শিলং জার্নি বৃত্তান্ত

আজ আমি শিলং। গতকালের লেখায় লিখেছিলাম রাত ৮টা ৩০ এর পর আমরা শিলং শহরে আসি। সবাই অনেক টায়ার্ড। মাঝ রাস্তায় আমার হঠ্যাত করে শরীর খারাপ হওয়ায় গাড়ি কিছুটা সময় অপেক্ষা করেছিল পাশে দাঁড়িয়ে। সেখানের সবাই এত সভ্য যে তাদের ব্যাপারে বাড়িয়ে বলার মতন কিছু নাই।

শিলং-এ পৌঁছালাম রাত ৯টার দিকে। তখনো এ শহর অনেক জাকজমক। চারপাশে সুসজ্জিত আলো আর অনেক অনেক টুরিষ্ট ছিল। দারুন পরিস্কার শহর বলা যায়। কোন বায়ুদূষন নেই, কোন ময়লা নেই। সব মিলিয়ে দারুন লেগেছে।

আমরা হোটেল আগে থেকে বুক করিনি। আমাদের সাথের কার্তিক দা আর ফাজবি মিলে একটা হোটেলে উঠলাম। নাম ছিল জারা রেসিডেন্সি হোটেল। রুম নাম্বার ৩০১। ভাল হোটেল। এটা পুলিশ প্লাজার পাশেই। যেহেতু সেখানে অনেক শীত তাই আমরা রুমের সাথে গিজার+ ওয়াইফাই কানেকশন আছে সেরকম একটা হোটেলে উঠেছিলাম। রুমটা বেশ বড় আর দু রাতের জন্যে ১৫০০ রুপিতে আমরা উঠেছি। এখন টুরিষ্ট এর সংখ্যা কম বলে রুম ইজিলি পাওয়া গেছে কিন্তু পরে হলে হয়তো এত আরলি পাওয়া যেতো না। সময় লাগতো। তবে তখন হলে আগে থেকে বুক করে নিতে হতো।

যে যার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে হোটেল থেকেই খাবার অর্ডার দিয়েছিলাম কারন সারাদিনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে নিচে আর খেতে যাওয়া সম্ভব ছিল না আমাদের কারোর জন্যেই। তবে হোটেল থেকে না খাওয়াই ভাল। প্রচুর দাম আর ফালতু খাবার। একটু কষ্ট করে বাইরে খেতে গেলে ভাল। রাতে আমরা মরার মতন ঘুমালাম। কেউ কারোর দিকে খেয়াল নাই। ঠিক হলো আমরা সকাল ৬.৩০ এর মধ্যে বের হবো। ঘড়িতে এলার্ম দিলাম সকাল ৬ টা। দাদাদের শুভ রাত্রি জানিয়ে দিলাম ঘুম।

ফ্রেশ একটা ঘুম দিলাম আমরা সবাই। অবশ্য চেহারা দেখলেই বোঝা যাবে। স্ট্রিট ফুড খাবো বলে বের হলাম। হোটেল থেকে বের হলেই স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়। হরেক রকমের খাবার। আমরা লুচি, সবজি, ডিম আর চা দিয়ে নাশতা সারলাম।

এরপর আমরা গাড়ি নিয়ে বের হলাম। আজকের গাড়ির ড্রাইভারের নাম ছিল বিজয়। সে বাংগালি আর সেখানকার লোকাল। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি সে সবই বোঝে। আমরা টোটাল ৬-৭ টা জায়গা ঘুরবো তার জন্যে অনেক দামদর করে ঠিক হলো ২৭০০ রুপিতে ঠিক হলো। আমাদের যাত্রা শুরু হলো চেরা পুঞ্জির দিকে ———–

১। শরা পয়েন্ট (Shora Point)
২। নৌওকালিকাই ফল ( Nohkalikai Falls)
৩। ইকো পার্ক (Eco Park)
৪। মৌসামাই কেইভস (Mowsamai Caves)
৫। সেভেন সিস্টারস ফলস (Seven sisters Fall)
৬। এলিফ্যান্ট ফল (Elephant Fall)
৭। দ্যা ক্যাথেদ্রাল চার্চ অব মেরি হেল্প অব খিষ্টিয়ান্স (The Cathedral Church of Mary Help of Christians)

আমরা সব সৌন্দর্যের জায়গা দেখে শিলং ফিরলাম। রুমে গিয়ে ১০ মিনিটের ব্রেক দিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে আমরা আবার বের হলাম সন্ধ্যা ৮ টার দিকে। রাতের খাবারের জন্যে আমরা স্ট্রিট ফুড খাবো তাই আবার বের হওয়া। এরপর খাওয়া শুরু। স্ট্রিট ফুড খেয়ে আবার ডমিনোজের পিজ্জা খেলাম। ব্যাস আবার খাওয়া শুরু। আর সেদিন ছিল শিলং-এ দেওয়ালির রাত। চারদিকে আতসবাজির খেলা। আমি যে বিষয়টা খেয়াল করলাম এখানের এই আতসবাজিই তাদের আনন্দ। এত এত আতসবাজি দিয়ে তারা উজ্জাপন করসে আমি রীতিমত ভয় পেয়ে গেসিলাম। তবে এখানে শপিংটা খুব এক্সপেনসিভ। শপিং এর জন্যে কলকাতা বেষ্ট।

আমরা খাওয়া খেয়ে রাত ১০ টার দিকে রুমে ফিরে দিলাম ঘুম। পরেরদিন সকালে আমাদের একবারে লাগেজ নিয়ে বের হতে হবে কারন আমরা সেদিন বাকি আরো কিছু জায়গা দেখে দুপুরের ভেতরে বর্ডার ক্রস করে ঢাকা ব্যাক করতে হবে।

Source: Ishrat EraTravelers Of Bangladesh (TOB)

Share:

Leave a Comment