ড্রাগনের দেশ ভূটান যেভাবে যাবেন ও খরচ
দ্রুক ইয়ুল বা বজ্র ড্রাগনের দেশ পৃথিবীর সব থেকে সুখী রাষ্ট্র ও বলা হয়ে থাকে..কার্বন নেগেটিভ দেশ আরো অনেক বিশেষন আছে তাদের নামে।৩৮০০০ বর্গ কিলোমিটারের দেশটি আপনাকে প্রতিটি মুহূর্তে মুগ্ধ করবে।
ভূটান – থিম্পু, ফোবজিকা,ওয়াংদু, পুনাখা, পারো,চেলেলা পাস, ফুন্টশোলিং..
সর্ব সাকুল্যে ১২ হাজার ৫০০ রুপি + ৩০০০ টাকা
=১৮০০০ টাকা।
পর্ব ৫//১৩ ডিসেম্বর দিনটা আমার জন্য খুব স্পেশাল। অনেক সকালে ঘুম ভেঙে গেলো, বাইরে তখনও হালকা অন্ধকার, নিজেই বের হয়ে গেলাম কিন্তু ঠান্ডার প্রকোপে বেশি ক্ষন বাইরে থাকার সামর্থ্য হয় নি। রুমে এসে রেডি হইলাম এর মধ্যে সবাই রেডি।
আজকে আমাদের ট্যুরের সব থেকে বেশি দূরুত্ব ভ্রমন করতে হবে তাই নাস্তা করে সবাই খুব দ্রুত বের হয়ে গেলাম গাড়ি নিয়ে। এতো সুন্দর একটা জায়গা থেকে চলে আসতে সবারই খারাপ লাগছে, তবু উপায় নেই আসতেই হবে। রাস্তায় আর কোথাও না থেমে পুনাখা সাসপেনশন ব্রীজে চলে আসলাম। আমার দেখা ভুটানের সব থেকে সুন্দর জায়গা গুলোর একটা।
নদীতে একদম কম পানি থাকায় রাফটিং করা সম্ভব হয় নি, যদি আপনাদের সুযোগ থাকে তাহলে এটা মিস করা ভুল হবে।
ব্রীজের পাশেই ওদের একটা শশ্মান আছে যদি ইচ্ছা হয় যেতে পারেন।
ওখান থেকে বের হয়ে চলে গেলাম পুনাখা জং দেখতে, দিনের আলোতে ভূটানের সব থেকে সুন্দর জং।
পুনাখা জং এর এন্ট্রি ফি ৩০০ রুপি, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড থাকলে ১৫০ রুপি, ভেতরে গেলে রুপি নষ্ট হবে না সেটা বলা যায়, যথেষ্ট সুন্দর একটা জায়গা যেখানে অনায়াসে ২-৩ ঘন্টা কাটায়ে দেয়া যায়।
যদি আপনারা কেউ পুনাখা রাতে থাকেন তাহলে দুপুরের পরে গেলে বিকেল উপভোগ করতে পারবেন, আমাদের এতো সময় না থাকায় দ্রুত বের হয়ে চলে আসলাম ফার্টিলিটি টেম্পলে যাবার জন্য।
পাহাড়ে উঠতে হবে বলে আমি যাইনি, সাথের বড় ভাইদের অনেক আকর্ষন তারা কয়েকজন গেলো তত সময় রেস্টুরেন্টে বসে থাকলাম।কারো এসব ব্যাপারে আগ্রহ থাকলে যেতে পারেন।
দুপুরের খাবার খেয়ে যাত্রা শুরু করলাম পারোর উদ্দ্যেশে, শেষ বিকেলে অনেক স্মৃতি আর মুহূর্ত গুলো পিছনে রেখে নতুন শহরের পানে ছুটে চললাম।
পারো এয়ারপোর্টে সেদিন কোন ফ্লাইট ছিল না আর শেষ ফ্লাইট টাইম দুপুর ৩টা ২০ মিনিট, প্লেন টেক অফ দেখতে চাইলে আগে চলে যেতে পারেন।
ঠান্ডা বাতাস, তাপমাত্রা কমতির দিকে তারপরও ওখানে থাকতে খারাপ লাগবে না। তারপর চলে গেলাম পারো জং এ যেটা পারো শহরের প্রানকেন্দ্র, এই শহরটার মায়াবী এক রূপ আছে, মনে হবে টাইম মেশিনে চড়ে ইউরোপের কোন এক গ্রামে চলে এসেছেন। প্রতিটা জায়গায় মোহ কাজ করতে বাধ্য। জং থেকে বের হয়ে বুক দেয়া হোটেল ড্রাগনে গেলাম। রুম পছন্দ না হয়ে চলে গেলাম আরেক হোটেলে, সেখানে রুম না থাকায় শহর থেকে দূরে একটি হোটেলে উঠলাম আর পরের দিনের জন্য আরেকটি হোটেল বুকিং দিয়ে রেখে আসলাম।
শহর থেকে দূরে হওয়ায় সেভাবে আর রাতে বের হওয়ার ইচ্ছা করলো না তারউপর ক্লান্তি।
ফ্রেশ হয়ে সবাই হোটেলের দেয়া কফি খাইতে খাইতে আড্ডা চললো আর পরদিন টাইগার নেস্টের প্লান।
ভূটানের সব থেকে বড় আকর্ষন তো টাইগার নেস্ট।
জীবনে প্রথম বার জন্মদিন দেশের বাইরে কাটাতে হয়, এক মিশ্র অনুভূতি তবে দেশটা ভূটান হওয়ায় দিনটা যথেষ্ট ভাল যায়।
খরচ
মাই হোমস্টে (ফোবজিকা) ১৫০০ রুপি (৩ জন)
সকালের খাবার ৮০ রুপি
দুপুরে ২০০ রুপি ( আমার পুরা লস প্রজেক্ট ছিল, এত বাজে চাওমিন জীবনে খাইনি, ঢাকার পাস্তা স্টেট এর চাওমিন লক্ষগুন ভাল)
রাতের খাবার ২৪০ রুপি
পুনাখা জং এন্ট্রি ১৫০ রুপি।