আসতেই হবে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড

এই কম্বো প্যাকেজের স্বাদ নিতে হলে আপনাকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড আসতেই হবে। ১১৫২ফুট উচ্চতার চন্দ্রনাথ মন্দির আর কুমিরা ঘাটের সাগরের মাঝে হাফ কিমি হেঁটে চলায় যে শান্তি টা পাবেন সেটা অন্য জায়গায় পাওয়া একটু দুস্কর ই হয়ে পড়বে।

এই ট্যুর টা ডে-নাইট ব্যাকপ্যাকার্সদের জন্য আদর্শ। আমরা শুরু করেছিলাম নোয়াখালী থেকে।সীতাকুণ্ড বাজার পৌছাতে বেলা ১১টা বেজে যায় দেরিতে রওনা হওয়ার জন্য। বাজার থেকে কলেজ রোড হয়ে সিএনজিতে সোজা চন্দ্রনাথ মন্দিরের পাদদেশে। এরপরই শুরু হয় ১১৫২ফুট উচ্চতা আর ১৬০০সিঁড়ি পার হওয়ার এক যুদ্ধ। রাতে না ঘুমানোয় মোটামুটি অর্ধেক উঠেই সিদ্ধান্ত নিলাম আর সম্ভব না নেমে যাব।ট্যুরমেট কে উপরে পাঠিয়ে কোনরকম স্যালাইন আর আমলকী খেয়ে আর একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার শুরু ট্র্যাকিং। মোটামুটি নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে প্রথমে পৌঁছলাম বিরুবাক্ষ মন্দির। এখানে হালকা কিছু ব্রেক দিয়ে আবার ট্র্যাকিং শুরু। সবমিলিয়ে ২.৫ঘন্টা লেগে যায় চন্দ্রনাথেরর চূড়ায় উঠতে।
বাকিটা পয়সা উসুল প্রশান্তি। সামনে সাগর তার আগে সীতাকুণ্ড শহর পিছনে পাহাড়ের পর পাহাড় আর শুভ্র মেঘ আপনার এত ট্র্যাকিং এর কষ্ট দুমিনিটেই দূর করে দিবে।ফারুকীর ডুবের সেই বীরুবাক্ষের ভিউটাও উপভোগ করতে পারবেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের সর্বোচ্চ পয়েন্ট এটাই।আধাঘন্টার মত প্রকৃতির স্বাদ নিয়ে এবার নেমে আসা।১ফুট লম্বা লম্বা ধাপের সিঁড়িগুলো একটু দেখেশুনেই নামতে হবে।১৬০০সিঁড়ি বেয়ে উঠতে আড়াইঘন্টা লাগলেও নামতে চল্লিশ মিনিটের মতই লেগেছে। এরপর সোজা সিএনজি নিয়ে আবার সীতাকুণ্ড বাজার।এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে (আমরা ওভারপাসের নিচে ক্যাফে কেন্ডি নামে একটা হোটেলে খেয়েছিলাম। এদের ৫০টাকায় চিকোন বিরিয়ানি টা সেই ছিল) সীতাকুণ্ড হাইওয়ের উপর থেকে চট্টলা অভিমুখী যে কোন লোকাল বাসে উঠে পড়ুন, কন্ট্রাক্টরকে বললেই হবে যে কুমিরা ঘাট যাবেন। বাস আপনাকে হাইওয়ের উপর নামাবে। ওভারপাস থেকে সোজা নিচে নেমে অটোরিকশা তে করে কুমিরা ঘাট।সূর্যাস্ত দেখার জন্য সীতাকুণ্ডতে এর থেকে ভালো ভিউ আর পাবেন না।সাগরের মাঝে প্রায় হাফ কি.মি পাকা সেতু ধরে শেষ মাথায় গিয়ে সন্ধ্যাটা উপভোগ করতে পারেন।চারপাশের শীপইয়ার্ডে পড়ে থাকা জাহাজগুলো সহ সাগরের আরো ভেতর টা দেখতে চাইলে স্পীডবোট ভাড়া করেও ঘুরে আসতে পারেন।

যেভাবে যাবেন : 
বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে সীতাকুণ্ড বাজার /ফেনী ( ফেনী তে নামলে মহিপাল থেকে বাসে সীতাকুণ্ড বাজার আসতে হবে- ভাড়া ৫০টাকা), এরপর হাইওয়ে থেকে বাজারে নামে অল্প একটু হাঁটলেই কলেজ রোড যেখান থেকে মন্দিরের পাদদেশ পর্যন্ত ১৫টাকা সিএনজি ভাড়ায় চলে যেতে পারেন।চন্দ্রনাথ ট্র্যাকিং এর সময় প্রথম যে ঝর্ণা পড়বে সেখানে দুইটা রাস্তা পড়ে একটা ছোট ধাপের সিঁড়ি আরেকটা বড়ধাপের সিঁড়ি। বাম পাশের ছোট ধাপের সিঁড়ি বেয়ে উঠা সহজ।এতে প্রথমে বিরুবাক্ষ মন্দির পড়বে তারপর চন্দ্রনাথ হয়ে ডান পাশের সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসলে তাড়াতাড়ি হবে।এরপর সোজা সীতাকুণ্ড বাজারে ফিরে আসুন।১০টাকা ভাড়া দিয়ে চলে যান কুমিরা ঘাট বাজার।সেখান থেকে ১০টাকায় অটোতে করে চলে যান কুমিরা ঘাট।

সতর্কতা : 
যত হালকা ব্যাগ নিয়ে উঠতে পারেন তত ভালো, পানি,স্যালাইন আর হালকা স্ন্যাকস সাথে রাখবেন আগ থেকেই।ট্র্যাকিং এর সময় কয়েকটা দোকানে পাওয়া গেলেও গলাকাটা দাম রাখবে।বিশ্রাম নিয়েন কিছুক্ষণ পরপর আর আমলকী রাখতে পারেন সাথে প্রচুর এনার্জি টনিক হিসেবে কাজ করবে। সবচেয়ে বড় কথা ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে যে আপনি পারবেন।
#HappyTravelling

Post Copied From: Nubayet Prottoy‎ > Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment