সান্দাকফু ট্রেক ৭ দিন

সোনাম জি এর রুটিনমাফিক আদেশ সকাল ৫:৩০ এ উঠে যাবার। কিন্তু এই লোকটার আদেশ নিষেধ কোনদিন কেউ মানে বলে মনে হয় না। কিন্তু এইবার সে ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঠিকই এসে ভয়ংকর ধাক্কাধাক্কি শুরু করলেন! রুমে কোন জানালাই ছিলো না তাই বোঝারও উপায় ছিল না কি হচ্ছে। হুড়মুড়িয়ে বেড়িয়ে এসেই দেখি বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার, এর মাঝে সোনাম জি এর এক গাল হাসি, “ভাইয়া জি, ভিউ বহত আচ্ছা মিল রাহে হে, আজাও আজাও জালদি সে” বলে সে নিজেও দৌড়। আমি তৌফিককে ডেকে তোলার আগেই সে মোবাইল গো প্রো নিয়ে রেডী। আমিও কোন মতে ডাউন জ্যাকেটটা গায়ে দিয়েই, ক্যামেরা নিয়ে, স্যান্ডেল পায়ে দিয়েই দৌড়। রুম থেকে বেড়িয়েই দেখতে পেলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা আর পান্ডিম। ভয়ংকর সুন্দর বলতে কি বোঝায় আজই বোধ হয় বুঝলাম। ভালো ভিউ পাবার জন্য, ১৫/২০ মিটার বেয়ে উঠে গেলাম মুহুর্তেই সেই চপ্পল পায়ে দিয়েই। সেখান থেকে যতদুর চোখ যায়, সব জায়গা অন্ধকার। শুধুই, কাঞ্চনজঙ্ঘা, পান্ডিম, পশ্চিমে থ্রী সিস্টার্স, কুম্ভকর্ণ; আরও পশ্চিমে হিমালয়, লোৎসে, মাকালু-র চুড়াগুলো জ্বলজ্বল করছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা আর পান্ডিমের ধারালো মাথাগুলো যখন খেয়াল করলাম তখন তখন বুকের মাঝটা কেমন যেনো করে উঠলো। কি ধারালো সে জায়গাগুলো। অন্নপুর্ণারটা দেখেছিলাম, ভিডিওতে, তাও আবার বরফ পড়ে, বেশ চওড়া হয়েছিল। কিন্তু এই তো এক্কেবারেই ধারালো কাঁচের মতো। মাত্র ৬০ কিলো দূরে হবার কারণেই বোধহয় খালি চোখে এত্ত কিছু দেখা যায়।
পাহাড়ের এত্ত বিশালতা৷ আগে বুঝি নি। কিছুক্ষিনের মাঝেই সূর্য আরও ইঞ্চি খানেক বেয়ে উপরে উঠলেই, কাঞ্চনজঙ্ঘার চুড়া লালচে হলুদ হয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠলো। ভয়ংকর মানে কিন্তু ভয় পাবার মতোই। ছবিতে এত্ত ছোট্ট দেখায়, যে সে ভয়, সেই বুকের ধুকপুক, বোঝানো যাবে না। ক্যামেরায় চোখ রেখে জুম করেই দেখলাম তুষার-ধ্বস (Avalanche)। আগেই জেনে গিয়েছিলাম, সেপ্টেম্বর ৯ থেকে অক্টোবর ৯ পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা সামিটের জন্য এক্সপেডিশন টিম ক্যাম্পে বসে আছে। আজও তাদের হয়ত সামিট হবে না, ভেবে খারাপ লাগলেও, হিংসাটা এক বিন্দুও কমলো না।
ক্যামেরার সেটিং কোন রকম দিয়ে ফটাফট ছবি তুলতে লাগলাম। কাঞ্চনজঙ্ঘার (৮৪৭৬ মি) পুর্বে পান্ডিম (৬৬৯১ মি), আর পশ্চিমে কাবরু উত্তর (৭৩৩৮ মি), কাবরু দক্ষিন (৭৩১৮ মি), কাবরু ডোম(৬৬০০ মি), রাঠোং (৬৬৮২ মি) আর কুম্ভকর্ণ (৭৭১০ মি) এর সাথে আরে কিছু পাহাড় মিলে হলো “স্লিপিং বুদ্ধা”। স্লিপিং বুদ্ধার মুর্তি যারা যারা দেখেছেন তারা খুব সহজেই রিলেট করতে পারবেন। আর এই কারনেই এইটাকে স্যাক্রেড রেঞ্জ ধরা হয়।
ক্যামেরা ঘুরিয়ে আরও বায়ে (স্লিপিং বুদ্ধার পশ্চিমে) হঠাৎ করে মেঘের মাঝ থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পড়লো থ্রী সিস্টার্স। আর এর পাশ থেকেই শুরু কোমোলঞ্জো (৭৮০৪ মি), মাকালু (৮৪৬২ মি) এভারেস্ট (৮৮৫০ মি), লোতসে (৮৫১৬ মি), চো ওয়ু (৮২০১)। আপাত দৃষ্টিতে মাকালু আর কোমোলঞ্জো কে এভারেস্ট এর তুলনায় বেশ বড় মনে হলেও, এভারেস্ট আসলে এই দুই পাহাড় থেকে অনেক পিছনে, তাই দুরত্বের জন্য এই দৃষ্টিভ্রম।
বেশ অনেক্ষনের জন্য ভিউ পাবো না জানতাম, কিন্তু সেটাও যে ১৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যাবে, আশা করি নি। হঠাৎই যেন কোথা থেকে মেঘ এসে ঢেকে দিল এভারেস্ট আর তার আশে পাশের পাহাড়গুলো। এরপর বাকীসব ঢেকে দিল এক এক করে, পশ্চিম থেকে পুর্বে।
৬টা নাগাদ নেমে এসে দেখি ঘরের সবাই সকালের নাশতা বানানোতে ব্যস্ত। কিছুক্ষন বসলাম রান্নাঘরে। এই ফাঁকে সোনাম জি বসলেন আজকের ট্রেক প্ল্যান নিয়ে। আজকে আমাদের চলে যেতে হবে ফালুট, ৩৬০০ মিটার উচ্চতায়। সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা আরও কাছে। ভিউ নিয়ে ভাবতে ভাবতেই দুঃসংবাদ দিলেন আমাদের গাইড। মোট ২০ কিলোর এই ট্রেকে প্রচুর চড়াই উৎরাই, কিন্তু মাঝে ৬ কিলো আছে বেশ খাড়া। একে তো ২০ কিলোর ট্রেক তার উপর আবার ৬ কিলোতে ৬০০ মিটার চড়াই। তাও আবার ১৪ কিলোর আগে কোন দোকান নেই, মানে বিরতিহীন।
নাশতা চলে এলো এর মাঝেই। সবজি, পাপড়, আচার আর সাথে গরম গরম রুটি দিয়ে শেষ করলাম খাওয়া। খেয়েই বিল মিটিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ফালুটের উদ্দেশ্যে।
  • নাশতায় মোট খরচ ২৬০ রুপী
  • হোম-স্টে বেড ৪০০
  • মোট খরচ ৬৬০ রুপী
  • জনপ্রতি ৩৩০ রুপী/৪০২ টাকা
আজকের ট্রেকের শুরু থেকেই বেশ আরামদায়ক আবহাওয়া। রাস্তাও বেশ আরামের। সাবারকুম আমাদের পরের বিরতি। সে পর্যন্ত ১৪ কিলো যার ১০ কিলোই ডিসেন্ডিং। ডিসেন্ডিং যদি ঠিক মতো করা যায় তাহলে ঘন্টায় ৪ কিলোও যাওয়া সম্ভব।
ট্রেকের রাস্তায় প্রচুর উঁচু নীচু বড় ছোট বোল্ডার। নামার সময়ে খুব কষ্ট হয়, গোড়ালী আর হাটুতে অনেক প্রেসার পড়ছে। তাই মাটির রাস্তা ধরলাম। মাটির রাস্তা আমরা ২য় দিন থেকে এভোয়েড করছিলাম, জোকের জন্য। মাইক্রোস্কোপিক সাইজের জোক কখন কোথায় ঢুকে যায় ভয়ে আমরা তটস্থ হয়ে ছিলাম। এরপর থেকে মাটির রাস্তা বাদ দিলেও আজ আবহাওয়া ভালো, বৃষ্টি বাদলের ছিটে ফোঁটা নেই, চলে এলাম গ্রামের উঁচু নীচু রাস্তাতে।
কিছুদুর এগোতেই দেখলাম, ছবির মতো সুন্দর এক গ্রাম। মাঠের পর মাঠ, মাঠে মাঝে ইয়াকের দলের বিচরণ। ফাঁকার মাঝে মাঝে বাজ পড়া কিছু পাইন গাছ দাঁড়িয়ে আছে। শুনলাম এইখানে নাকি ইয়াক ফেস্টিভ্যালও হয়। এই বছরের ফেস্টিভ্যালের কিছু বোর্ড, গেট চোখে পড়লো। সামনের বছরের প্রিপারেশনও শুরু হয়ে গেছে যা বুঝলাম।
টানা অনেক্ষন ঢালু রাস্তায় নামতে কষ্ট ভালোই হচ্ছিল। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, উঁচু রাস্তা কেন আসে না। টানা ১০ কিলো নীচে নামতে নামতে হাটুতে খুবই কষ্ঠ হচ্ছিলো ৫ কিলো পর পর থেমে প্রায় ১০ কিলো এসে একটু বসলাম ঘাড় থেকে সব নামিয়ে, শুরু হলো হালকা করে বৃষ্টি। রেইন কোট ছেড়েছি অনেক আগেই, ব্যাগের কাভার টান দিয়ে ব্যাগ ঢেকেই জ্যাকেট পরে নিলাম। মেজাজ আস্তে আস্তে খারাপের দিকে। সামনেই আবার ৪ কিলো এসেন্ড।
আমি বরাবরই খুব স্লো ট্রেকার। তৌফিক আবার বেশ স্ট্রং, ব্রেক নিলেই সমস্যা হয়ে যায়, এক টানা কন্সট্যান্ট স্পীডে ভালোই ট্রেক করে। ওকে বলে দিলাম আমার জন্য অপেক্ষা না করে এগিয়ে যাবার জন্য। মুহূর্তেই দৃষ্টির বাইরে চলে গেলো। ইমার্জেন্সী অবস্থার জন্য ছিল হুইসেল, ১ হুইসেলে, “কই তোমরা”, ২ হুইসেলে “বাচাও আমারে”
উপরে ট্রেক করে ওঠার এক পর্যায়ে, বার বার ঘড়ি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কখন এই ৪ কিলোর ৪০০ মিটার এসেন্ড শেষ হবে। প্রতি ১০ পা ফেলার পরেই কিছুক্ষন থেমে রেস্ট নিয়ে আগাচ্ছিলাম। আপাত দৃষ্টিতে এই উঁচুতে ওঠা বেশ সহজ মনে হলেও, এই উচ্চতার সাথে মানিয়ে নিয়ে টানা এত্ত লম্বা একটা ট্রেক করার পর, এক সময়ে এসে এই এই সামান্য ৬/৭ ইঞ্চি উপরে পা তুলে তুলে এই পাথরের বা মাটির ধাপ পার করাটা অমানুষিক কষ্ট। এক পায়ের পর এক পা, এক মিনিটের পর আরেক মিনিট, এইভাবে ঘন্টা, কিলো, পায়ের পরে পা রেখে রেখে এগিয়ে চললাম।
ধুকতে ধুকতেই চলে এলাম সাবারকুম গ্রামের মাঝে। পথে দুটো কুকুর পিছু নিল, ট্রেকের পথে কিলো খানেক সাথেই থাকলো। একাই যেহেতু আগাচ্ছিলাম, কুকুরগুলোর সাথে কথা বলতে বলতে ভালই লাগছিল। ট্রেকে একা চলার চেয়ে কথা বলতে বলতে স্পীড মেইন্টেইন করে চলতে পারলে ট্রেক অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। কুকুরগুলোও যেন বুঝতে পারছিল, সাথেই সাথেই হাটছে। যখনই মলি ফরেস্ট হাট নজরে এলো, কুকুর দুটোও চলে গেলো। না রেডিও ফুর্তির ভুতের কাহিনী না। এখানের কুকুরগুলো এমনই। এরা লোকালদের স্বভাব জানে, এটেনশন পাবার জন্য অনেক চেষ্ঠা করে, এরপর আবার চলেও যায়।
