সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট

ঢাকা – প্লেনে কাঠমান্ডু – বাসে পোখারা – গাড়িতে সারাংকোট

এই ভিউ সৌভাগ্যবানদের কপালে জোটে। আমাদের কপাল ভালো। আগেরদিন এখানে আসা এক ভারতীয় দম্পতির সাথে পোখারায় আলাপ হয়েছিল, তারা জানালো তারা স্রেফ কুয়াশা আর মেঘে ঢাকাই পেয়েছে। আমরা সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত ঝকঝকে আবহাওয়া পেয়েছি।

আপনি পোখারা থেকে আসতে পারেন এখানে, গাড়ি বুকিং দিয়ে রাখলে আপনার হোটেল থেকে পিক করে আনবে, ভোর ৪টা নাগাদ রওনা দিবে। ১০০০-১২০০ রুপির মত পড়বে। অধিকারী (+977 984-6299183), ভালো লোক, ট্যাক্সির নাম নিজের দুই মেয়ের নামে রেখেছে, গাড়ির গিয়ারে বউয়ের একগোছা চুড়ি রাখা। এজেন্সি থেকে বুকিং দিলে এজেন্সির লাভ সহ চার্জ রাখবে ট্যাক্সির। আমি হোটেল থেকে বাস স্টপেজ পর্যন্ত ট্যাক্সি চাইসিলাম এজেন্সির কাছে, ৩৫০ রুপি চাইলো! সকালে অধিকারীকে ফোন দিলাম, ২০০ রুপিতে নামায় দিয়ে আসছে।

আমরা অবশ্য আগের রাতে সারাংকোটেই ছিলাম, কারণ ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে আসাটা মনঃপুত হয় নাই। Hotel Superview Lodge এ Booking.com থেকে বুকিং দেওয়া ছিল। ১৬০০ মিটার ওপর থেকে বসে পোখারা শহরের ভিউ, রুম থেকেই, রুমের সাথে টানা বারান্দা। ডিলাক্স ট্রিপল বেডরুম, রাতের ডিনার, সকালের ব্রেকফাস্ট সব মিলিয়ে ৫০০০ রুপি। যেখান থেকে সিঁড়ি বেয়ে সানরাইজ পয়েন্টে যায়, সেই সিঁড়িগুলার কিছু ধাপ পেরোলেই এই হোটেল, এরকম আরও আছে ওখানে, তবে পরে ঘুরে দেখে এটাই বেস্ট মনে হয়েছে। একটি নেপালি পরিবার তত্বাবধানে আছে, খুবই অতিথিবৎসল।

ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাই। ও, সারাংকোটে ঢুকতেই মাথাপিছু ৫০রুপির টিকেট কেটে নিয়েছিলো রাস্তায়। ওটা হারাবেন না। সানরাইজ পয়েন্টে ওই টিকেট দেখাতে হবে, না হলে আবার টিকেট কাটতে হবে। যাই হোক, উপরে উঠে দেখি লোকজন চলে এসেছে। পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে আরও গাড়ি উঠছে দেখলাম। উপরে একটা টাওয়ার আছে, ওখানে গাদাগাদি, নীচে সিঁড়ির ধাপের মত আছে, ওখানেই বসলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই লোকজনে ভরে গেল। তারপর সবাই মিলে চাতকের মত পূর্ব পানে চেয়ে থাকলাম। সূর্যোদয়ের সময় পেরিয়ে যায়। হঠাৎ সবাই বামদিকে ঘুরে গেল। তারপর সামনে দৃশ্যমান হল অন্নপূর্ণা রেঞ্জ আর মাছাপুছারে (ফিশটেইল মাউন্টেন, যদিও লেজের এক অংশই দৃশ্যমান)। মাত্র ২৪ কিঃমিঃ উড়াল দূরত্ব, সৌন্দর্য পান করতে করতে সম্বিৎ হারিয়ে ফেলসিলাম। পরে ছবিতোলা শুরু করলাম।

পোখারা ফিরি প্যারাগ্লাইডিং এর গাড়ি চেপে, ফ্রি। যারা প্যারাগ্লাইডিং করবেন, স্পটটা ভিউ পয়েন্ট থেকে দশমিনিট দূরত্বে, নীচে, গাড়ি পিক করতে আসলে একবারে লাগেজসহ চড়ে বসবেন। আপনি ভেসে ভেসে নামবেন পোখারা শহরে, আপনার লাগেজ অফিসে বা হোটেলে পৌঁছে দেবে

Post Copied From:ইমতিয়াজ হাসান ইমন‎>Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment