অপার্থিব সৌন্দর্যের খোঁজে যেতে পারেন সোনার চর

সূর্যের আলোতে প্রতিটি বালুকণা সোনার মত দেখায় বলেই এ চরের নামকরণ হয়েছে সোনার চর।
সকাল-দুপুর-বিকেল পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা দ্বীপ। নদী আর সাগরের জল আছড়ে পড়েছে চারপাশে। সুর্যের আলোয় চিকচিক করে বালি। প্রকৃতির সাজে সজ্জিত এই দ্বীপটিতে উড়ে আসা অতিথি পাখিদের কলকাকলি সমুদ্র সৈকতের অপরূপ রূপকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। আর শোনা যায় ঝাউ বাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা বাতাসের শোঁ-শোঁ শব্দ।

বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে পটুয়াখালী জেলায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে দ্বীপ রাঙ্গাবালি উপজেলায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সজ্জিত স্থান সোনার চর। এখানে রয়েছে বিস্তীর্ন বনভূমির পাশাপাশি ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। অবলোকন করা যায় প্রকৃতির নীলিমায় ভরা মনোরম দৃশ্য। শেষ বিকেল থেকে শুরু হয় লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। এ ছাড়াও দ্বীপটিতে রয়েছে বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী।
সূর্যের আলোতে প্রতিটি বালুকণা সোনার মত দেখায় বলেই এ চরের নামকরণ হয়েছে সোনার চর।

পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষিত এ বনভূমি অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। এ চরে প্রতিদিন ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন বৈচিত্রময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। কবে কখন চরটি জেগে ওঠে সঠিক তথ্য কারো জানা না থাকলেও সোনার চরের মোট আয়তন ৬ হাজার একর (৯ দশমিক ৩৮ বর্গমাইল)। এখানে রয়েছে বন বিভাগের একটি বিট অফিস।

সোনার চরে কেওরা, গেওরা, কাকরা, সুন্দরি, গোলপাতা, বাইন, পশুর, ঝাউ ইত্যাদি প্রজাতির বৃক্ষের সমাহার রয়েছে। শীতে এ চরে ১০ লক্ষাধিক অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। গাংচিল, গাংকবুতর, বালিহাঁস, পাতিহাঁস, সাইবেরিয়ান লাল হাস, পানকৌড়ি, বক, মদনটাক শীতে ছুটে আসে এখানে। শতাধিক জেলেরা এ বনের আশেপাশে মাছ শিকার করেন। এখানে চিংড়ি, ছুঁড়ি, লইট্টা, ফাইস্যা, বৈরাগী, রামচোচ, কোরাল, পোমা, মেদ, টেংরা, গুলিশা, শাপলাপাতা, পৃভিতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। এ ছাড়া চরের বনে রয়েছে বানর, খেঁকশিয়াল, উদবিড়াল, বেজী, বাঘডাসা, সাপ, কচ্ছপ ও কাঁকড়া।

কিভাবে যাবেন সোনার চর

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে অবস্থান করছে সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাত পটুয়াখালী। সেখান থেকে দ্বীপরাজ্য রাঙ্গাবালী হয়ে আপনাকে জলযানে পৌঁছাতে হবে সোনারচরে। রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যেতে হবে গহিনখালী লঞ্চঘাট। সেখান থেকে লঞ্চযোগে প্রায় একঘণ্টার নৌপথ পাড়ি দিয়ে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন। চরমোন্তাজ থেকে ট্রলারযোগে আরও একঘণ্টার পথ পেরিয়ে দেখা মেলে সোনারচরের।
Source: Master Travelers

Share:

Leave a Comment