সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ ‘সেন্ট মার্টিন’ এর অবস্থান বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারের টেকনাফ থানায়। টেকনাফ থেকেও প্রায় ৯-১০ কিঃ মিঃ দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এর বুকে এই দ্বীপ এর অবস্থান। আয়তনে খুব বড় নয় এই দ্বীপ, ৮ বর্গ কিঃ মিঃ, আর লোক সংখ্যা প্রায় ৭০০০-৭৫০০ এর মতন।এই দ্বীপের সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই যে ব্যাপার টি চলে আসে, সেটি হচ্ছে এখানের প্রকৃতি আর তার নির্জনতা। খুব নির্জন আর কোলাহল মুক্ত কয়েকটি দিন কাটানোর জন্য এই দ্বীপ অন্যতম, কারণ দ্বীপে কোন বাস, গাড়ি, মোটর চালিত কোন প্রকার যান নেই, এমন কি নিঝুম দ্বীপ বা কুয়াকাটার মত পাবলিক সার্ভিস দেয়ার মত মোটর বাইক ও চোখে পড়েনি। তাই অন্তত নির্জনতার মাঝে যখন কেও কোন মোহে হারিয়ে যাবে, হঠাত কোন গাড়ির হর্ন এর শব্দ এসে সব নষ্ট করে দেয়ার সম্ভাবনা একদম ই নেই এই দ্বীপে।সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এর আদি নাম ছিল নার্জিল জাজিরা বা জিঞ্জিরা। জাজিরা থেকে জিঞ্জিরা শব্দের উৎপত্তি। জিঞ্জিরা শব্দের অর্থ উপদ্বীপ, আর নার্জিল অর্থ নারিকেল। এই দ্বীপ এ নারিকেল গাছের আধিক্য ছিল।এখনো নারিকেল এর জন্য এই দ্বীপ এখনো বিক্ষাত। আর এজন্যেই এই দ্বীপকে নারিকেল জিঞ্জিরা ও বলা হয়।ভূ-তত্ত্ববিদদের মতে এই দ্বীপ এর বয়স ২০ লাখ বছর।দ্বীপ টি তে যারা হই হুল্লুড় করার উদ্দেশ্যে ভ্রমণে যাবেন, তারা কিছু টা হতাশ হতে পারেন, কারণ এমন প্রবালে বসে সূর্যাস্ত দেখার সাথে অন্তত হিন্দি গান ছেড়ে কোমর দোলানো ব্যাপার টা যাবে না। বরং নির্জন বসে কিংবা সমুদ্রের পাড়ে প্রবালে সঙ্গীদের সাথে বসে হেড়ে গলায় গাওয়া গান টা ই সৃতির পাতায় রয়ে যাবে।
কি কি দেখবেনঃ
সেন্ট মার্টিনে আলাদা করে দেখার মত কিছু আলাদা করা কঠিন, কারণ পুরো দ্বীপ টি ই একটি মিস্ট্রি।।
ছোট একটি দ্বীপ। চার পাশে সমূদ্র। মন মাতানো সূর্যাস্ত, বাতাস আর সমূদ্রের গর্জন যা প্রতি মুহূর্তেই নতুন নতুন গল্প শুনিয়ে যাবে আপনাকে। এর বাইরেও তেমন কিছু খুঁজতে চাওয়া টা-ও অন্যায় হবে।
তারপরও ‘ছেরা দ্বীপ’ টা মূল দ্বীপ থেকে ভাটার সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যেটি পুরোপুরি প্রবাল এর। সেখানে যেতে পারেন বোটে করে যা মূল যেটি থেকে সকাল ৮ টা থেকে ছাড়ে। তবে খুব ভোরে ভাটার সময় হেটেও যাওয়া যায়, তারপর আবার দুপুরের কিছু সময় আগে আবার যখন ভাটা পড়বে, তখন হেটে ফেরত আসা যায়।
আর রাতে অবশ্যই জেলেদের মাছ ধরার ট্রলার প্রস্তুত করার ব্যাপার টা দেখতে মিস করবেন না, যদিও তা মাঝ রাতেই করেন তারা।
আর মূলত এমন যায়গা গুলোতে মানুষের নিজের উপর নির্ভর করে, তাই আপনি আপনার মত করে সেখানে যাবার পর নিজের প্ল্যান করে নিতে পারবেন।
কি কি খাবেনঃ
* সেন্ট মার্টিন কে নারিকেল জিঞ্জিরা বলার কারণ ই হল এই দ্বীপে প্রচুর পরিমাণ ডাব পাওয়া যায়, যার স্বাদ অনন্য, আর দেখতেও সাধারণ ডাবের চেয়ে দুই বা তিন গুণ বড় ও হয়, আবার দাম ও হয় তুলনামূলক কম। তাই এই জিনিস খুব কম মানুষ ই মিস করতে চাইবেন।
* সামুদ্রিক মাছ, কাকড়া, লবস্টার এই দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। (কোরাল, সুন্দরী, ইলিশ, রূপচাঁদা, চিংড়ি বেশি বিক্ষাত)
* শুটকি মাছ যারা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই দ্বীপ শুধু শুটকির জন্যেই আদর্শ দ্বীপ হয়ে যেতে পারে, কারণ এখানে অনেক প্রকারের একদম ফ্রেশ শুটকি পাওয়া যায়।
* পাশেই যেহেতু মায়ানমার, সেহেতু সেই খানে তৈরি অনেক প্রকার আচার যা ইতিপূর্বেই মানুষের মন জয় করে নিয়েছে, তা মোটামুটি সহজলভ্য সেন্ট মার্টিনে।
কি কি করবেন নাঃ
– প্রথমেই যেই কাজ টি করবেন না, সেটি হচ্ছে সেন্ট মার্টিন থেকে আসার সময় সৃতি হিসেবে অইখানের প্রবাল, শামুক বা অন্য প্রাকৃতিক কোন জিনিস নিয়ে আসবেন না।
– অযথা চিৎকার চেঁচামেচি করা থেকে বিরত থাকবেন, কারণ মনে রাখবেন সেন্ট মার্টিন আমাদের জন্য ভ্রমণের যায়গা হলেও সেখানে প্রায় ৭০০০-৭৫০০ মানুষের বসত। তাই লোকাল মানুষদের যেন কোন কারণেই আমাদের প্রতি কোন খারাপ ধারণার উদ্রেগ না হতে পারে, বা তারা যেন বিরক্ত না হন,সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
– সাঁতার না জানলে গোসলের সময় খুব বেশি দূরে কোনভাবেই যাওয়া যাবে না, আর অবশ্যই সমূদ্রে নামার আগে জোয়ার- ভাটার ব্যাপারে জেনে নামবেন।
– ১১ টি ডেঞ্জার জোন আছে সেন্ট মার্টিন এ, নামার আগে সেই জোন গুলো নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
– প্রবাল অনেক ধারালো হয়, তাই পানিতে নামার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
কিভাবে যাবেনঃ
কেও যদি ঢাকা থেকে সরাসরি সেন্ট মার্টিন যান, তাহলে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ, ইউনিক পরিবহন এবং সেন্ট মার্টিনপরিবহণ সহ বেশ কিছু বাস সরাসরি টেকনাফ ঘাটের উদ্দেশ্যে রাত ৭ঃ৩০-৮ঃ৩০ এর মধ্যে ছেড়ে যায়। তারপর ঘাট থেকে কয়েকটি শিপ ছাড়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে সকাল ৯ঃ৩০ মিনিটে। যা দ্বীপে পৌছায় ১১ঃ৩০-১২ টার মধ্যে। যা আবার ব্যাক করে বিকেল ৩ টার দিকে সেন্ট মার্টিন থেকে। তবে শিপ অফ সিজনে (এপ্রিল এর মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) শিপ চলে না, তবে ট্রলার ছাড়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে সারা বছর ই। তবে শিপ রিজার্ভ করা হলে আলোচনা সাপেক্ষে বছরের যে কোন সময় ই চলতে পারে।
আর কেউ যদি কক্সবাজার থেকে যান, তাহলে সকালে টেকনাফের উদ্দেশ্যে বাস, মাইক্রো, চান্দের গাড়ি ছাড়ে। অনেক প্যাকেজ অফার ও থাকে । যেই হোটেলে থাকবেন কক্সবাজারে, তাদের কাছে বললেও তারা ব্যবস্থা করে দিবে। তবে তাদের কাছে শুধু ট্রান্সপোর্ট এর সুবিধা ও আলাদা করে নেয়া যায়। যেমন শিপ এর টিকেট আর সকালে টেকনাফ যাবার সহায়তা টুকু নেয়া কেবল।
কিভাবে বুকিং করবেনঃসবচেয়ে ভালো হয় নিজের মত বুকিং করা। বাসের টিকেট ফকিরা পুল সহ প্রায় সব কাওন্টার থেকেই পাওয়া যায়। শিপ এর জন্য ঢাকায় অনেক গুলো ট্রাভেল এজেন্ট নির্ধারণ করা আছে শিপ গুলোর, তাদের কাছ থেকে কাটতে পারেন, অথবা অন্য লোকাল ট্রাভেল এজেন্ট রা ও টিকেটের ব্যবস্থা করে দেয়, যা আপনার আশে পাশেই খোঁজ করলে পেয়ে যাবেন।০১৮১৭১৪৮৭৩৫, এটা কেয়ারি সিন্দাবাদের অফিসিয়াল নাম্বার।০১৭১৪৬৩৪৭৬২ এটা কুতুবদিয়া শিপ এর অফিসিয়াল নাম্বার।গ্রীণলাইন এর ও শিপ আছে, ০২৯৩৩৯৬২৩, ০২৯৩৬২৫৮০ গ্রীণলাইন এর অফিসিয়াল নাম্বার। যে কোন বাসের কাওন্টারে যোগাযোগ করলে তারা বাস সহ শিপ এর প্যাকেজ করে দেয়, শুধু শিপ এর টিকেট ও বিক্রি করে তারা।আর হোটেল বা রিসোর্ট সেন্ট মার্টিনে যেয়ে দামাদামি করে নেয়া ই ভালো, তবে প্রথম বার হলে আগে থেকে পরিচিত কারো রেফারেন্স নিয়ে বা বুক করে যেতে পারলে ভালো হতে পারে।তবে ফুল সিজন গুলোতে সেন্ট মার্টিন এ মনের মত হোটেল বুক না দিয়ে গিয়ে পাওয়া টা কষ্টকর। তাই আগে থেকে বুক করে যাওয়া টা ভালো। আর ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২৬ মার্চ সহ অন্য তিন দিনের টানা বন্ধ গুলোতে কোন প্রকার হোটেল পাওয়া ই কষ্টকর হয়ে যায়। তাই এগুলো অনেক আগে থেকেই বুক করে নিশ্চিত করে রাখবেন।আর গুগল এ সার্চ করলেই সেন্ট মার্টিনের অনেক রিসোর্ট বা কোম্পানি বা শিপ এর লিঙ্ক পেয়ে যাবেন।
সেন্ট মার্টিনের রিসোর্ট বা ট্রাভেল রিলেটেড কোম্পানি/ গ্রুপের লিঙ্কঃ সেন্ট মার্টিন নিয়ে স্পেশালি যারা কাজ করছেন, তাদের নাম, নিঙ্ক, কন্টাক্ট এখানে আস্তে আস্তে যোগ হতে থাকবে, তবে তার আগে অবশ্যই তাদের সার্ভিস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।বাজারের মধ্যে কিছু হোটেল রয়েছে, যাদের রুমের কুয়ালিটি কিছুটা ভাল, তবে ব্লু ম্যারিন (০১৮১৫৬৩২০৩৭, ০১৭১৩৩৯৯০০১) হোটেল ছাড়া অন্য গুলোর তেমন কোন আলাদা আঙ্গিনা বা বসে গল্প করার যায়গা নেই।সেন্ড শোর (০১৮১৫৬৪৮৭৩১), সি ইন হোটেল গুলোর রুম কুয়ালিটি ভালো।আর বিচ এর পাড়ের হোটেল গুলোর রুমের কুয়ালিটি তত ভাল হয়না (ঝড়, জলোচ্ছাস এর কারণে করা হয়না মূলত),তবে সেখানে আপনার চমৎকার সময় কাটবে। প্রায় প্রতিটি হোটেলেই রয়েছে রিসোর্ট সুবিধা, রয়েছে হেমক, বিচ চেয়ার, বিচের পাশে বসে খাওয়ার জন্য ওপেন ডাইনিং সুবিধা, রয়েছে তাবু খাটিয়ে থাকার ব্যাবস্থা ও।রয়েছে বার-বি-কিউ এর সুবিধা ও।বিচ এর পাড়ে রয়েছে সমুদ্র বিলাস, ব্লু ল্যাগুণ (০১৭২৩৫৮৬৮৭৭, ০১৮১৮৭৪৭৯৪৬), লাবিবা বিলাস(০১৭১৪৬৩৪৭৬২), অবকাশ, পান্না রিসোর্ট (০১৮১৬১৭২৬১৫), ড্রিম নাইট (০১৭১০৩৯০২৫১), সিমানা পেড়িয়ে(০১৮১৯০১৮০২৭),প্রাসাদ প্যারাডাইস(০১৭৯৬৮৮০২০৭), সমুদ্র কুটির, নীল দিগন্ত (০১৭৩০০৫১০০৪), কোরাল ভিউ (০১৯৮০০০৪৭৭৮) রিসোর্ট।
যাওয়ার প্ল্যানঃসেন্ট মার্টিন যারা যাবেন, অন্তত দুই রাত থাকার মত চিন্তা করে যেতে পারলে ভাল একটি ভ্রমণ হতে পারে আপনাদের। তবে সময়, অর্থ আর ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে সেটা এক দিন থেকে অনেক দিন পর্যন্ত হতে পারে এই ভ্রমণের সময় কাল। রাত ৭ঃ৩০-১১ টা পর্যন্ত সুবিধা অনুযায়ী বাসে উঠলে পরের দিন সকালে নামিয়ে দিবে টেকনাফ ঘাট এ। সেখান থেকে শিপ এ করে দ্বীপে পৌছাতে ১১ঃ৩০-১২ টা বাজবে। তারপর হোটেল এ গিয়ে কাপড় চোপড় ছেড়ে সমুদ্রে নেমে পড়তে পারেন, গোসল সেরে এসে দুপুরের খাবার। বাকি দিন টা নিজের ইচ্ছা মত কাটাবেন, যেভাবে আপনার ভালো লাগতে পারে। কারণ ততক্ষণে পুরো দ্বীপ টি ই আপনার হয়ে গেছে।। :Dদ্বিতীয় দিন সকাল টা তে সূর্য উদয় দেখতে পারেন। তারপর ছেরা দ্বীপ এর উদ্দেশ্যে বের হয়ে যেতে পারেন। ফিরে আসতে দুপুর হবে ছেরা দ্বীপ থেকে। তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে ফিরতি শিপ এর জন্যে বের হয়ে যেতে হবে, যদি এক রাত থাকেন ।আর একাধিক রাত থাকলে আপনি পুরো দ্বীপ টা নিজের মত করে রিলাক্সে ঘুরে দেখতে পারবেন, চাইলে এক টি রাত মাছের বার বি কিউ ও করতে পারবেন। পারবেন রাতের বেলায় মাছ ধরতে যেতে। নিজের মনের মত করে,যা ইচ্ছে।।
খরচঃবাস নন এ সি- ৯০০ টাকা, এসি ১৫৫০ টাকা ।তবে আসার টিকেট সেন্ট মার্টিন থেকে কাটলে প্রতি টিকেটে ৩০-৫০ টাকা তারা চার্জ হিসেবে বেশি রাখবে।শিপ- নিচ তলা ৫৫০ টাকা, দো- তলা ওপেন ডেক ৭০০/৭৫০ টাকা, ভি আই পি ৮৫০/৯০০ টাকা।আর শিপের টিকেট এর মুল্য আসা এবং যাওয়া সহ এইটা ধরা হয়। কেও যাবার টিকেট নেয়ার সময় বলে নিতে হয় কবে ব্যাক করবেন, সেইভাবেই ফেরার টিকেট শিপ দেয়া হয়। গ্রীনলাইনের টিকেট ওয়ান ওয়ে ও দেয়, ৫০০/৬০০ দুই ধরনের ক্যাটাগরি আছে। আসা যাওয়া ১০০০/১২০০রিসোর্ট- রিসোর্ট এর ভাড়া সিজন এর সময় কোন নির্দিষ্ট নেই তেমন, ট্যুরিস্ট এর উপর নির্ভর করে রিসোর্ট মালিক রা ভাড়া বাড়ায় কমায়। তবে সিজনে ১৫০০-২০০০ টাকার কমে রুম পাওয়া কষ্ট সাধ্য, যদি না সেখানে পরিচিত কেও থাকে। আর অফ সিজনে ৭০০-১২০০ টাকায় পাওয়া যাবে সি রিসোর্ট গুলো। আর রিসোর্টের প্রতি রুমে ৪ জন করে আরামে থাকা যায়।আর যদি কেও খুব আয়েশ খুঁজেন, তাদের জন্য একটু ঝামেলা আছে। প্রথম কারণ হচ্ছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এ বিদ্যুৎ নেই, জেনারেটরে চলে, তাই এসি রুম পাওয়া টা কঠিন। তবে রিলাক্স এর রুম আছে অবশ্যই, যাদের মাণ ভালো। ২৫০০ থেকে শুরু করে অনেক টাকায় রুম পাওয়া যায়।খাবার- যদি কেও রিসোর্ট গুলো তে খায়, তাইলে ১৫০টাকা থেকে শুরু করে চাহিদা আর আইটেমের উপর ভিত্তি করে অনেক প্যাকেজ থাকে। হোটেলে খেলেও এর চেয়ে কম হয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে হোটেল গুলো বেশি চার্জ করার সুযোগ খুঁজে। তবে প্রথম বেলা যেদিন যাবেন, সেদিন রিসোর্ট বা হোটেলে খাওয়া ভাল। বেশি মানুষ হলে বাজারে গিয়ে ভাল খাবার পাওয়া কঠিন। পরের বেলা থেকে যাচাই করে স্বীদ্ধান্ত নিয়ে খেতে পারবেন।এখন কত বেলা খাবেন,সেটার উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার বাজেট নির্ধারণ করে ফেলতে পারেন।ছেরা দ্বীপ- ছেরা দ্বীপ যাবার জন্য ট্রলার ভাড়া ১৬০-২০০ টাকা করে, আর রিজার্ভ নিলে ১৫০০-৪৫০০ টাকা নেয় নৌকার আকার আর যাত্রীর উপর ভিত্তি করে। তবে অনেক গ্রুপ,কোম্পানি সেন্ট মার্টিনের জন্য প্যাকেজ ও ছাড়ে বিভিন্ন সময়, সেটি ও একটি বিবেচ্য বিষয় হতে পারে।
একটি প্রধান বিষয়, যেটি নিয়ে অনেকটা ঝামেলা পোহাতে হয়ঃযেহেতু শিপ সেন্ট মার্টিন এ পৌছায় ১২ টার মধ্যে, তাই ট্যুরিষ্টদের রিসোর্ট বা হোটেলে পৌছতে ১২ঃ৩০-১ টা বাজে। আবার অন্য দিকে শিপ সেন্ট মার্টিন থেকে ছেড়ে যায় ৩ টায়, তাই এই ৩-৩ঃ৩০ ঘন্টার একটা ঝামেলায় পড়তে হয় রিসোরট/হোটেল মালিকদের, আগেরদিনের ট্যুরিষ্টদের, নতুন ট্যুরিষ্টদের প্রায় সবার ই।এখানে সবার মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া এই সমস্যার সমাধান নেই।প্রথমত প্রায় প্রতিটি হোটেল/রিসোর্টে চেক আওট টাইম ১১-১১ঃ৩০ হলেও কেও ঠিক সময়ে রুম ছাড়তে চান না, অথচ আগের দিন রুম এ ঢুকতে দেরি হউয়ায় সে নিজেই মন খারাপ করেছিল !!আসলে দিনের একটি টাইমেই শিপ আসে আর এক টি টাইমেই সব শিপ ছেড়ে যায়, তাই মাঝের এই ৩-৩ঃ৩০ ঘন্টা সময় নিয়ে ঝামেলা থেকেই যায়।আপনারা যা করতে পারেন, যদি ফিরে আসার দিন সকালে ছেড়াদ্বিপ যাবার প্ল্যান থাকে, তাহলে ভোরে চলে যাবেন, আর যাবার আগে ব্যাগ গুছিয়ে হোটেল এর লবি/ মালিকের কাছে দিয়ে যাবেন। এতে করে নতুনদের জন্য রুম পরিষ্কার করার সময় পাওয়া যায়। তখন আপনারা ফিরে এসে এক্সট্রা ওয়াশরুম এ ফ্রেশ হয়ে খেয়ে সহজেই বের হয়ে যেতে পারবেন। তাতে করে এই সমস্যা থেকে কিছুটা পরিত্রান পাওয়া যাবে।
শেষ কথাঃযদিও বর্তমান ট্রাভেলার রা অনেক সচেতন, তারপরও আমরা অনেক যায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে প্রকৃতির অনেক ক্ষতি করি বিভিন্ন ভাবে। তাই আমার একটাই অনুরোধ আমরা প্রকৃতি যেমন আছে, তেমন টাই যেন রেখে আসি। যদি পারি ভালো কিছু করতে ,তাহলে স্বাদুবাদ থাকলো, তবে অন্তত কোন প্রকার ক্ষতি যেন না হয় আমাদের দিয়ে।