রাজস্থান, যোধপুর ট্যূর বিতান্ত

জয়পুরের মত যোধপুর হচ্ছে রাজস্থানের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী শহর।যোধপুর খুব ই প্রাচীন জনপদ।জয়পুর থেকে যোধপুর এর দূরত্ব প্রায় ৩৩৩ কিলোমিটার। ট্রেনে যেতে প্রায় ৬ ঘন্টা লাগে।ভাড়া ১২০ রুপি।আমরা দিল্লি থেকে জয়পুর গিয়েছিলাম।সেখানে একদিন ঘুরে ভোরের ট্রেনে যোধপুর যেয়ে পৌছাই সকাল ১১ টায়।দিল্লি ফেরার অগ্রীম টিকিট কেটে এরপর যোধপুর শহর ঘুরতে বের হই।

রাজস্থানে মরু অঞ্চলে প্রবেশদ্বার যোধপুর। গোলকধাঁধাতুল্য সংকীর্ণ গলিপথ, পথপার্শ্বে ভাস্কর্যমণ্ডিত বাড়িঘর, হাভেলি আর কারুকার্যময় মন্দিররাজি নিয়েই যোধপুরের আকর্ষণ। দিনে দিনে অটো বা গাড়ি নিয়ে দেখে নেওয়া যায় যোধপুরের দর্শনীয় স্থানগুলি। প্রধান আকর্ষণ অবশ্যই ৫ কিমি দীর্ঘ মেহেরানগড় দুর্গ। দুর্গের চারটি প্রবেশ পথ রয়েছে-জয়পোল, ফতেপোল, লোহাপোল। পাহাড় ঘুরে রাস্তা গিয়েছে দুর্গের মধ্যে। দুর্গের মধ্যে দেখে নিন মোতিমহল, শিশমহল, ফুলমহলা, শিলেখানা, দৌলতখানা প্রভৃতি প্রাসাদগুলি। ভিতরে রয়েছে রাজপরিবারের সংগ্রহশালা। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত দুর্গ খোলা থাকে। দুর্গের পাদদেশে সরোবরের ধারে মহারাজা যশোবন্ত সিং এর স্মারক সৌধ যশোবন্ত থাডা। এটিও সকাল ৯ টা থকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যোধপুরের আর এক আকর্ষণ শহরান্তে চাত্তার হিলে ইতালীয় শৈলীতে তৈরি গোলাপী মর্মরের উমেদভবন প্যালেস। প্রাসাদে এখনও রাজপরিবারের বাস রয়েছে। আর একাংশে রয়েছে প্যালেস মিউজিয়াম।

১.মেহেরানগড় দুর্গঃ
1400 শতকের মাঝামাঝি রাও যোধা এই দূর্গটি নির্মাণ করেন। এই দূর্গ থেকে আপনি গোটা যোধপুর দেখতে পাবেন। রাজপুর ঘরানার নকশা করা আকর্ষণীয় আঙ্গিনা, কাঁচের জানলা বিভিন্ন মহল আপনাকে এক লহমায় নিয়ে যাবে সেই রাজপুর যুগে। আভিজাত্য আর শৌর্যের অসাধারণ মেলবন্ধন খুঁজে পেতে মেহেরানগড় আপনাকে যেতে হবেই। ভেতরে রয়েছে একটি মিউজিয়ামও। যেখানে আপনি রাজকীয় পালকি, অস্ত্র ও পোশাকের সম্ভার দেখতে পাবেন। রোমান্টিক ডিনারের জন্য যেতে পারেন দূর্গের মধ্যেকার চকেলাও মহল নামের একটি অত্যাধুনিক রেস্তোরাঁতেও।

2. উমেইদ ভবন প্যালেসঃ
ডেস্টিনেশন ওয়েডিং এর ভারতের অন্যতম সেরা ঠিকানা হল এই উমেইদ ভবন প্যালেস। তাজ হোটেল রয়েছে এই দায়িত্বে। মহারাজা উমেদ সিং-এর নামে পরিচিত এই রাজকীয় প্রাসাদের একটি অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত, যা প্রকৃতপক্ষে একটি বিশাল জাদুঘর।

৩.জাসওয়ান্ত থাডাঃ
মেহেরানগড় দুর্গর কাছেই রয়েছে জাসওয়ান্ত থাডা। মহারাজা দ্বিতীয় জসওয়ান্ত সিংহের নামেই এই স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছিল। বাগান এবং একটি হ্রদের সৌন্দর্য আপনাকে বিভোর করবেই। মার্বেলের তৈরি কেল্লা, উজ্জ্বল রংয়ের অভিজাত দরজা আপনার ফটোশুটের অসাধারণ জায়গা হতেই পারে।

৪.রাজস্থানী থালি, কচুরি এবং মিষ্টিঃ
যোধপুর বহু মানুষেরই পছন্দের ফুড ডেস্টিনেশন। জিপসিতে 29 টি পদ দিয়ে রাজকীয় রাজস্থানী থালি একবার খেয়ে আপনাকে দেখতেই হবে।জনতা স্যুট হোমের পেঁয়াজ কচুরি, আর জিলিপি, শানদার স্যুইট হোমের গুলাব জামুন কি সবজি, বা হানওয়ান্ত মহলের লাল মাস আর বাটের স্বাদ না নিয়ে যোধপুর ছেড়ে আপনি যেতেই পারবেন না।

৫.স্থানীয় বাজার ও কেনাকাটাঃ
রূপোর গয়না আর জাঙ্ক জুয়েলারির জন্য যোধপুর বিখ্যাত।কম্বল এবং কার্পেট, রাজস্থানী জুতো, হ্যান্ডলুম কাপড় ইত্যাদি সংগ্রহ করার জন্য যোধপুরের বাজার ঘুরে দেখতে হবে আপনাকে। এখানকার কয়েকটা বিখ্যাত বাজার হল সারাফা বাজার, ত্রিপোলিয়া বাজার, ক্লক টাওয়ার মার্কেট, নয়া সড়ক ইত্যাদি।

Source: Shopnil Sagir‎ <Travelers Of Bangladesh (TOB)

Share:

Leave a Comment