অপার্থিব সৌন্দর্য নাফাখুমের দেশ ভ্রমণ

পৃথিবীকে আল্লাহতাআলা বানিয়েছেন খুব সুন্দর করে যা বুঝা যায় ধারনা পাওয়া যায় ভ্রমণের মাধ্যমে। ভ্রমণ এমন একটা জিনিস যার মাধ্যমে আল্লাহর সৃস্টিজগত তার কুদরতের কিয়দাংশ বহিঃপ্রকাশ হয় মাত্র। আর এই অপার্থিব সৌন্দর্য দেখে আমরা আমাদের চোখ জুড়াই আর মনপ্রাণ হয়ে উঠে সতেজ যা আমাদের চলার পথে ক্লান্তকর জীবনে এনে দেয় নতুন উদ্যম। তাই তো আমরা আল্লাহর কুদরত দেখতে ৩০ জন মেম্বার বেড়িয়ে পরি বান্দরবনের গহীনে। প্রথমে আমরা রাত ১১ টার ঢাকা থেকে ডলফিন বাসে বান্দরবন পৌছি সকাল ৭ টা বাজে। তারপর ২ টি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করি ২ রাত ৩ দিনের জন্য। প্রথমে আমরা চান্দের গাড়িতে করে থানচি চলে যাই।

থানচির যেতে পাহাড়ের আকাবাকা পথে সেই এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি যা বলে বুঝানো যাবে না। পথে পরে সৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড় ডিম পাহাড়। পথিমধ্যে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নাম রেজিস্ট্রি করে নেই। তারপর থানচিতেও নাম এন্ট্রি করে দুপুরের খাবের খেয়ে শুরু হয় আমাদের রেমাক্রির উদ্যেশ্যে বোটে যাত্রা। বোটে করে রেমাক্রি যাওয়ার অভিজ্ঞতা সেই আরেক নতুন অদ্ভুত ভাল লাগার অনুভূতি। সৌন্দর্য কাহাকে বলে হয়ত নাফাখুম না গেলে এতটা বুঝতাম না আমাদের দেশেই এত সুন্দর যায়গা আছে! পথিমধ্যে রাজাপাথর,বড়পাথর আরও নাম না জানা অসংখ্য ছোটবড় পাথর পরে। সাঙ্গু নদীর দু পাশে বড় বড় পাহাড় দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়। রেমাক্রি পৌছি আমরা শেষ বিকালে যখন সন্ধ্যা ছুইছুই।
সন্ধ্যার পর কটেজে হয় আড্ডা গান গল্প। তারপর রাতের খাবার খেয়ে বিশ্রাম। পরদিন সকালে আসে সেই মহেন্দ্রক্ষন নাফাখুম ট্রেকিং এর যাত্রা। প্রায় আড়াই ঘন্টা ঝিড়িপথ আর পাহাড় ট্রেকিং করে যখন নাফাখুম ঝর্ণায় পৌছলাম তখন এক নিমিষেই সকল ক্লান্তি দুর হয়ে গেল। সবাই তখন এক নতুন ভাল লাগার অনুভূতিতে মগ্ন। প্রায় দেড় ঘন্টা নাফাখুমের ঝর্ণায় দাপাদাপি করে ফিরে আসলাম রেমাক্রিতে। অতঃপর দুপুরের খাবার খেয়ে থানচির উদ্যেশ্যে আবার যাত্রা। ফিরে আসার সময় প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্য আরও সুন্দরভাবে মেলে ধরল। যতই দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি এ বিশাম পাহাড়পর্বত। রেমাক্রিতে এসে রাতে ছিলাম থানচি কুটিরে। রাতে ছিল আড্ডা গান। পরদিন যথারীতি চান্দের গাড়িতে করে ফেরার পালা।

পথিমধ্যে নিলগিরিতে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে নিলগিরি থেকে ফেরার পথে পুরো রাস্তা জুড়ে আমরা মেঘের দেখা পাই। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে এমন টা পাওয়া যায়। পাহাড়ের আকাবাকা রাস্তা তার উপর মেঘের ভিতর দিয়ে চলছে আমাদের চান্দের গাড়ি এর চেয়ে ভাল লাগা আর কি হতে পারে?? বিকালটা কাটালাম নিলাচলে। তারপর নিলাচল থেকে আবার বান্দরবন শহরে এসে পৌছলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে এল। রাতের খাবার হোটেল তাজিংডং এ খেয়ে রাত ৯ টার দিকে আমাদের বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ল।

বিঃদ্রঃ ভ্রমণকালে কেউ ময়লা আবর্জনা ফেলব না। আর চিপসের প্যাকেট বিস্কুটের প্যাকেটগুলো একসাথে জমা করে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিব। মনে রাখতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটা বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে হলে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

Source: Md Salman <Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment