জাফলং ভ্রমণ

ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট। এক রাত আবাসিক হোটেলে থাকা যায়। যদিও বাসে সময় সাশ্রয় হবে।
সকাল ৭ টা তে রওনা দিলে জাফলং থেকে ফিরতে বেশি বেলা হয় না, দুপুর ৩টের মধ্যেই ফেরা যায় শহরে। ভেবেছিলাম বিছানাকান্দি যাব, কিন্তু জাফলংয়েরই জয় হলো।
মেঘালয় পাহাড়ের ঝর্ণায় জাফলং অন্যতম।
না বাস, না মাইক্রো, আমার হতচ্ছাড়া vomiting tendency এর কারণে CNG ভাড়া করা হল। অবশ্য তাতে যাত্রাপথ উপভোগ করা গিয়েছে নিজের ইচ্ছে মতো, পথিমধ্যে CNG থামিয়ে প্রকৃতির মধ্যে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগ ছিল। শহর থেকে উপশহর যেতে ৩০ মিনিট, তারপর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পাহাড়ের দেখা। দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ এখানে আরো প্রশস্ত, আরো বেশি সবুজ যেন! তামাবিল রোডের দুই ধারে বিরাটকায় পুকুর, লেক ও বলা চলে। পুকুরের টলটলে জলে মেঘলা আকাশের mirror image!!
সাদা সাদা মেঘপরীরা ওড়না ছুঁইয়ে ভেসে চলেছে পাহাড়ের চূরা ঘেঁষে। মেঘালয় আর শিলং পাহাড়ের গায়ে দুগ্ধফেননিভ ঝর্ণার জল সমতলে নেমে এসে জলার সৃষ্টি করেছে। তাতে স্নানরতা সামান্যা এক খাসিয়া নারীকে দেখে এই স্বর্গরাজ্যের অপ্সরী মনে হলো!
জাফলং পৌঁছাতে মোট ৩ ঘণ্টা লাগলো, যেহেতু CNG। একদিকের রাস্তায় জাফলং, অন্যদিকে তামাবিল সীমান্ত ঘাঁটি, যেখানে ভারতীয় ট্রাক মালামাল বহন করে শিলং পাহাড়ের রাস্তা ধরেছে।
একটা ৩০ তলা পাহাড় বেয়ে জাফলংয়ের জলধারা, সেটা পেরিয়ে একটা ছোট্ট নদীতে পাথর উত্তোলন দেখলাম। নদী পেরিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টার পায়ে হাঁটা বালিয়ারি, সেখানেই প্রথম চোরাবালির খেলা দেখলাম। নদী পার হতে চোখে পড়লো ঝুলন্ত ব্রিজ, মেঘালয় আর শিলং পাহাড়ের সেতুবন্ধন এটা। পাথর ততুলা চলছে অবিরত। ভারতীয় পর্যটকের মাইক্রো চলেছে ব্রিজ দিয়ে শিলং পাহাড়ে, আর পাদদেশে বাংলাদেশী পর্যটকের ভিড়। সবাই সবাইকে দেখছে, ব্যবধান কেবল সীমান্তে, পারস্পারিক আনন্দের লেনদেনে যা বাঁধা সৃষ্টি করতে পারেনি।
বালিয়ারি পেরিয়ে ‘মায়াবী ঝর্ণা’, মাধবকুণ্ডও ফেল এর কাছে!! ৪ তলার উঁচ্চতা থেকে নেমে এসে আছড়ে পড়ছে পাথরের বুকে। জলরাশি যে প্রচন্ড স্রোতে নেমে এসেছে তাতে দাঁড়িয়ে থাকাই দায়! এছাড়াও চা বাগান, রাজবাড়ি দেখা যাবে পায়ে হেঁটে।
ফেরার পথে আবার পাহাড় ভাঙতে গিয়ে দম বন্ধ হবার জোগাড়, যদিও ৭ বছরের পিচ্চি গাইডটা দিব্যি আছে!! বাবা ছিলেন সাথে, তিনি মাটিতেই বসে পড়লেন অগত্যা।
যদিও CNG তে রাস্তা এবার কমই মনে হলো, এ পথে যেহেতু একবার এসেছি…….. তাছাড়া সাথে নিয়ে যাচ্ছি অনেকটা সৌন্দর্য্যের স্মৃতি।

Post Copied From:দেবারতি অনন্যা‎>Travelers of Bangladesh (ToB

Share:

Leave a Comment