপ! সেই দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক দ্বীপ। সেখানে হীরের ফুল, মুক্তোর ফল নেই বটে কিন্তু মাথা উচিয়ে আছে এক স্থাপত্য যা ঘিরে আছে উঁচু উঁচু স্বর্গীয় গাছ। কোথায় এই হ্রদ?
সাধারণত কোন দেশের গাইড বইয়ের মলাটে ঘুরে ফিরে সেই দেশের রাজধানীর কোন এক সুপরিচিত আকর্ষণের কথা স্থান পায়, কিন্তু স্লোভেনিয়ার ব্যাপার আলাদা, এখানে রাজধানী লুবলিয়িনা নয়, সবসময় এই ক্ষেত্রে জয়ের মুকুট শোভা পায় এই পাহাড়ি হ্রদ, শহরের সাথেই নাম মিলিয়ে যার নাম লেক ব্লেড, এবং নৈসর্গিক দৃশ্যের সাথে সাথে মাঝে মানব সৃষ্ট স্থাপত্য মিলে তৈরি করেছে এক নিখুঁত দ্যোতনা, যার কারণে বিশ্বের রোমান্টিকতম হ্রদ হিসেবে লেক ব্লেডকে অভিহিত করা হয়
লুবলিয়ানা যেয়ে বাসে চেপে ৫৫ কিলোমিটার দূরের ব্লেড শহরের অবস্থান , বিখ্যাত সেই হ্রদের তীরেই অবস্থিত একই নামের পার্বত্য শহরটি। লু্বলিয়ালা এয়ারপোর্ট থেকে মাইক্রোবাসে করে সরাসরি ব্লেড যাওয়া যায়, ফলে সময়, পরিশ্রম, অর্থ সবকিছুর অযাচিত সাশ্রয় হবে সেই সাথে মিলবে পাহাড়ি রাস্তায় সিঁদুররঙা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতে দেখার অপূর্ব অভিজ্ঞতা।
ব্লেড এমন কোন আহামরি বড় শহর নয়, বরং হ্রদটির কারণেই লাখ লাখ পর্যটক আসে সেখানে প্রতি বছর, তাদের উপর ভরসা করেই গড়ে উঠেছে পর্যটন, বলা চলে বাসভবনের চেয়ে হোটেলের সংখ্যা কোনমতেই কম না সেখানে।
সারি সারি স্পেশাল ব্লেড নৌকা যেন অপেক্ষায় থাকবে স্বপ্নালোকে যাত্রা শুরুর জন্য,হ্রদের একাধিক জায়গা থেকে এমন কাঠের তৈরি নৌকায় ওঠা যায়, কিন্তু যেখান থেকে তা ছাড়বে সেখানেই আবার এনে নামিয়ে দেবে, অন্য গন্তব্যে নিয়ে যাবে না, সব মিলিয়ে ঘণ্টাখানেকের ভ্রমণ, আধা ঘণ্টা সবুজ স্নিগ্ধ জলে, বাকীটা সময় দ্বীপে।
ঢাকা থেকে লুবলিয়ানা প্লেন টিকেট প্রায় ৯০ হাজার টাকার মতো পরবে,নির্ভর করে কোন কোম্পানি এবং কোন সময় ভ্রমন করছেন থ্রি স্টার হোটেল পরবে প্রায় ৬ হাজার টাকা একদিনের জন্য (২ জন)যেখান সেখানে ময়লা ফেলবেন না ডাস্টবিনে ফেলবেন ।লেকের পানি খুব পরিষ্কার কিছু ফেললে জরিমানা গুনতে হতে পারে।আমি যেহেতু ইতালী থেকে গিয়েছি তাই কতো টাকা খরচ হতে পারে বাংলাদেশ থেকে গেলে এর বেশী তথ্য দিতে পারলাম না।
source: Sani Bhuiyan <Travelers of Bangladesh (ToB)