ইউরোপ ভ্রমণ (স্পেন – ফ্রান্স – নেদারল্যান্ডস – জার্মানী – সুইটজারল্যান্ড – অস্ট্রিয়া – হাঙ্গেরি – চেক প্রজাতন্ত্র)

ইউরোপ ভ্রমণ (স্পেন – ফ্রান্স – নেদারল্যান্ডস – জার্মানী – সুইটজারল্যান্ড – অস্ট্রিয়া – হাঙ্গেরি – চেক প্রজাতন্ত্র)

ইউরোপ হচ্ছে ট্রাভেলার্সদের জন্য স্বর্গ রাজ্য, যারাই ট্রাভেল করতে পছন্দ করেন সবার স্বপ্ন থাকে জীবনে একবার হলেও ইউরোপে ভ্রমণ করার। এক দেশ থেকে আরেক দেশের ভাষা, ঐতিহ্য , সংস্কৃতি আলাদা। রোমান্টিক প্লেস থেকে শুরু করে এডভেঞ্চার সব এ রয়েছে ইউরোপে।

আমাদের মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির সন্তানদের কাছে এই স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায়। সবার প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় খরচ, খরচের বিষয়টা মেটানো গেলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভিসা।

TOB তে আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি যেন ইউরোপ ভ্রমণ সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণাগুলো শুধরানো যায়, সবাই যেন সাধ আর সাধের সমন্বয় করতে পারেন।

ভিসা (VISA): (আমার বেক্তিগত মতামত)

ভ্রমণের জন্য Schengen ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এই একটি ভিসা দিয়ে ২৬ দেশে ভ্রমণ করা যায়. (সেনজেন দেশের লিস্ট http://www.schengenvisainfo.com/schengen-visa-countries-li…/)

Schengen ভিসা আবেদনে আমরা প্রথমে যে ভুলটা করি তা হচ্ছে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। ভিসা আবেদনের সপ্তাহ খানেক আগে সবাই মোটা অংকের টাকা রাখে যা চরম ভুল। এম্বেসীতে যারা কাজ করেন তারা অনেক স্মার্ট, উনারা বিষয়টা নেতিবাচক ভাবে নেয়।

একাউন্ট এর ব্যালান্স শেষ ৩ মাসে যেন ধারাবাহিক হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। শেষের ২ সপ্তাহ বড় কোন এমাউন্ট যোগ করা যাবে না। মিনিমাম ব্যালান্স বলে কিছু নেই। আপনার ট্রাভেল প্লানের সাথে ব্যালান্সের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। কোনো ধরণের কন্ফার্ম টিকেট প্রয়োজন হয়না। আমার প্রথম Schengen ভিসার সময় ব্যাঙ্ক ব্যালান্স ছিলো ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা !!

যে কয়দিনের জন্য আবেদন করবেন তার সাথে ১৫ দিন যোগ করে ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করতে হবে।

আপনি ইউরোপে যাওয়ার জন্য এম্বেসীতে হাজারটা কারণ বলবেন কিন্তু উনারা ভিসা দেয়ার জন্য শুধু একটা কারণ চায়, তা হচ্ছে আপনি আবার ফিরে আসবেন কিনা।

আপনি যখন ভিসা ইন্টারভিউ এর জন্য দাঁড়াবেন তখন এম্বেসী এর অফিসার ধরে নিবে আপনি ইউরোপ গেলে আর আসবেন না। পরবর্তী ৫ মিনিটে আপনাকে প্রমান করতে হবে আপনি ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে আসবেন।

কোন এম্বেসী তে আবেদন করবেন: আপনার ট্রাভেল প্ল্যান অনুযায়ী যে দেশে সবচেয়ে বেশী দিন থাকবেন সে দেশের এম্বেসী তে আবেদন করতে হবে। তবে ইতালী, ফ্রান্স এর এম্বেসী তে আবেদন না করাই। আমি এই পর্যন্ত ৩ বার ভিসা নিয়েছি ২ বার সুইডিশ আর একবার সুইস এম্বেসী থেকে। আপনি যদি ইন্টারভিউ তে ভালো হোন, মানুষ কে কনভিন্স করতে পারেন তাহলে সুইস এম্বেসী তে আবেদন করতে পারেন। আর ইন্টারভিউ কে ভয় পেলে স্প্যানিশ, সুইডিশ এম্বেসী তে (ইন্টারভিউ হয়না)

খরচ:

ইতালিতে রিটার্ন টিকেট তুলনামূলক কম, অনেক এয়ারলাইন্স প্রমো টিকেট ছাড়ে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। এয়ারলাইন্স গুলোর অফারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ইউরোপে হোস্টেল গুলো অনেক ভালো, নিরাপদ। যাদের সারাদিন ঘুরার পর রাতে শুধু ঘুমানো দরকার তাদের জন্য হোস্টেল। হোস্টেল ইউরোপের ট্যুরিজম এর এক ঐতিহ্য। মেয়েদের জন্য আলাদা ডর্ম রুম রয়েছে।

হোস্টেল এ ডর্ম রুম গুলোতে ১০ থেকে ৩০ ইউরো খরচ পরে। ৫০ ইউরোতে সিঙ্গেল রুম পাওয়া যায় (দেশ ভেদে দাম ভিন্ন হতে পারে)

যাতায়াত ব্যবস্থা অসাধারণ, অল্প টাকায় এক সপ্তাহের মেট্রো টিকেট কিনে নিতে পারেন। এক দেশ থেকে আরেক দেশে ট্রেনে যাতায়াত করা যায় (অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়) যাওয়ার আগে টিকেট কেটে নিলে অনেক কমে পাওয়া যায়। Ryan এয়ার নাম এয়ারলাইন্স আছে যাতে অসম্ভব কম দামে ট্রাভেল করা যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে ১৯ ইউরো !!!

খাবার: ফাস্টফুড চেইন গুলোতে খাবার সস্তা। মাছ ভাত খাওয়ার কোন সুযোগ নেই। লোকাল, স্ট্রিট ফুড ট্রাই করতে পারেন। ভাত ছাড়া একটু কষ্ট ই হয়ে যায়।

… চলবে।

কমেন্ট এ আপনার প্রশ্ন করতে পারেন।

Share:

Leave a Comment