মলি ফরেস্ট হাটে পৌছালাম তখন লাঞ্চের সময়, কিন্তু লাঞ্চের প্ল্যান তখন বাদ দিলাম। সাউথ কোরিয়ান আরেক ট্রেকারের সাথে আলাপ সেখানে, সেও আমাদের পথেই এগুচ্ছে, সিউং নাম। অত্যন্ত লাজুক স্বভাবের মানুষ, যা সাউথ কোরিয়ান সিনেমা দেখে বুঝি নাই। ব্যাগে থাকা খেজুঢ়, চকোলেট বের করে আমরা ৩ জন শেয়ার করলাম, সিউং এর ছিল কলা, তাও খেয়ে নিলাম। কোরিয়ান কলা খেয়ে ভালোই মজা পেলাম😋। গল্পো করলাম কিছুক্ষন বসে, পরে দেখি ঘড়িতে ২টার কাছাকাছি। এখনো বাকী ৭ কিলো, যার মাঝে ২ কিলো আবার খাড়া। রেডি হয়ে নিলাম চট করে। আরও ৪ ঘন্টার ট্রেকের জন্য।
সাবারকুম পর্যন্ত বেশ কিছু শর্টকাটের জন্য রাস্তা কমিয়ে আনতে পেরেছিলাম। এবারও ভাবছি কিছু রিস্ক নিয়েই নেই। গত কয়েক দিনের ট্রেকের মাঝে কখনোই ঘরের এই খাওয়াগুলো খাওয়া হয়নি। আজ খেয়ে মনে হলো এর চেয়ে ভালো কিছু হতেই পারে না। আমার মায়ের ট্রেকিং এর কোন খবর জানি না, তবে তাকে এই ধন্যবাদটুকু পৌছানোর দায়িত্ব নিলাম, যদিও দায়িত্ব পুরণ হবে কি না জানি না। মায়েদের কখনোই এইসব বলা হয়ে ওঠে না।
খেজুঢ়ের বা চকোলেট বিস্কিট কোন কাল্প্রিটের কাজ ছিল জানি না, আমরা রীতিমত দৌড়েছি। শর্ট কাট, লং কাট সব মেরে, সাড়ে চারটা নাগাদ ফালুট। যদিও ফালুটের শেষ ২ কিলো পানির বাইরে কই মাছের মতো “তড়পাতে তড়পাতে” উঠলাম। তৌফিক আর সোনাম জি আগেই পৌছে দাঁড়িয়েছিল আমার জন্য। আমি আসার পর সামান্য কিছু ফটোসেশন চালিয়েই চলে গেলাম ট্রেকার্স হাটে।
৫ বেডের এক বিশাল রুম পেলাম ভাগে। এই সুখ দুঃক্ষে পরিণত হতে বেশীক্ষণ লাগবে না। এই বিশালতাই হবে কাল। ট্রেকার্স হাটগুলো হোস্টেলের মতো। এক একটা রুমে অনেক গুলা করে বিছানা দেয়া। কম্বল লেপ সব দেয়াই থাকে। কিন্তু হোম-স্টে এর তুলনায় রুম গুলো বড় হবার কারণে, ঠান্ডা অনেক। রুমে এসে ব্যাগ ঘাড় থেকে নামানোর পর, নড়াচড়ার কোন শক্তিই অবশিষ্ট থাকে না। এরপর এসে এই জুতা খোলা তারপর হাত পা ভাঁজ করে জামা কাপড় খোলা এত্ত বড় শাস্তি মনে হয় কোথাও পাই নাই। তবে এসে যদি ধপাধপ সব পালটে এরপর রেস্টে যাওয়া যায়, এর চেয়ে ভালো আর কিছুই হয় না। চেঞ্জ হয়েই ডাক পড়লো লাঞ্চের, স্যুপ নুডলস দেখে খাবার ইচ্ছে মরে গেলেও, মুখে দেয়া মাত্র, ক্ষুধা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। গপাগপ খেয়ে নিতে নিতেই হাটের ম্যানেজার আর তার অন্যন্যদের সাথে দেখা হয়ে গেলো।
  • লাঞ্চে মোট খরচ ১২০ রুপী
  • জনপ্রতি ৬০ রুপী/৭৩ টাকা
আমরা এসে পৌছানোর কিছুক্ষন বাদেই অন্ধকার করে শুরু হলো ঝড়। এত্ত উঁচুতে এই প্রথম এমন ঝড়ের মুখোমুখি হলাম। আগের হোম-স্টে তে সোলার পাওয়ার থাকবার জন্য রুম, টয়লেট গুলোতে লাইট ছিল। কিন্তু আজ এইখানে একটা ক্যান্ডেল ছাড়া কিছু পেলাম না। ঝড়ের জন্যও হতে পারে, হয়ত সোলার পাওয়ার কাজ করছিল না। কিন্তু এই অন্ধকার আর ঝড়ের ভয়ংকর শব্দে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হবার জোগাড়। ‘৯১ এর চট্টগ্রামের ঝড় দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছিল। এই ঝড় তার চেয়ে কোন অংশেই কম মনে হচ্ছিলো না। পরে শুনলাম এ নাকি ঝড় না, সাধারণ বৃষ্টিই, শুধু একটু জোড়ে বাতাস হচ্ছে। অল্টিচিউডের জন্য এমন মনে হচ্ছে।
লাঞ্চ করে এসে ক্লান্তির পাল্লায় পড়ে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টের পেলাম না। ৮টার দিকে দরজায় সোনাম জির ধাক্কায় ঘুন ভাংলো। ডিনার রেডি, কিন্তু স্লিপিং ব্যাগ থেকে বেড়িয়ে খেতে যাওয়াটা পাহাড় জয়ের থেকে অনেক কঠিন মনে হলো। খেতে গিয়ে দেখি আমাদেত সাথের সেই সাউথ কোরিয়ান ট্রেকার, সিউং-ও আছে এখানে। সাথে আছে জনি, ব্রিটিশ এক ট্রেকার। এদের সাথে কথা হয়ে বুঝলাম আমরা কত্ত ঢিলা। যে রাস্তা আমাদের পেরোতে ৮ ঘন্টা লাগে সে রাস্তা তারা শেষ করে এসছে ৪/৫ ঘন্টায়। আর তাদের সাথে কথা বলেও মনে হচ্ছে, এ যেন কোন ব্যাপারই না। চটপট মুভমেন্ট, এনার্জেটিক কথা বার্তা আমরা তো পুরাই নুয়ে পড়া গাছ।
ডিনারে পেলাম, ভাত, সবজি, ডাল আর পাপড়ের আচার তো আছেই। ঠান্ডার কারণে এই এলাকায় সবাই গরম পানি খায়। আজকে আমিও খেলাম, তখন মনে পড়ল এদের রাক্সি এর কথা। শরীরের ব্যাথায় শহীদ হবো এমন অবস্থায় জনি আর সিউং কে বললাম রাক্সির কথা, তারা তো রাজী। এক লিটার একটা নিয়ে নিলাম ১৫০ রুপীতে। অবশ্যই আমরা পুরোটা খাইনি। কালকের ট্রেকের কথা ভেবে। আমরা সামান্য খেয়ে বাকীটা ছেড়ে দিলাম ৩ গাইডের জন্য।
  • ডিনারে মোট খরচ ৩৮০ রুপী
  • জনপ্রতি ১৯০ রুপী/২৩২ টাকা
  • (রাক্সির খরচ তা এইখানে বাদ দিয়ে ধরা)
রাক্সির হাল্কা প্রভাবেই সম্ভবতঃ শুয়ে পরা মাত্রই চোখ লেগে আসতে লাগলো। কাল আমাদের ট্রেকের লাস্ট পার্ট, কালকের আরামের কথা ভাবতে ভাবতেই শরীরে আরাম লাগতে লাগলো। ঝড় তখনো চলছে। রুমে শুধুই একটা মোমবাতি। ঘুমের জন্য এর চেয়ে ভালো … ঘরর ঘরর ফুসসসসসসসস!!
আজকের মোট খরচ ৪০২+৭৩+২৩২=৭০৭ টাকা (জনপ্রতি)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। পরিবেশ কে ভালোবাসুন যত্র তত্র আবর্জনা না ফেলে পরিবেশ কে দূষণমুক্ত রাখুন।
Share:

Leave a Comment