রাজশাহী থেকে যশোর ভ্রমনে যেভাবে যাবেন

রাজশাহী থেকে যশোর যাত্রা শুরু খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে। ট্রেনে রাজশাহী থেকে যশোর পৌঁছতে পাঁচ ঘন্টা লাগে। সকাল ৬.৪০ এর ট্রেনে দুপুর ১২.০০ এ পৌঁছলাম যশোর স্টেশনে। যশোরে স্টেশনের পাশেই কিছু হোটেল-রেস্তোঁরা রয়েছে। দুপুরের খাবারটা ওখানেই সারলাম। এরপর ছোট ভাই রিসিভ করতে আসল। যশোরে রাজশাহীর তুলনায় অটো ভাড়া অনেক বেশী। অটোতে চেপে গেলাম দড়াটানায় যেটা যশোর পৌরশহরের সবচেয়ে উন্নত এলাকা। এখানে হোটেল, রেষ্টুরেন্ট সব রয়েছে। যশোরে ভালোমানের কিছু রেষ্টুরেন্ট আছে যেমন, আড্ডাখানা, আর যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের পাশে চিলেকোটা। দুইটাই দৃষ্টিনন্দন, সাজানো হয়েছে নান্দনিকভাবে।

বিকালবেলা যশোর কালেক্টরেট ভবনে ঘোরাঘুরি, তারপর যশোর পৌর পার্কে কিছুক্ষণ আড্ডা। পরদিন সকালে দড়াটানা থেকে যশোর বাস স্ট্যান্ডে, লক্ষ্য মধুপল্লী। স্টেশন থেকে কেশবপুরের বাস ধরতে হবে যেটা সাতক্ষীরা যায়। যশোর শহর থেকে কেশবপুর ৪০/৩৫ নিবে প্রতিজনে। পৌঁছতে ১.১৫ মিনিট মত লাগবে কেশবপুর নেমেই দেখা মিলবে সারিবদ্ধ কিছু অটোর। অটোগুলি সাগরদাঁড়ি যাবে যেখানে মধুপল্লী অবস্থিত। একঘন্টার মধ্যেই ইজিবাইক/অটোতে পৌঁছে যাবেন সাগরদাঁড়ি। সাগরদাঁড়ি যাওয়ার রাস্তাটা আপনার বেশ ভাল লাগবে, দুই পাশে মাইলের পর মাইল পাট গাছ। পুরো কেশবপুরই যেন পাটগাছে ভরা হাসানপুরের পরেই সাগরদাঁড়ি। এখানেই রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের পৈতৃক বাড়ি, জাদুঘর ও লাইব্রেরী। এখানে ঢুকতে আপনাকে পনের টাকা মূল্যের টিকেট কাটতে হবে।

ঢোকার পরপরই চোখে পড়বে নয়নাভিরাম একটি দিঘী। দীঘিতে এখন গোসল করা যায় না প্রশাসনের নিষেধের কারণে। এই দীঘিতে মধুসূদন পরিবারের পুরুষরা গোসল করত, যার ঠিক আরেকটু পূর্বে রয়েছে আরেকটি দিঘী যেখানে মধুসূদন পরিবারের মেয়েরা গোসল করত। কথিত আছে, মাইকেল কপোতাক্ষ নদেই গোসল করতেন। কপোতাক্ষ নদ মাইকেলের বাড়ির পাশেই। মাইকেলের বাড়ি দেখা শেষ করে চলে যেতে হবে তার ঠিক বিপরীতে মধুসূদন জাদুঘরে, এখানে আপনার টিকেট কাটা লাগবে না। এরপর চলে গেলাম জাদুঘরের পশ্চিম দিকে একটি খেলার মাঠ আর তার পাশেই বিশাল মঞ্চ নাম “মধুমঞ্চ”। এরপাশেই রয়েছে কিছু খাবার হোটেল।

মোটামুটি ভালোমানের খাবার পাওয়া যায় এখানে। খাওয়া শেষ করে এবারের লক্ষ্য ঝাপা বাউড়। সাগরদাঁড়ি থেকে ঝাপা বাউড় যেতে হলে আপনাকে বাইকে চেপে যেতে হবে। সরাসরি কোন গাড়ি নাই, এজন্য ভেংগে ভেংগে যেতে হবে বরং তারচেয়ে বাইকে যাওয়াই ভাল। দুইজন ২০০ টাকা নিবে। সাগরদাঁড়ি থেকে ঝাপা বাউড় যাওয়ার রাস্তাটা খুব সুন্দর৷ দুইধারে পাটগাছ আর পাটগাছ। ৪৫ মিনিট মত আপনাকে বাইকে চড়তে হবে। তারপর চলে আসলাম ঝাপা বাউড়ে ।এখানে আছে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু। এখানে নৌকাই ও চড়তে পারেন। দামদর ঠিক করে উঠতে হবে।এবার ফেরার পালা, বাইকে চেপে সোজা কেশবপপুর। কেশবপুর থেকে চলে আসলাম যশোর। ভাল লাগল যশোর। এখানে দ্রব্যমূল্যের দাম অপেক্ষাকৃত কম, তবে৷ থাকা, খাওয়া, আর গাড়ীভাড়া অনেক বেশী।

Source: কে.এ.এম. সাকিব‎ < Travellers Of Bangladesh

Share:

Leave a Comment